আরিফ মেহমুদ ॥ স্বল্প ও মধ্যম আয়ের সরকারী, বেসরকারী চাকুরীজীবিসহ সাধারণ মানুষের নি®কণ্টক স্বপ্নের হাউজিং এষ্টেটের আবাসন প্লট প্রাপ্তিতে এখন অনেক দুর। জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ (সাবেক গৃহ সংস্থান অধিদপ্তর)’র সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার সেচ্ছাচারিতা, অনিহা ও দক্ষ লোকবলের অভাবের কারনে আবেদনের সাড়ে ৪ মাসেও হাউজিং এষ্টেট প্রকল্পের আবাসিক প্লট বরাদ্দের ড্রয়ের কোন দিনক্ষন কিংবা তারিখ ঘোষনা নিশ্চিত করতে পারেনি আজও। স্বল্প ও মধ্যম আয়ের মানুষের স্বপ্নের আবাসন প্রাপ্তি নিয়ে দেখা দিয়েছে চরম অনিশ্চিয়তা! গত ২০১০ সালের ১ অক্টোবর সংশোধিত বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ (সাবেক গৃহ সংস্থান অধিদপ্তর)’র অধীনে কুষ্টিয়া সহ দেশের ৮ টি ডিভিশনের হাউজিং এষ্টেটের আবাসিক প্লট বরাদ্দ দেয়ার জন্য কিছু শর্ত সাপেক্ষে আবেদনপত্র আহবানের ঘোষনা দেন। এ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর স্বল্প ও মধ্যম আয়ের সরকারী, বেসরকারী চাকুরীজীবিসহ সাধারণ মানুষ শহরে স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য এক খন্ড জমির নিশ্চিত ব্যবস্থা করতে হুমড়ি খেয়ে পড়ে দেশের ৮ টি ডিভিশনের হাউজিং এষ্টেট অফিসগুলোতে। আবেদনকারীদের অতিরিক্ত ভীড় সামলাতে তপশিলী ব্যাংকগুলোকে সে সময় হিমশিম খেতে হয়েছে রীতিমত। অফিসগুলোতে বিশেষ করে কুষ্টিয়া হাউজিং এষ্টেট অফিসে প্রসপেক্টাস ও আবেদন ফরমের সংকট দেখা চরম। আবেদনকারীদের সামলাতে সরবরাহকৃত প্রসপেক্টাস ও আবেদন ফরম ফুরিয়ে গেলে ফটোকপি দিয়ে পরিস্থিত নিয়ন্ত্রণ করা হয়। আবাসিক প্লট বরাদ্দ পাওয়ার জন্য প্রত্যেক আবেদনকারীকে প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিষ্ট্রেটের সামনে উপস্থিত হয়ে নির্ধারিত ছকে ১৫০ টাকার নন জুডিশিয়াল ষ্টেম্পে হলফনামা করে আবেদনপত্রের সাথে জমা দিতে হয়েছে। এই হলফনামা নিতেও সরকারী অফিসগুলোতে আবেদনকারীদের দীর্ঘ লাইনে ঠাঁই দাড়িয়ে অপেক্ষা করতে হয়েছে। ঢাকা ডিভিশন-১ এর অধীনে সেকশন-২ মিরপুর, ঢাকা ডিভিশন-২এর অধীনে মোহাম্মদপুর, চট্টগ্রাম ডিভিশন এর অধীনে নাসিরাবাদ, সিলেট ডিভিশনের অধীনে শিবগঞ্জ, রাজশাহী ডিভিশনের অধীনে সপুরা, খুলনা ডিভিশনের অধীনে খালিশপুর, দিনাজপুর ডিভিশনের অধীনে নিউটাউন ও কুষ্টিয়া উপ-বিভাগের অধীনে কুষ্টিয়া হাউজিং এষ্টেটের আওতায় ৫ কাঠার প্লট ১টি, ৪ কাঠার প্লট ৩টি, সাড়ে ৩ কাঠার প্লট ১৩৭টি, আড়াই কাঠার প্লট ২টি ও ২.০৮ কাঠার প্লট ৬টি সহ মোট ১৪৯টি প্লটের বিপরীতে প্রায় সাড়ে ৬ হাজার আবেদনপত্র জমা পড়েছে। এর মধ্যে কুষ্টিয়া উপ-বিভাগের অধীনে কুষ্টিয়া হাউজিং এষ্টেটের প্লটের জন্য আবেদন পড়েছে প্রায় ৫ হাজার ৪শত। ২.০৮ ও ২.৫০ (আড়াই) কাঠার প্লটের অনুকুলে ২৫ হাজার, ৩.৫০ কাঠার প্লটের অনুকুলে ৩৫ হাজার, ৪ কাঠার প্লটের অনুকুলে ৪০ হাজার ও ৫ কাঠার প্লটের অনুকুলে ৫০ হাজার টাকার জামানত বাবদ আবেদনকারীরা ব্যাংক ড্রাফট অথবা পে-অর্ডারের মাধ্যমে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ, গৃহায়ন ভবন সেগুনবাগিচা চেয়ারম্যানের অনুকুলে প্রায় ১৮ কোটি টাকা জমা দিয়েছেন। আবেদনপত্র নেয়া শুরু (০১-১০-১০ইং) ও শেষ সময় (৩১-১২-২০১০ইং) নির্ধারিত থাকলেও কত দিন কিংবা মাস, বছর পর আবাসিক প্লট বরাদ্দের ড্র অনুষ্ঠিত হবে তা কিন্তু উল্লেখ ছিলনা। প্লট বরাদ্দের ড্রয়ের ব্যাপারে কুষ্টিয়া উপ-বিভাগের দায়িত্বশীল প্রকৌশলী হামিদুর রহমান জানান, অনেক আবেদনপত্র জমা পড়েছে। ৮ডিভিশনের আবেদনকারীদের ডাটা এন্ট্রির কাজ দ্রুত চলছে রাজশাহী ডিভিশনাল অফিসে।এসব আবেদনকারীদের ডাটা এন্ট্রি করা সম্পন্ন হলেই খুব শীঘ্রই প্লট বরাদ্দের ড্রয়ের তারিখ ঘোষানা করা হবে বলে জানালেও একদিকে যেমন কোন দিন, কখন, প্লট বরাদ্দের ড্রয়ের মাহিন্দ্রক্ষণ আসবে সেই অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় রয়েছে আবেদনকারীরা। তেমনি অন্যদিকে ড্র হওয়ার পর জামানতের টাকা ফেরতের নিশ্চয়তা নিয়েও রয়েছে অমানিষা অন্ধকারে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে জানান, জামানতের টাকা ফেরত নিয়ে কান সংসয় নেই। যারা প্লটের বরাদ্দ পাবেন না অথবা যারা প্লট নিতে আগ্রহী নন তাদের জামানতের টাকা বরাদ্দ প্রাপ্তদের নামের তালিকা প্রকাশের অনধিক ৬০ দিন পর জামানতের টাকার কোন প্রকার সুদ ছাড়াই নির্বাহী প্রকৌশলী রাজশাহী ডিভিশন জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ, সপুরা রাজশাহী অফিস থেকে ফেরত নিতে পারবেন। ডাটা এন্ট্রিতে বিলম্ব কিংবা অন্য কোন অভ্যান্তরিণ কারন অথবা আমলাত্রান্ত্রিক জটিলতা, সে যে কারনেই প্লট বরাদ্দের ড্রয়ের বিলম্ব হোক না কেন আবেদনকারীরা চাই শহরে স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য তাদের নি®কণ্টক স্বপ্নের একখন্ড প্লট প্রাপ্তির নিশ্চয়তা।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন