নিজ সংবাদ ॥ যক্ষ্মা একটি জীবাণুঘটিত রোগ যা মাইকোব্যাকটেরিয়াম টিউবারকুলোসিস নামক জীবাণুর আক্রমণ দ্বারা হয়ে থাকে। যক্ষ্মার জীবাণু খাবারের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করে না এটা বাতাসের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করে। যক্ষ্মা হলে রক্ষা নেই এ কথার ভিত্তি নেই। যক্ষ্মা রোগ বর্তমানে আতঙ্কের নয়, এটি নিয়মিত চিকিৎসা করে ওষুধ খেলে সম্পূর্ণ ভাল হয়। যক্ষ্মা একটি সংক্রামক রোগ, বিশেষ করে ফুসফুসের যক্ষ্মা সহজেই একজন থেকে আরেক জনের মধ্যে ছড়ায়। ফুসফুসের যক্ষ্মার আক্রান্ত রোগী বিনা চিকিৎসায় থাকলে তার হাঁচি-কাশির মাধ্যমে যক্ষ্মার জীবাণু বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে। যা শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে সুস্থ্য ব্যক্তিকে আক্রান্ত করে। গতকাল বুধবার সকালে কুষ্টিয়া সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সভাকক্ষে স্বাস্থ্য বিভাগ ও ব্র্যাকের আয়োজনে যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম সর্বস্তরের অংশগ্রহন শীর্ষক গোল টেবিল বৈঠকে বক্তারা এ সব কথা বলেন। কুষ্টিয়া সিভিল সার্জন ডাঃ তরুণ কান্তি হালদারের সভাপতিত্বে গোল টেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কুষ্টিয়া জেলা শিক্ষা অফিসার নিখিল রঞ্জন চক্রবর্তী। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ তাপস কুমার সরকার, কুষ্টিয়া বক্ষ্মব্যাধি হাসপাতালে সহকারী মেডিকেল অফিসার ডাঃ হালিমা খুতুন, সিভিল সার্জন অফিসের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ আব্দুল হালিম, ব্র্যাক খুলনা কর্মকর্তা প্রীতি রঞ্জন দত্ত, কুষ্টিয়া জেলা পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ডাঃ জেসমিন আখতার, জেলা তথ্য অফিসার তৌহিদুজ্জামান প্রমুখ। বক্তারা আরো বলেন,বিনামূল্যে যক্ষ্মা রোগ নির্ণয়ের জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপে¬ক্স, বক্ষব্যাধি ক্লিনিক, বক্ষব্যাধি হাসপাতাল, বিভাগীয় বক্ষব্যাধি হাসপাতাল, আরবান ক্লিনিক, মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, সামরিক হাসপাতাল, জাতীয় বক্ষব্যাধি ইন্সটিটিউট ও হাসপাতাল, জেলা সদর হাসপাতালে ইপিজেড, বিজিএমইএ, অন্যান্য শিল্প প্রতিষ্ঠান এবং জেলাখানায় কফ পরীক্ষা করানো যাবে এবং রোগের চিকিৎসা সেবা সহ ওষুধ পাওয়া যাবে। যক্ষ্মা রোগ সনাক্ত হলে অবিলম্বে চিকিৎসা শুরু করতে হবে। নিয়মিত, সঠিকমাত্রায় এবং পূর্ণ মেয়াদে স্বাস্থ্যকর্মী কিংবা সেবীকার সামনে ওষুধ সেবন করতে হবে। এক পরিসংখ্যানে জানা যায়, কুষ্টিয়া জেলাতে কফ সংগ্রহ কেন্দ্র প্রতিমাসে ১৭৬ টি, ল্যাবরেটরির সংখ্যা ১২ টি, স্বাস্থ্য সহকারীর সংখ্যা ২০৩ জন,স্বাস্থ্য কর্মীর সংখ্যা (ব্র্যাক) ৯৮৭ জন, চিকিৎসাধীন রোগীর সংখ্যা ১৩০১ জন। সভাপতির বক্তব্যে সিভিল সার্জন ডা.তরুণ কান্তি হালদার বলেন, কুষ্টিয়াতে ৯ জন শিশু আক্রান্ত হয়েছে। আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসা চলছে। ইতিমধ্যে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বিড়ি-সিগারেট কারখানায় নারী ও শিশু শ্রমিক নিয়োগ করা যাবে না। এই মর্মে কারখানা মালিকদেরকে লিখিত ভাবে চিঠি দেয়া হয়েছে। এ পরও কোন কারখানা মালিক তার প্রতিষ্ঠানে নারী ও শিশু শ্রমিক নিয়োগ করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। গোল টেবিল বৈঠকে কুষ্টিয়ার স্থানীয় দৈনিক পত্রিকার সম্পাদক, টিভি ও জাতীয় দৈনিক পত্রিকার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন