শুক্রবার, ৬ এপ্রিল, ২০১২

কুষ্টিয়ায় তিন মাসে ১৫টি বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার চুরি ,জনতার অভিযোগের আঙ্গুল বিভাগের দিকে!

এ.এইচ.এম.আরিফ ॥ সম্প্রতি জেলা জুড়ে বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার চুরির ঘটনা যেহারে বেড়েছে তা অতিতের সকল রেকর্ড ছাড়িয়েছে। একদিকে লোডশেডিং, অন্যদিকে ট্রান্সফরমার চুরির হিড়িক। এসব ঘটনায় একেবারেই দিশেহারা ও বেসামাল হয়ে পড়েছেন জেলার সাধারণ মানুষ ও দেশের উৎপাদনের রূপকার কৃষককুল। এক পরিসংখ্যানে জানা যায়, গত ৩ মাসে কুষ্টিয়ায় প্রায় ১৫টিরও অধিক ট্রান্সফরমার চুরির ঘটনা ঘটেছে। যার অধিকাংশই কুষ্টিয়া পলী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের অধিভূক্ত। রাতে বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের ভেতর এ চুরির ঘটনাগুলো ঘটছে। প্রায় প্রতিদিনই জেলার কোন না কোন স্থানে এমন ঘটনার খবর পাওয়া যাচ্ছে অহরহ। এসব ঘটায় সাধারণ মানুষ ও কৃষককুলে দিশেহারা হয়ে পড়লেও চরম বিব্রত বিদ্যুৎ বিভাগের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। রাতে লোডশেডিং সময় ট্রান্সফরমার চুরির সাথে বিদ্যুৎ বিভাগের কেউ জড়িত বলে জনতার অভিযোগের আঙ্গুল বিদ্যুৎ বিভাগের দিকে। জনতার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা। কুষ্টিয়া পলী বিদ্যুৎ সমিতির জিএম মুখলেছ গনি জানিয়েছেন, গত ৩মাসে কুষ্টিয়া পলী বিদ্যুৎ সমিতির আওতাধীন প্রায় ১৫টির অধিক ট্রান্সফরমার চুরির ঘটনা ঘটেছে। যার একটিও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। তবে ট্রান্সফরমার চুরির ঘটনায় সমিতির কোন কর্মকর্তা কর্মচারী যুক্ত নয় বলে দাবী করেছেন তিনি। তিনি বলেন,বিদ্যুৎ সংযোগ লাইন মেরামত কাজ করে থাকেন ঠিকাদার। আর আমরা শুধু সংযোগ দিয়ে থাকি। যদি কোন চুরির ঘটনা ঘটে থাকে তাহলে ঠিকাদারের লোকদের দ্বারাই হয়ে থাকতে পারে। কারণ তারা অভিজ্ঞ। শুধু ট্রান্সফরমারই নয়, বিপুল পরিমান বৈদ্যুতিক তারও খোয়া যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। পলী বিদ্যুতের পাশাপাশি পিডিবিতেও রয়েছে একই সমস্যা।  ট্রান্সফরমার চুরির সাথে সাথে তারও খোয়া যাচ্ছে।
কুষ্টিয়া পিডিবি’র তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী শরীফুল ইসলাম জানিয়েছেন, গত ১০দিনে পিডিবি কুষ্টিয়া অঞ্চলে ৫টি ট্রান্সফরমা চুরি গেছে। যা বিগত কয়েক বছরেও ঘটেনি। লোডশেডিং প্রসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, কুষ্টিয়া গ্রীডে বিদ্যুতের চাহিদা ৮০ মেগাওয়াট (গড়)। সেখানে পাচ্ছি ৩০ থেকে ৩৫ মেগাওয়াট। যা অর্ধেকেরও কম। ফলে কুষ্টিয়া গ্রীডের আওতাধীন মেহেরপুর, খোকসা ও রাজবাড়ী জেলার পাংশা এলাকার মানুষ সীমাহীন দূর্ভোগে পড়েছেন। বিশেষ করে চাষীদের অবস্থা খুবই খারাপ। ঠিকমত বিদ্যুৎ না পাওয়ায় বোরো আবাদ মারাত্মক ব্যাহত হচ্ছে। পিডিবি যেমন তেমন পলী বিদ্যুতের অবস্থা আরো খারাপ। পলী বিদ্যুৎ কর্তৃপ এবিষয়ে কোন তথ্য প্রদানে অপরাগত প্রকাশ করলেও গ্রাহকরা জানিয়েছেন, ২৪ ঘন্টায় ১৮ ঘন্টা বিদ্যুৎ থাকেনা। ফলে চাষীকুলের অবস্থা ভয়াবহ পর্যায়ে পৌছেছে। এদিকে বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমা চুরি বিষয়ে পুলিশের বেশ কয়েকটি অভিযোগ জমা পড়েছে জানিয়েছেন কুষ্টিয়ার পুলিশ মফিজ উদ্দিন আহম্মেদ। তিনি জানিয়েছেন বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে আমরা বেশ কয়েকটি বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমা ও তার চুরির অভিযোগ পেয়েছি। কারা এ চুরির সঙ্গে জড়িত তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা করা হচ্ছে।

ক্যাপশনঃ- বিদ্যুৎ লাইনের পোলের সাথে বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন