আরিফ মেহমুদ ॥ কুষ্টিয়ায় বন কর্মকর্তার বাসার কাজের মেয়ে নির্যাতনের শিকার হয়েছে। প্রতিদিন নির্যাতনের বর্ননাগোপন রাখলেও আজ মঙ্গলবার সকালে নির্যাতন সইতে না পেরে বাসা থেকে বের হয়ে রাস্তায় চলে আসে আফরোজা খাতুন। আফরোজার সারা শরীরে আঘাতের চিহৃ রয়েছে। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, রাঙ্গামাটি জেলার মাইনিমু বাজার এলাকার রতন আলীর মেয়ে আফরোজা খাতুনকে ৪ বছর আগে গৃহপরিচারিকার কাজ নেয় বন কর্মকর্তা নিশাদের বাসায়। এ বাসায় আসার পর দিন থেকেই তার উপর চালানো হয় নির্যাতন। কারনে অকারনে বন কর্মকর্তা নিশাদের স্ত্রী মুনমুন প্রতিদিন আফরোজার উপর নির্যাতন চালিয়ে আসছে বলে পুলিশ জানায়। নির্যাতিত গৃহপরিচারিকা আফরোজা জানান, এ বাসায় কাজ নেয়ার পর ঠিকমত খেতে দেয় না। প্রতিদিন ম্যাডাম মারধর করেন। হাতের কাছে যা পায় তা দিয়ে হামলে পড়ে আমার উপর। ঝাটা, লাঠি, খুনতি সব ব্যবহার করেন তিনি। ঘরের ভিতর আটকে মুখে বেধে অত্যাচার চালাত বলে সে পুলিশকে জানায়। আজ ম্যাডামের মেয়ে একটি ফুলদানি ভাঙ্গলে সে আমাকে পেটাতে থাকে। মার সহ্য না করতে পেরে ঘর থেকে বাইরে বের হয়ে যায়। পুলিশ আহত অবস্থায় আফরোজাকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে এসে ভর্তি করে। কুষ্টিয়া বিভাগীয় বন কর্মকর্তা হোসাইন মো: নিশাদের বাসায় গৃহপরিচারিকার কাজ করছে গত ৪ বছর ধরে। একটু ভাল থাকার আসায় নিশাদের বাসায় আসলেও গত ৪ বছরে তার কপালে জুটেছে শুধু অত্যাচার নির্যাতন। ঠিক মত খেতে না পেয়ে শুকিয়ে কঙ্কাল হয়ে গেছে শরীর। আফরোজা আরো জানান, নিশাদ স্যার আমার পক্ষ নিয়ে কিছু বললে ম্যাডাম তাকেও মারধর করত। তাই ভয়ে তিনি কিছু বলতে সাহস পেতেন না। বন কর্মকর্তা নিশাদের নিকট ঘটনা জানতে চাইলে কোন কথা না বলে নিশ্চুপ থাকেন। আফরোজা এ সময় সাংবাদিকদের নিকট অনুরোধ করে বলে, ভাই আমি আর এ বাড়িতে কাজ করব না। আপনারা আমাকে বাড়ি পৌঁছে দেন। পুলিশ আফরোজাকে উদ্ধার করলেও নিযাৃতনকারী মুনমুন বেগমকে আটক না করেই চলে আসে। মুনমুন বেগমের সাথে কথা বলতে চাইলে তিনি কোন কথা বলতে রাজী হননি। কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুভাষ চন্দ্র সাহা জানান, এ ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন