এ.এইচ.এম.আরিফ ॥ কুষ্টিয়ায় ঝুঁিকপূর্ণ ভবনের সংখ্যা দিনের পর দিন বাড়ছে। শতর্বষ পুর্বে গড়া সেকেলী ঝুঁকিপুর্ণ প্রাচীন এসব ভবনে জীবন-মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়ে দীর্ঘদিন মানুষ বসবাস করে আসছে। জেলা গণপূর্ত অধিদপ্তরের দেয়া তথ্যনুযায়ী কুষ্টিয়া শহরে প্রায় ৫২ টি ঝুঁকিপূর্ণ ভবন রয়েছে। কুষ্টিয়া শহরের মিলপাড়া আড়ুয়াপাড়া বড় বাজার থানাপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় জরাজীর্ণ এসব ভবনে যে কোন মুহুর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশংকা রয়েছে। সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, ভবনগুলোর ছাদ ধ্বসে পড়ছে। ফাটল দেখা দিয়েছে, সিলিং জুড়ে স্যাঁত স্যাঁতে ব্যাঙের ছাতা ও বটগাছ জন্মেছে, কোথাও কোথাও ইটের আস্তরন খসে ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে । বসবাসের অনুপযোগী এ সকল ভবনে মৃত্যুর ঝুঁকি মাথায় নিয়ে সংগঠনের অফিস, কোথাও বাসভবন কিংবা নীচতলায় বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে । শহরের আমলাপাড়ার উদীচী শিল্পী গোষ্ঠীর ভবনটি মারাত্বক ঝুঁকিপুণর্। তার পরেও এখানে কমিউনিষ্ট পার্টির অফিস, আমলা পাড়া স্পোটিং কাব, উদীচী শিল্পী গোষ্ঠীর অফিস হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। প্রতিদিন এই ভবনে শত শত লোক যাতায়াত করে। কথিত আছে এই ভবনটির একটি ছাঁদ একবার ধ্বসে পড়েছিলো। শহরের ২৮ মেছুয়া বাজারের তিন তলা বিশিষ্ট পিয়ার খাঁন আব্দুস সাত্তারের পরিত্যাক্ত বাড়িটির একেবারে ভগ্নদশা। নীচ তলার দোকানদার কুষ্টিয়া হার্ডওয়ারের স্বত্ত্বাধিকারী মজনুর রহমানের জানান, আমরা মৃত্যু ঝুঁকি মাথায় নিয়ে এই ভবনের নীচতলায় ব্যবসা পরিচালনা করে যাচ্ছি। ভবনটি ভেঙ্গে নতুন করে গড়বার তাগিদে বড় বাজার দোকানদার কল্যান সমিতির সভাপতি শফি উদ্দিনের নেতৃত্বে বাজার এলাকার সকল দোকানদারদের স্বার সংগ্রহ করে এ্যাবানন্ডেন্ট প্রোপার্টি কমিটির প্রধান জেলা প্রশাসক বরাবর ভবনটি ভেঙ্গে নতুন করে গড়বার আহবান জানিয়ে আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু এ ব্যাপারে কোন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। শহরের ৪৬ লীচাঁদ আগওয়ালা ষ্ট্রীট বড় বাজার এলাকার সদর পুলিশ ফাঁড়ি যেখানে রয়েছে সেই কুম্ভু মাঝি বিবির পরিত্যক্ত বাড়িটি খুবই জরাজীর্ণ। শহরের থানাপাড়া এলাকায় ২৬/১ আর এন সরকার রোডে অবস্থিত নেছার আহম্মেদের পরিত্যাক্ত বাড়িটি বিধ্বস্ত বিপর্যস্ত অবস্থায় রয়েছে। শহরের আড়–য়াপাড়া এলাকার পিসি রায় রোডের কসাই‘র পরিত্যাক্ত বাড়িটির একই অবস্থা। এছাড়া শহরের মিলপাড়া এলাকার কুষ্টিয়া বড় ষ্টেশনের পাশ্ববর্তি মহিদ পোল্ট্রি ফিডের পুরানো ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ। জেলার এ সকল ঝুঁকিপুর্ন ভবনগুলো ভেঙ্গে নতুন করে নির্মাণ করা জরুরী। এ ব্যাপারে গণপূর্ত অধিদপ্তরের এ্যাবানডেন্ট প্রোপার্টি, দেখাশোনা ও ভাড়া আদায়কারী আব্দুর রশিদ শিকদারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এ পর্যন্ত মোট ৫২ টি ঝুকি পুর্ন ভবনের তালিকা আমরা করেছি। কিন্তু এ ভবনগুলো ভেঙ্গে নতুন করে গড়বার উদ্যোগ বাধাগ্রস্থ হয়ে পড়ছে। ভবনগুলো ভেঙ্গে নতুন করে গড়তে অনেক টাকার প্রয়োজন। অপরদিকে, সরকার এ সকল পরিত্যাক্ত বাড়ি বেসরকারী মালিকানাধীন বিক্রয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ঝুঁকির্পুণ এ সকল বাড়ি দীর্ঘদিন যাবত কুঁজো হয়ে কোন রকম দাঁড়িয়ে থাকার কারণে এবং বাড়ির অভ্যন্তরে মানুষের বসবাস মারাত্মক দৃষ্টিকটু হিসেবেই পরিলতি হচ্ছে। পরিত্যক্ত বিধ্বস্ত বিপর্যস্ত বাড়িগুলো বিক্রয়ের সিদ্ধান্ত দীর্ঘায়িত হওয়ার কারনে দূর্ঘটনার আশংকা ক্রমেই বাড়ছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন