রবিবার, ১৮ নভেম্বর, ২০১২

দৌলতপুরে বৃত্তি প্রদানে বক্তারা,জাতিকে সমৃদ্ধ করতে শিক্ষার কোন বিকল্প নাই

আরিফ মেহমুদ ॥ একটি জাতিকে সমৃদ্ধ করতে হলে শিক্ষার কোন বিকল্প নাই। আজকের মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের পড়া লেখা শেষ করে সমাজের আদর্শ মানুষ হিসেবে দেশ ও জাতির কল্যাণে নিজেদেরকে আত্মনিয়োগ করতে হবে। সমাজের প্রতি এ প্রজন্মের মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের দায়িত্ব অনেক। আমরা সবাই দেশ ও জাতির কাছে দায়বদ্ধ। সেই দায়িত্ব বোধ থেকেই আজকে আরমা ওয়েলফেয়ার সোসাইটি মেধাবী অথচ গরীব ছাত্র-ছাত্রীরা যাতে অকালেই ঝরে না পড়ে, সে দিকে লক্ষ্য রেখেই তাদের পড়া-লেখায় সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। আগামী দিনের নেতৃত্ব দানকারী আজকের কমলমতি মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদেরকে আধুনিক প্রযুক্তি ও বিজ্ঞানসম্মত শিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তুলতে হবে। আগামী প্রজন্মদেরকে সু-শিক্ষায় শিক্ষিত করতে পারলেই ডিজিটাল বাংলাদেশ ও দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন সম্ভব হবে এবং তারা সমাজ ও রাষ্ট্রের কল্যাণ বয়ে আনবে। গতকাল রবিবার দুপুরে দৌলতপুর উপজেলা অডিটরিয়াম মিলনায়তনে আরমা ওয়েলফেয়ার সোসাইটির আয়োজনে মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের আব্দুর রাজ্জাক শিক্ষা বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলা চেয়ারম্যান হারেজ উদ্দিন এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে অতিথিদের ফুলের তোড়া দিয়ে বরণ করে নেন আব্দুর রাজ্জাক শিক্ষা বৃক্তিপ্রাপ্ত মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীরা।কোরআন তেলওয়াতের মধ্যে দিয়ে মূল অনুষ্ঠান শুরু করা হয়। দৌলতপুর উপজেলার ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা ইকবাল আখতারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ডোনার স্পিকার হিসেবে বক্তব্য রাখেন আরমা গ্র“প অব কোম্পানীজ ও আরমা ওয়েলফেয়ার সোসাইটির চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন দৌলতপুর থানার ওসি জাহির হোসেন, দৌলতপুর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ফজিলাতুন নেছা, জেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিটের ডেপুটি কমান্ডার আলহাজ্ব নজরুল ইসলাম গেরিলা। এতে বক্তব্য রাখেন জাসদ নেতা আজিবর রহমান, বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী ও সাংবাদিক আবুল কালাম আজাদ, সাংবাদিক শরীফুল ইসলাম। অভিভাবকদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন মথুরাপুর পিপলস ডিগ্রী কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধক্ষ্য আবু সাইদ মোহাম্মদ আজমল হোসেন। প্রাথমিক শিক্ষকদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন শিক্ষক নেতা ফিরোজ খান নুন, মাধ্যমিক শিক্ষকদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন মাষ্টার মজিবর রহমান ও বিডিএস মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইয়াকুব আলী। বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের মধ্যে বক্তব্য রাখে বৈভব সরকার ও আব্দুল্লাহ আল মাসুম প্রমুখ। ডোনার স্পিকার হিসেবে আরমা গ্র“প অব কোম্পানীজ ও আরমা ওয়েলফেয়ার সোসাইটির চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক তার বক্তব্যে বলেন, শিক্ষা আমাদের মৌলিক অধিকার। যে সব দেশ আজ উন্নতির শিখরে অবস্থান করছে তার ভিত্তিমুলে কিংবা নেপথ্যে রয়েছে শিক্ষা। তাই দেশ ও জাতির কল্যানে শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা প্রশ্নাতীত। আগামী দিনের নেতৃত্ব দানকারী আজকের কমলমতি মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদেরকে আধুনিক প্রযুক্তি ও বিজ্ঞানসম্মত শিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তুলতে হবে। আগামী প্রজন্মদেরকে সু-শিক্ষায় শিক্ষিত করতে পারলেই ডিজিটাল বাংলাদেশ ও দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন সম্ভব হবে এবং তারা সমাজ ও রাষ্ট্রের কল্যাণ বয়ে আনবে। আজকের পৃথিবীতে ডিজিটাল বাংলাদেশ নামে এ দেশের উন্নতি, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির চরম পরাকাষ্ঠে যে বিষয়টি উল্লে¬খযোগ্য তাহলো এ দেশের ছাত্র-ছাত্রীদের মেধাকে সম্পদে পরিণত করতে হবে। আরমা ওয়েলফেয়ার সোসাইটি মেধাবী অথচ গরীব ছাত্র-ছাত্রীরা যাতে অকালেই ঝরে না পড়ে, সে দিকে লক্ষ্য রেখেই তাদের পড়া-লেখায় সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। মেধাবী গরীব ছাত্র-ছাত্রীদের মেধাকে আগামীতে ধরে রাখতে এই উদ্যোগ নিয়েছে। বৃত্তির টাকা সামান্য কিন্তু উদ্যোগ মহৎ ও বড়। এই সামান্য অনুদান নিয়েই তোমাদেরকেই গড়তে হবে আগামীর প্রযুক্তির পৃথিবী।  আলোচনা শেষে প্রধান অতিথি সহ অন্যান্য অতিথিবৃন্দ পঞ্চম শ্রেণী থেকে দশম শ্রেণীর বৃত্তিপ্রাপ্ত ১৩৬ জন মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে বৃত্তির অনুদান হিসেবে ২ লাখ ৬০ হাজার টাকা ও বিশেষ সম্মাননা হিসেবে আরমা ওয়েলফেয়ার সোসাইটির চেয়ারম্যান স্বাক্ষরিত একটি সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়। উল্লেখ্য, শিক্ষার গুনগত মান উন্নয়নে ও দারিদ্রতা শিক্ষা ক্ষেত্রে কোন বাধা নয় এই শ্লোগানকে বাস্তবায়নে আরমা ওয়েলফেয়ার সোসাইটি কুষ্টিয়ার দৌলতপুর ভেড়ামারা ও মিরপুর উপজেলার গোন্ডি ছাড়িয়ে রাজশাহী জেলার চারঘাট, বাঘা ও নাটোর জেলার লালপুর উপজেলার দরিদ্র অথচ মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝেও বিশেষ সম্মাননা ও বৃত্তি প্রদান করে আসছে। স্বাস্থ্য খাতে দিনাজপুরের অরবিন্দ মা ও শিশু হাসপাতালে অনুদান প্রদান করছেন। কুষ্টিয়া শিশু হাসপাতালে আব্দুর রাজ্জাক নামে একটি ওয়ার্ড রয়েছে। এছাড়াও প্রতি বছর গরীব অথচ মেধাবী ৫০ জন ছাত্র-ছাত্রীর সমস্ত পড়া-লেখার ব্যয়ভার বহন করেন আরমা ওয়েলফেয়ার সোসাইটির চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক। অনুষ্ঠানটি সার্বিক উপস্থাপনা ও পরিচালনা করেন দৌলতপুর ডিগ্রি কলেজের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক আমিরুল ইসলাম সরকার।


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন