বুধবার, ৩ এপ্রিল, ২০১৩

দহকুলা মহম্মদ শাহী উচ্চ বিদ্যালয়ের ৪৭বছর পূর্তিতে ডিমিস সমাজ পরিবর্তনে যুব সমাজের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ


আরিফ মেহমুদ ॥ কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক সৈয়দ বেলাল হোসেন বলেছেন, সংস্কৃতির পাশা পাশি ক্রীড়াঙ্গন ও শিক্ষাতেও কুষ্টিয়া জেলার ঐতিহ্যবাহী ইতিহাস রয়েছে। সেই ইতিহাস ও ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতা আমাদের পূণঃজীবিত করতে যুবকদের এগিয়ে আসতে হবে। এ জন্য জেলার সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন। পারিবারিকভাবেই আপনার ছেলেকে যেমন বিদ্যালয়ে পাঠাচ্ছেন। তেমনি তাদের ক্রীড়ামুখি করে গড়ে তোলার দায়িত্বও আপনাদের। ভাল খেলোয়াড় তৈরী করতে হলে প্রয়োজন নিয়মিত অনুশীলন করা। লেখাপড়া শিখলেই কেবল দেশের সুনাম বয়ে আনা সম্ভব হয় না। খেলাধুলার মাধ্যমে দেশের সুনাম বয়ে আনা সম্ভব।খেলাধুলা একদিকে যেমন শারীরকে সুস্থ রাখে,অপর দিকে সন্ত্রাস ও মাদকাসক্ত থেকে যুব সমাজকে রক্ষা করে। লেখাপড়ার পাশাপাশি খেলাধুলা করলে শরীর ও মন দুই-ই ভালো থাকে। তাই পড়ালেখার পাশাপাশি খেলাধুলার গুরুত্ব অপরিসীম। আজ যারা ছাত্র-ছাত্রী তারাই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। সমাজের আমূল পরিবর্তন আনতে যুব সমাজের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে দহকুলা মহম্মদ শাহী উচ্চ বিদ্যালয়ের ৪৭বছর পূর্তি উপলক্ষে আলোচনা সভা ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বিদ্যালয়ের ৪৭বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত দিনব্যাপী কর্মসূচীর মধ্যে সকলা ৭টায় বিদ্যালয় প্রাঙ্গন থেকে এক বর্ণাঢ্য র‌্যালী বের করা হয়। র‌্যালীটি দহকুল বাজার প্রদক্ষিণ করে বিদ্যালয়ে এসে মিলিত হয়। এরপর সকাল ১০টায় ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। বিকেলে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও ৫ নং আলামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আ’লীগ নেতা আখতারুজ্জামান বিশ্বাসের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কুষ্টিয়া সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলীমুন রাজীব ও বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক কাজী আফছারুল হক। আলোচনা শেষে প্রধান অতিথি সহ অন্যান্য অতিথিবৃন্দ ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ কেেরন। পরে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। এতে স্থানীয় সহ বেতার ও টেলিভিশনের খ্যাতমান শিল্পীবৃন্দ সঙ্গীত পরিবেশন করেন।   

বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবসে সিভিল সার্জন ডাঃ তরুণ কান্তি প্রতিবন্ধী শিশুদের কল্যাণে বিত্তবানদের এগিয়ে আসতে হবে

আরিফ মেহমুদ ॥ কুষ্টিয়ার সিভিল সার্জন ডাঃ তরুণ কান্তি হালদার বলেছেন, প্রতিকন্ধীরা আমাদের সমাজের বোঝা নয়, তারা আমাদের সম্পদ ও অহংকার। তাদের অবহেলা নয় বরং সহায়তা করতে হবে। অটিস্টিক ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের প্রতি সমাজের ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করতে হবে। অটিজম বিষয়ে এবং প্রতিবন্ধীদের অধিকার সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং পরিবার ও সমাজের দৃষ্টিভঙ্গী বদলাতে হবে। একটি বৈষম্যহীন একীভূত সমাজ তৈরির লক্ষ্যে উন্নয়নের মূলস্রোতধারায় সকলকে সম্পৃক্তকরণের মাধ্যমে আমরা একটি সুন্দর, সুখী ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারি। প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে ও তাদের কাঙ্খিত লক্ষ্য পূরণে সরকারের পাশাপাশি দেশি বিদেশি সংস্থা, সুশীল সমাজ এবং বিত্তবানদের এগিয়ে আসতে হবে। ভিন্ন মানববৈচিত্রের অধিকারী এ জনগোষ্ঠীকে উন্নয়নের মূলধারায় সম্পৃক্ত করতে বর্তমান সরকার ব্যাপক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। প্রতিবন্ধীদের শিক্ষা উপবৃত্তি প্রদান, বুদ্ধি প্রতিবন্ধী স্কুল স্থাপন, সরকারি চাকুরিতে কোটা সংরক্ষণ, প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্র এবং অটিজম রির্সোস সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে। প্রতিবন্ধিতা সনাক্তকরণ জরিপের পাইলট প্রকল্পের কাজ হাতে নেয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য, শিক্ষা, ক্রীড়া, সংস্কৃতিসহ সকল ক্ষেত্রে তাদের সমঅধিকার নিশ্চিত করতে সরকার বদ্ধপরিকর। গতকাল মঙ্গলবার সকালে জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসন ও জেলা সমাজ সেবা অধিদপ্তর আয়োজিত বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানের শুরুতেই প্রতিবন্ধীদের হৃদয়ের অব্যক্ত নীল বেদনার বহিপ্রকাশের প্রতীক হিসেবে নীল বাতি জ্বালিয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি। প্রতি বছরের মতো এবারও সারা বিশ্বের ন্যায় কুষ্টিয়াতেও যথাযোগ্য কর্মসূচীর মাধ্যমে ‘৬ষ্ঠ বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস’ পালিত হয়েছে। যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে র‌্যালী, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। কুষ্টিয়া জেলা সমাজ সেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আব্দুল গনির সভাপতিত্বে এবারের প্রদিপাদ্য বিষয়-অটিজম জীবনের সাহসী যাত্রা’ এর উপর আলোকপাত করে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডাঃ আজিজুন নাহার, সমাজ সেবা অধিদপ্তরের সাবেক উপ-পরিচালক নজরুল ইসলাম ও দি কুষ্টিয়া চেম্বার অব কমার্সের সহ-সভাপতি এস এম কাদেরী শাকিল। আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন প্রতিবন্ধী সংগঠন কম্পনের নির্বাহী পরিচালক জেদ আলী, প্রতিবন্ধী সংগঠনের নেতা নওশের আলী, কুষ্টিয়া বুদ্ধি প্রদিবন্ধী স্কুলের প্রধান শিক্ষক আসমা আনসারী মিরু,প্রতিবন্ধী সংগঠনের নেতা আখতার হোসেন ও বাবুলার রহমান প্রমুখ। বক্তারা তাদের বক্তব্যে বলেন,আগে সংক্রামক রোগের ওপর গুরুত্ব দেয়া হলেও মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা ও ডেভেলপমেন্টাল ডিজঅ্যাবিলিটিজের মতো অসংক্রামক ব্যাধিগুলো চিকিৎসার বাইরে থেকে গেছে এবং তার ফলে ধীরে ধীরে সমাজে অনেক জীবন নষ্ট হয়েছে-যাতে সংশি¬ষ্টদের সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষতির পাশাপাশি মানসিক যন্ত্রণার শিকার হতে হয়েছে। গত শতকে শিশুদের মানসিক বিকাশ পরীক্ষা-নিরীক্ষার অভূতপূর্ব অগ্রগতি হলেও দুর্ভাগ্যজনকভাবে তাদের ও তাদের পরিবারের চাহিদা পূরণের সেবাগুলো সেভাবে বাড়েনি। তারপর আমাদের এখানে যেসব সেবা দেয়া হয় সেগুলোর বেশিরভাগই হয়ে থাকে নগরভিত্তিক। তাই গ্রাম ও প্রত্যন্ত অঞ্চলে বসবাসকারী এবং দরিদ্ররা সেগুলো পায় না। কী কারণে অটিজম হয় তা আমাদের জানা নাও থাকতে পারে, কিন্তু অটিস্টিকদের নিজেদের সার্মথ অনুধাবনের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। আলোচনা শেষে একজন প্রতিবন্ধীকে প্রধান অতিথি সহ অন্যান্য অতিথিবৃন্দ একটি হুইল চেয়ার তুলে দেন। পরে জেলার বিভিন্ন প্রতিবন্ধী সংগঠনের ছেলে-মেয়েদের অংশগ্রহনে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানটি সার্বিক উপস্থাপনা ও পরিচালনা করেন খন্দকার লুৎফর রহমান।

কুষ্টিয়া প্রথম মুক্ত দিবসে ডিসি-মুক্তিযোদ্ধারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান, আমাদের অহংকার

আরিফ মেহমুদ ॥ কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক সৈয়দ বেলাল হোসেন বলেছেন, জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান ও দেশের সূর্য্য সৈনিক মুক্তিযোদ্ধারা যে আশা ও প্রত্যাশা নিয়ে এদেশ স্বাধীন করেছিল তা পুরণ হয়নি আজো। স্বাধীনতার ৪২ বছর অতিবাহিত হলেও আমরা এখনো স্বাধীনতার পূর্ণাঙ্গ স্বাদ পায়নি। দেশের স্থপতি জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিবক ৭ মার্চের আহবানে সাড়া দিয়ে বাংলার দামাল ছেলেরা মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের রণাঙ্গণে যারা বুকের তাজা রক্ত দিয়ে এদেশ থেকে চিরশুত্র“ পাকিস্তানী হানাদারদের উৎখাত করে প্রিয় মাতৃভূমিকে মুক্ত করেছিল তাদের মধ্যে কোন বিভেদ অনৈক্য থাকতে পারেনা। মুক্তিযোদ্ধারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান, আমাদের অহংকার। মুক্তিযোদ্ধারা মহান স্বাধীনতার জন্য অমিত তেজে ও অসীম সাহসিকতা নিয়ে পাকহানাদারদের সাথে রক্তক্ষয়ী সশস্ত্র যুদ্ধ করে স্বাধীনতা অর্জন করেছে। তাঁরা বাঙালী জাতিকে একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র উপহার দিয়েছেন। যুদ্ধচলাকালিন সময়ে আজকের দিনে কুষ্টিয়ার মুক্তিযোদ্ধারা পাকহানাদারদের সাথে মরণপন যুদ্ধ করেই প্রথম কুষ্টিয়াকে মুক্ত করেছিল। গতকাল রবিবার সকালে কালেক্টরেট চত্বরে কুষ্টিয়া প্রথম মুক্তদিবস উদযাপন উপলক্ষে মুক্তিযোদ্ধাদের সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সমাবেশের আগে প্রধান অতিথির নেতৃত্বে কালেক্টরেট ভবন থেকে এক বর্ণাাঢ্য র‌্যালী বের করা হয়। র‌্যালীটি শহরে প্রদক্ষিণ শেষে কালেক্টরেট চত্বরের শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে এসে শেষ হয়। জাতীয় ও মুক্তিযুদ্ধের পতাকা উত্তোলনের মধ্যে দিয়ে সমাবেশের শুরুতেই আমাদের মহান স্বাধীনতার মুক্তিযুদ্ধে নিহত সকল শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের বিদেহী আত্মার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে ও মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। সকল শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে প্রথমে কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক সৈয়দ বেলাল হোসেন ও পুলিশ সুপার মফিজ উদ্দিন আহম্মেদ পুষ্প মাল্য অর্পণ করেন। পর পর জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের পক্ষে কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা নাছিম উদ্দিন আহমেদ,ডেপুডি কমান্ডার আলহাজ্ব রফিকুল আলম টুকু, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাংগঠনিক কমান্ডের পক্ষে কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আজগর আলী ও সাংগঠনিক কমান্ডের আহবায়ক মানিক কুমার ঘোষ সহ সর্বস্তরের বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ শহীদ বেদিতে পুষ্প মাল্য অর্পণ করেন। সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার মফিজ উদ্দিন আহম্মেদ, কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ড.মল্লিক আনোয়ার হোসেন, কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আজগর আলী, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ইউনিটের কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা নাছিম উদ্দিন আহমেদ ডেপুডি কমান্ডার আলহাজ্ব রফিকুল আলম টুকু, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাংগঠনিক কমান্ডের আহবায়ক মানিক কুমার ঘোষ সহ জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও সর্বস্তরের বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ উপস্থিত ছিলেন।

স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস-বাঙালি জাতির গৌরবের ও অহংকারের দিন স্বাধীনতা দিবস

আরিফ মেহমুদ ॥ কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক সৈয়দ বেলাল হোসেন বলেছেন, জাতীয় জীবনের সবচেয়ে আলোচিত, সবচেয়ে গৌরবের স্মৃতি নিয়ে আবারও ফিরে এসেছে চির অম­ান, আনন্দ-বেদনায় মিশ্রিত আমাদের মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসটি। মৃত্যুপণ লড়াই ও রক্তসমুদ্র পাড়ি দিয়ে বীর বাঙালি জাতি ছিনিয়ে এনেছে জাতীয় ইতিহাসের সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন-স্বাধীনতা। আজ থেকে ৪২ বছর আগের এই দিনে পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীর দমন অভিযানের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল বাংলার সাড়ে সাত কোটি বাঙালি। বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অমোঘ আহবানে সর্বাত্বক লড়াই শুরু করে তারা। ২৫ মার্চের কালরাত্রিতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ঢাকার গণহত্যাই মরণপণ যুদ্ধে ঠেলে দেয় এ জনপদের মানুষকে। দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মাধ্যমে ১৬ ডিসেম্বর লড়াকু এ জাতি চূড়ান্ত বিজয়ের মধ্য দিয়ে ছিনিয়ে আনে তার অনিবার্য বিজয়। সেই থেকে ২৬ মার্চ এ জাতির জন্য এক আলোকোজ্জ্বল গৌরবের ও অহংকারের দিন। গতকাল কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসন আয়োজিত মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে বেলা ১১টায় জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে জেলার শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবার ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা ও মুক্তিযোদ্ধাদের ক্রেষ্ট প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি আরো বলেন স্বাধীনতার গৌরবময় ইতিহাস ধরে রাখতে বর্তমানে প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। অসত্য ও বিকৃত ইতিহাস থেকে নতুন প্রজন্মকে মুক্ত করা এবং যুদ্ধাপরাধী, রাজাকারমুক্ত দেশ গড়ার। বাংলাদেশ এবং বঙ্গবন্ধু, রাষ্ট্র এবং ব্যক্তি আজ এক বিন্দুতে মিলিত হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের স্ব-পক্ষের সকল শক্তিকে নিজের ভেদাভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সম্পন্ন করতে। স্বাধীনতার ৪২ বছরে অনেকেই হতাশা প্রকাশ করেন, দেশ আমাকে কি দিয়েছে! দেশ আমাকে কি দিয়েছে সেটি বড় কথা নয়, বড় কথা হচ্ছে আমি দেশকে কি দিয়েছি সেটিই প্রধান বিবেচ্য বিষয় মেনে নিয়ে দেশ ও জাতির উন্নয়নে সামনে এগিয়ে যেতে হবে।
কুষ্টিয়া জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কেএম রাহাতুল ইসলামের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার মফিজ উদ্দিন আহম্মেদ, জেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক আজগর আলী, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের কমান্ডার নাছিম উদ্দিন আহমেদ, ডেপুটি কমান্ডার হাজী রফিকুল আলম টুকু, বীর মুক্তিযোদ্ধা নাসির উদ্দিন মৃধা, আব্দুল মোমিন ও সানোয়ার উদ্দিন রিন্টু প্রমুখ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন আরডিসি ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জাহিদুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে নিহত সকল শহীদের আত্মার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে ১মিনিট দাড়িয়ে নিরবতা পালন করা হয়। পরিশেষে জেলার শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবার ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা ও বিশেষ উপহার সামগ্রী প্রদান করা হয়।
এদিকে স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে সন্ধ্যায় কুষ্টিয়া কালেক্টরেট ভবন চত্বরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পাদদেশে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসন আয়োজিত মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ড.মল্লিক আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানেও তিনি প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন। তিনি তার বক্তব্যে আরো বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে সুখি সমৃদ্ধ ও দারিদ্রমুক্ত দেশ গঠনে ও জাতীয় উন্নয়নে ডিজিটাল প্রযুক্তির অবদান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ডিজিটাল প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার, দিক নির্দেশনা ও সম্পৃক্ততায় কঠিনতর কাজ অতি সহজে সম্পন্ন করা সম্ভব। অবহেলিত উন্নয়ন বঞ্চিত এলাকায় যুব সমাজের মাঝে প্রযুক্তির অংশ গ্রহনে সামাজিক আন্দোলনের মাধ্যমে আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টি করে উন্নয়নের দ্বার উম্মোচন করতে পারে। আসুন মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে অঙ্গীকার করি সুখি সমৃদ্ধ, ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার সর্বজনীন ও অপরিহার্য করে তুলি। এবারের আলোচ্য বিষয় ছিল-সুখি সমৃদ্ধ, ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত বাংলাদেশ গঠনের লক্ষে ডিজিটাল প্রযুক্তির সর্বজনীন ব্যবহার। কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ড.মল্লিক আনোয়ার হোসেনের  সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা পুলিশ সুপার মফিজ উদ্দিন আহম্মেদ, জেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক আজগর আলী, কুষ্টিয়া সরকারী কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর বদরুদ্দোজা, স্বাচিব নেতা ডাঃ আমিনুল হক রতন, জেলা জাসদের সভাপতি গোলাম মহসীন, হাজী সেলিনুর রহমান। প্রধান আলোচক হিসেবে আলোচনায় অংশ নেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রফেসর ড.সরোয়ার মুর্শেদ রতন, বিশিষ্ট লেখক ও কলামিষ্ট শেখ গিয়াস উদ্দিন আহমেদ মিন্টু। যথাযোগ্য মর্যাদার সাথে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস পালনে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসন দিনব্যাপী নানান কর্মসুচীর আয়োজন করে। সকালে কুষ্টিয়া ষ্টেডিয়ামের এক সংক্ষিপ্ত আলোচনা সমাবেশে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসন মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদানের জন্য বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্বর্ধিত করা হয়। এ সময় সম্বর্ধিত মুক্তিযোদ্ধারা নিজ জন্মভূমিতে সম্বর্ধিত হওয়ায় আবেগ-আপ্লুত হয়ে পড়ে। তারা বলেন, যে জাতি সম্মানীয়দের সম্মান দিতে পারে সে জাতি বিশ্বমন্ডলীর কাছেও সম্মানিত হয়। নিজের মাটিতে এই বিরল সম্মান শুধু আমাদের একার নয়। এটা পুরো কুষ্টিয়াবাসীর সম্মান। আমরা গর্বিত ও চির কৃতজ্ঞ কুষ্টিয়াবাসির কাছে। আলোচনা শেষে রাতে কালেক্টরেটের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার পাদদেশে জেলা শিশু একাডেমি ও শিল্পকলা একাডেমির পরিবেশনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও পুরস্কার বিতরণ করা হয়। এতে বিভিন্ন গণজাগনের ও দেশের গানের তালে তালে নেচেছে জেলা শিশু একাডেমির ক্ষুদে নাচিয়া ও শিল্পী কলা কৌশলীরা। সঙ্গীত পরিবেশন করে জেজলা শিশু একাডেমি ও জেলা শিল্পকলা একাডেমির শিল্পীবৃন্দ সহ বেতার ও টেলিভিশনের শিল্পীবৃন্দ। সঙ্গীত পরিবেশন ও নাচ চলে গভীর রাত পর্যন্ত। পরে জেলা শিশু একাডেমি আয়োজিত বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী বিজয়ীদের হাতে প্রধান অতিথি সহ অন্যান্য অতিথিবৃন্দ পুরস্কার তুলে দেন। অনুষ্ঠানটি  উপস্থাপনা ও সার্বিক পরিচালনা করেন কবি শুকদেব সাহা।



লালন স্বরণোৎসবের সমাপনী, ভেঙ্গেছে সাধুর হাট, ফিরছে যে যার আপন ঘরে

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি ॥ ঘোষনা অনুযায়ী বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহের স্বরণোৎসবের ৫দিনের অনুষ্ঠানমালার সমাপনী দিনে সাধুদের হাট ভেঙ্গে গেছে গতকাল শনিবার। সাধুরা ফিরছে যে যার আপন ঘরে। আজ আখড়া ঘুরে দেখা গেছে, দুর-দূরান্ত থেকে আসা বাউলরা নিজ নিজ আস্তানা ছেড়ে বিছানাপত্র গুছিয়ে রওনা হয়েছে অনেকেই। তবে যাওয়ার আগে আঁখড়া বাড়ির পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে। গুরুকে বারবার প্রনাম ও নানা রকম ভক্তি জানিয়ে বিদায় নেন শিষ্যরা। গুরু ভক্তি আর সিদ্ধ মন নিয়ে বিদায় নেয়ার সময় অনেক বাউল তাদের চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি। আবার দেখা হবে সাঁইজির উদাসী ডাকের টানে। গুরু ইসাহক শাহ জানান, সাঁইয়ের জীবদ্দশায় শুধূমাত্র তার ভক্ত আর শিষ্যদের নিয়ে মুলত আড়াই দিনের উৎসব করতেন। সে নিময় মেনেই বাউলরা ভাটাই আসে উজানে ফিরে যায়, যে যার আপন নিবাসে। প্রকৃত ভেকধারী বাউলরা সরকারি অনুষ্ঠানের ব্যাপারে খোঁজখবরও রাখেনা না। তাদেরকে মঞ্চে ডাকলেও তারা আসন ছেড়ে উঠেন না। গতকাল ভোরে সুর্য্য ওঠার আগেই অহিংস মানবতা প্রতিষ্ঠায় আপন মোকামে গুরুর চরণ ছুয়ে দিক্ষা নিয়ে ভক্তি নিবেদন করে শিষ্যত্ব গ্রহণ করেছে অনেক বাউল। লালন আঁখড়ার আশে পাশে ও একাডেমীর নিচে যারা আসন গাড়ে তারা সাঁইকে ভক্তি আর আরাধনায় নিমগ্ন থাকে কখনো স্থান ত্যাগ করেনা। বিছানাপত্র হাতে নিয়ে কথা বলেন গাজীপুরের বাউল গুর ইসাহক শাহ। প্রায় একযুগ বাড়িতে ফেরেন না তিনি। সংসার ধর্ম টানে না তাকে। বাড়ির কোন খবর রাখেন না। সারা বছর পথেই কেটে যায় এ ফকিরের। তবে মাঝে মধ্যে আসেন সাঁইজির ধামে। মনের তৃষ্ণা মেটাতে। পরিপূর্ণ হৃদয় নিয়ে ফিনের ভবের বাজারে। তবে অনেক বাউল, সাধু আঁখড়া ছাড়লেও অনেকে গুরুর বাড়িতে থেকে যাবেন আরও কদিন। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় সমাপনী দিনে কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক সৈয়দ বেলাল হোসেনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ও বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন খোকসা-কুমারখালি আসনের সাংসদ বেগম সুলতানা তরুণ,কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার মফিজ উদ্দিন আহম্মেদ, জেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক আজগর আলী, খোকসা উপজেলা চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের জাতীয় পরিষদের সদস্য আলহাজ্ব সদর উদ্দিন খান, কুমারখালি উপজেলা চেয়ারম্যান আ’লীগ নেতা আব্দুর রউফ, জেলা আ’লীগের সহ-সভপাতি হাজী রবিউল ইসলাম। প্রধান আলোচক হিসেবে আলোচনা করবেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপচার্য প্রফেসর ড.শাহিনুর রহমান। এবারের স্বরণোৎসবের অনুষ্ঠানে আসা দেশ-বিদেশের লাখ ভক্ত অনুরাগী ও সাধু-গুরুদের চরণ ধূলায় সিক্ত বাউল সম্রাটের ছেঁউড়িয়ার আখড়াবাড়ী। সাঁইজির মতাদর্শের ধর্ম আর জাতি ভেদাভেদ ভুলে মানুষের কল্যাণে মানুষ নিবেদিত থাক চিরকাল এবং মানবতার নিগুড় প্রেমের ভাবধারা বর্তমান সমাজে প্রতিষ্ঠিত করতে ভক্তকুলের অঙ্গীকার। সভ্যতার এই যুগে মানুষ মানুষে হিংসা বিদ্বেশ ভূলে সাঁইজির জাতহীন মানব দর্শনের ‘সত্য বল সুপথে চল ওরে আমার মন’ এই শ্লোগানকে বাস্তবায়নে সদা সত্য ও সঠিক পথে চলে দেশ ও জাতির উন্নয়নে নিজেদেরকে নিয়োজিত রাখতে হবে। মরমী সাধক বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহের অহিংস মানবতা ও ফকিরী মতবাদের জাতহীন মানব দর্শন ও সঙ্গীত দেশের সীমানা পেরিয়ে বিশ্বাঙ্গনে নিজের মহিমায় জায়গা করে নিলেও বাংলা ভাষা ব্যাতিত অন্য কোন ভাষায় প্রকাশ, প্রচার ও প্রসার ঘটেনি তেমন একটা। মানবতা মুক্তি ও ভক্তির পথকে প্রতিষ্ঠা করতেই তিনি হাজারো ভাবধারার গান সৃষ্টি করছেন। কিন্তু তা বিশ্ববাসীকে নাড়া দিতে পারেনি যথার্থ একাডেমিক প্রচার আর প্রকাশনার অভাবে। তিনি অতি কঠিন কথাগুলো খুব সহজ করে তার গানে বলে গেছেন। তাঁর অমর সৃষ্টি সঙ্গীত গতানুগতিক ভাবে প্রচার ও প্রকাশ হলে চলবেনা। বিশ্বের বিশিষ্ট গবেষকেরা লালনের সৃষ্টি আরো নতুন নতুন তথ্য জানতে চাই।

কুষ্টিয়ায় শুরু হয়েছে ৫ দিনব্যাপী লালন সাঁইয়ের ১২৩তম স্মরণোৎসব

এ.এইচ.এম.আরিফ,কুষ্টিয়া ॥ মরমী সাধক বাউল সম্রাট ফকির লালন সাঁই বাঙালির চেতনায় এক অবিস্মরণীয় কালপুরুষ। তাঁর গানের মাঝেই লুকিয়ে আছে সৃষ্টির রহস্য। সৃষ্টিকর্তার সাথে আত্মিক সম্পর্ক তাঁর গানের মূলমন্ত্র। জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল মানুষকে একই স্রোতধারায় আনার জন্য আমরণ কাজ করেছেন এই মরমী সাধক। বাউল সম্রাট ফকির লালন সাঁইয়ের সঙ্গীত আজও আমাদের অনুপ্রানিত করে। এই মহান সাধক বাউল সম্রাট ফকির লালন সাঁইয়ের ১২৩ তম স্মরণোৎসব উপলক্ষ্যে কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়ার আখড়া বাড়ীতে গতকাল মঙ্গলবার ২৬ মাচ থেকে শুরু হয়েছে ৫ দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালা। এবার স্মরণোৎসব আর ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস একই দিনে হওয়ায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কিছুটা পরিবর্তন আনা হয়েছে। ২৬ মার্চ সন্ধ্যা ৭টায় আলোচনা সভা বাদেই সরাসরি সাংস্কৃতি অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়েই শেষ হবে শুরুর দিনের অনুষ্ঠানমালা। তবে দ্বিতীয় দিনে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে থাকছে পূর্নাজ্ঞতা। যথারিতী উদ্বোধনী আলোচনা সভা ও নির্ধারিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সাঁইজীর জীবদ্দশায় তার ভক্ত অনুরাগী শিষ্যরা স্মরণোৎসবের অনুষ্ঠান খুব জাকজমক ভাবে উৎযাপিত করতেন। এবারো তার কোন ব্যতিক্রম হচ্ছে না। স্মরণোৎসবের অনুষ্ঠানকে ঘিরে ইতোমধ্যে লালন একাডেমি ও কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসন নানান উদ্যোগ গ্রহণ সহ সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করেছেন। লালন সাঁইয়ের মাজারের সাজসজ্জা ও ধোয়া-মোছার কাজ শেষ করে সাঁইজীর পছন্দের সাদা ধূসর রং দিয়ে রাঙিয়ে দিয়েছে তাঁর মাজার। স্মরণোৎসবের অনুষ্ঠানে এবার কোন পন্সারের নাম শোনা না গেলেও যথারিতী সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সার্বিক সহযোগিতায় কুষ্টিয়া লালন একাডেমি নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় সম্পন্ন করবে স্মরণোৎসবের অনুষ্ঠান। সত্য সু-পথের সন্ধ্যানে মানবতার দিক্ষা নিতে আত্মার টানে দেশ-বিদেশের সাধু-গুরু ও ভক্তরা দলে দলে আসতে শুরু করেছে সাঁইজির মাজারে। প্রচলিত প্রথা অনুযায়ী প্রতিবার দুই অথবা তিনদিনের এ উৎসব পালিত হলেও গতবারের স্মরণোৎসব থেকে এবং আগত বাউলদের অনুরোধেই তা বাড়িয়ে পাঁচদিনের প্রথা চালু করা হয়েছে। এবারো তার ভিন্নতা নেই। বাউল সম্রাটের ১২৩ তম স্মরণোৎসবের অনুষ্ঠানমালা সাজানো হয়েছে ৫ দিনব্যাপী। মূল উৎসব শুরু হওয়ার ৭-৮ দিন আগ থেকে আখড়ায় আসা বাউল সাধকরা মাজারের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নিয়ে আসন গেড়ে গেয়ে চলেছে সাঁইজির আধ্যাত্মিক মর্মবাণী ও ভেদ তথ্যের গান। জমজমাট এখন লালন শাহের আখড়া বাড়ি। কুষ্টিয়া পরিণত হয়েছে উৎসবের শহরে। সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের সহযোগিতায় ও লালন একাডেমীর আয়োজনে আজ মঙ্গলবার ২৬ মার্চ থেকে শুরু হয়ে একটানা ৩০ মার্চ পর্যন্ত ৫ দিনব্যাপী বাউল সম্রাট সাধক ফকির লালন সাইয়ের ১২৩ তম স্মরণোৎসবের অনুষ্ঠান চলবে। কালী নদী তীরবর্তী লালন মঞ্চের সামনে আয়োজন করা হয়েছে গ্রামীণ মেলার। বিভিন্ন স্টলের পাশাপাশি থাকছে শিশু বিনোদনেরও ব্যবস্থা। অনুষ্ঠানে আগত বাউল সাধুদের গোসলের সুব্যবস্থা করতে ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসক কালী নদীতে একটি সুন্দর ঘাট ও অনুষ্ঠানে বাড়তী আকর্ষণ যোগাতে বাউল সম্রাট মরমী সাধক ফকির লালন শাহের বিশাল আকৃতির মুরাল ও মুর্তি নির্মাণ করেছেন। প্রতিদিন সন্ধ্যায় উন্মুক্ত মঞ্চে বিশিষ্টজনদের মুক্ত আলোচনা শেষে গভীর রাত অবধি চলবে খ্যাতনামা শিল্পীদের পরিবেশনায় লালন সঙ্গীতানুষ্ঠান। সুষ্ঠুভাবে আয়োজন সম্পন্ন করতে নেয়া হয়েছে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা। পুলিশের পাশাপাশি অনুষ্ঠানস্থলে থাকছে র‌্যাব ও সাদা পোষাকে গোয়েন্দা পুলিশ। স্মরণোৎসবের অনুষ্ঠানে আসা দেশ-বিদেশের লাখ ভক্ত অনুরাগী ও সাধু-গুরুদের চরণ ধূলায় সিক্ত হবে বাউল সম্রাটের ছেঁউড়িয়ার আখড়াবাড়ী। সাঁইজির মতাদর্শের ধর্ম আর জাতি ভেদাভেদ ভুলে মানুষের কল্যাণে মানুষ নিবেদিত থাক চিরকাল এবং মানবতার নিগুড় প্রেমের ভাবধারা বর্তমান সমাজে প্রতিষ্ঠিত করতে ভক্তকুলের এই অঙ্গীকার। সভ্যতার এই যুগে মানুষ মানুষে হিংসা বিদ্বেশ ভূলে সাঁইজির ধর্মদর্শনের চিরাচরিত‘সত্য বল সুপথে চল ওরে আমার মন’ ও মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি এই শে¬াগানকে বাস্তবায়নে সদা সত্য ও সঠিক পথে চলে দেশ ও জাতির উন্নয়নে নিজেদেরকে নিয়োজিত রাখতে হবে। উদ্বোধনী দিনে ২৭মার্চ কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক সৈয়দ বেলাল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন কুষ্টিয়া-৪ (খোকসা-কুমারখালী) আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য বেগম সুলতানা তরুন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন কুষ্টিয়া পুলিশ সুপার মফিজ উদ্দিন আহম্মেদ, কুষ্টিয়া জেলা পরিষদের প্রশাসক বীর মুক্তিযোদ্ধা জাহিদ হোসেন জাফর, কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডাঃ ইফতেখার মাহমুদ, ই’বির উপ-রেজিষ্টার শামসুর রহমান বাবু, আলোচক হিসেবে থাকছেন বিশিষ্ট গবেষক ম.মনির-উজ-জামান, স্বাগত বক্তব্য রাখবেন কুমারখালী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখবেন লালন একাডেমির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক মঞ্জু। উলে¬খ্য,বৃটিশ শাসকগোষ্ঠির নির্মম অত্যাচারে গ্রামের সাধারণ মানুষের জীবনকে যখন বিষিয়ে তুলেছিল, ঠিক সেই সময়ই সত্যের পথ ধরে, মানুষ গুরুর দিক্ষা দিতেই সেদিন মানবতার পথ প্রদর্শক হিসাবে বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহ’র আবির্ভাব ঘটে কুমারখালির ছেঁউড়িয়াতে। লালনের জন্মস্থান নিয়ে নানা জনের নানা মত থাকলেও আজো অজানায় রয়ে গেছে তাঁর জন্ম রহস্য। তিনি ছিলেন নিঃসন্তান। আর্থিক অসংগতির কারনে তিনি প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা লাভ করতে পারেননি। তবে তিনি ছিলেন স্ব-শিক্ষায় শিক্ষিত। যৌবনকালে পূর্ণ লাভের জন্য তীর্থ ভ্রমনে বেরিয়ে তার যৌবনের রূপান্তর ও সাধন জীবনে প্রবেশের ঘটনা ঘটে বলে জানা যায়। তীর্থকালে তিনি বসন্ত রোগে আক্রান্ত হলে তার সঙ্গীরা তাকে প্রত্যাখ্যান করে। পরে মলম শাহ’র আশ্রয়ে জীবন ফিরে পাওয়ার পর সাধক সিরাজ সাঁইয়ের সান্নিধ্যে তিনি সাধক ফকিরী লাভ করেন। প্রথমে তিনি কুমারখালির ছেঁউড়িয়া গ্রামের গভীর বনের একটি আমগাছের নীচে সাধনায় নিযুক্ত হন। পরে স্থানীয় কারিকর সম্প্রদায়ের সাহায্য লাভ করেন। লালন ভক্ত মলম শাহ আখড়া তৈরীর জন্য ষোল বিঘা জমি দান করেন। দানকৃত ওই জমিতে ১৮২৩ সালে লালন আখড়া গড়ে ওঠে। প্রথমে সেখানে লালনের বসবাস ও সাধনার জন্য বড় খড়ের ঘর তৈরী করা হয়। সেই ঘরেই তাঁর সাধন-ভজন বসতো। ছেঁউড়িয়ার আঁখড়া স্থাপনের পর থেকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত শিষ্যভক্তদের নিয়ে পরিবৃত থাকতেন। তিনি প্রায় এক হাজার গান রচনা করে গেছেন। ১৮৯০ সালের ১৭ অক্টোবর ভোরে এই মরমী সাধক বাউল সম্রাট দেহত্যাগ করেন এবং তাঁর সাধন-ভজনের ঘরের মধ্যেই তাকে সমাহিত করা হয়। আলোচনা শেষে দ্বিতীয় পর্বে লালন মঞ্চে বিভিন্ন শিল্পি ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সমন্বয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে পরিবেশিত হবে লালন সঙ্গীত। এতে সঙ্গীত পরিবেশন করবেন দেশের খ্যাতনামা শিল্পীবৃন্দসহ লালন একাডেমীর স্থানীয় শিল্পিরা। উৎসবকে ঘিরে পুরো একাডেমি চত্ত্বরে শুরু হয়েছে খন্ড-খন্ড স্থানে গানের আসর। এসব গান শুনে আগত দর্শক-শ্রোতারাও নেচে-গেয়ে গানের সাথে সাথে তাল মিলাচ্ছে। স্মরণোৎসবের ৫দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের সার্বিক উপস্থাপনা ও পরিচালনা করবেন কবি শুকদেব সাহা ও সুমাইয়া খানম ইভা।
 

বুধবার, ১৩ মার্চ, ২০১৩

আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে সূর্যের হাসি ক্লিনিকের আলোচনা সভা

নিজ সংবাদ ॥ আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে পলাশীপাড়া সমাজ কল্যাণ সমিতি পরিচালিত সূর্যের হাসি ক্লিনিক কুষ্টিয়া সদর শাখার আয়োজনে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল বুধবার সকালে শহরের নারিকেলতলায় সূর্যের হাসি ক্লিনিক কুষ্টিয়া সদর শাখা কার্যালয়ে স্বাস্থ্যবান কণ্যাশিশুর প্রতিযোগিতা, নারীর সমান অধিকার বিষয়ে রচনা প্রতিযোগিতা, নারীর তথ্য পাবার অধিকার, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার প্রতিপাদ্য বিষয়ের উপরে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আয়োজকদের বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহনের জন্য শহরের বিভিন্ন এলাকার মায়েরা তাদের ১৮মাসের নিচের কণ্যা শিশুদের নিয়ে আসেন সূর্যের হাসি ক্লিনিক কুষ্টিয়া সদর শাখায়। অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ১২জনকে পুরস্কারে ভূষিত করা হয়। এছাড়াও নারীর সমান অধিকার বিষয়ে রচনা প্রতিযোগিতায় ২০জন ছাত্রী অংশগ্রহণ করে। এদের মধ্যে রাজিয়া সুলতানা ১ম, হাবিবা ইসলাম ২য় এবং নূর জাহান আরা ৩য় স্থান অধিকার করে। সূর্যের হাসি ক্লিনিক কুষ্টিয়া সদর শাখার ম্যানেজার ছানোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে আলোচানা সভায় অংশগ্রহণ করেন হাউজিং বালিকা বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক জালাল উদ্দিন আহমেদ, সূর্যের হাসি ক্লিনিকের এম ও ডাঃ জেবুন নাহার, প্যারামেডিক কামরুন্নাহার প্রমুখ। সভায় বক্তারা নারী-পুরুষের সমান অধিকার ও সূর্যের হাসি ক্লিনিকের সকল সেবা সম্পর্কে আলোচনা করেন। আলোচনা শেষে অতিথিবৃন্দ বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন। অনুষ্ঠানটি সার্বিক পরিচালনা ও উপস্থাপনা করেন সূর্যের হাসি ক্লিনিকের ল্যাব টেকনিশিয়ান আব্দুল লতিফ।  

কুষ্টিয়ায় ভিটামিন এ ক্যাম্পুল খেয়ে ৩১ শিশু হাসপাতালে

আরিফ মেহমুদ ॥ জাতীয় ভিটামিন এ ক্যাপসুল সেবন করে ৩১ শিশু কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সারাদেশের ন্যায় কুষ্টিয়াতেও প্রায় ১ লাখ শিশুকে ভিটামিন এ ক্যাপসুল ও ক্রিমিনাশক ট্যাবলেট পান করানো ও ক্যাম্পেইনের সেবা গ্রহণ করে। ভিটামিন এ ক্যাপসুল ও ক্রিমিনাশক ট্যাবলেট পান করে শিশুরা অসুস্থ্য হয়ে চিকিৎসা নিলেও আতংকিত না হওয়ার জন্য অভিভাবকদের নির্দেশ দিয়েছেন বিশেজ্ঞ চিকিৎসকগণ। হাসপাতালের বিশেজ্ঞ চিকিৎসক ডাঃ জমির উদ্দিন জানান, যারা ফিল্ডে ক্যাম্পেইনের সাথে জড়িত তারা অথবা অভিভাবকরা খেয়াল না করে যাদের ১ লাখ পাওয়ারের ক্যাপসুল দেয়ার কথা সেখানে ২ লাখ পাওয়ারের ক্যাপসুল সেবন করানো হয়। আবার একটি ক্রিমিনাশক খাওয়ানোর পরও মনে না থাকার কারনে পুনরায় আরেকটি ক্রিমিনাশক ট্যাবলেট পান করানো হয়। আবার অনেক সময় দেখা গেছে কোন শিশুর মা তার সন্তানকে ক্যাম্পেইনে এনে সব সেবা গ্রহণ করিয়ে বাসায় নিয়ে আসে। ওই সন্তানের বাবা কিংবা অন্য কেউ না জেনেই ক্যাম্পেইনে যেয়ে তাকে ডবল সেবন করিয়ে নিয়ে আসছে। এ সকল কারনে শিশুরা ওষুধের পাওয়ার সহ্য করতে না পেরে অসুস্থ্য হয়ে পড়ে। রোগীর সাধারণত বমি বমি ভাব, জ্বর, মাথা ঘুরা, মাথা ফুলে যাওয়া, পেটে ব্যাথা, খিচুনীসহ নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। এতে পরিবারের স্বজনদের বিচলিত কিংবা আতঙ্কিত হবার কোন কারন নেয়। কারন ২৪ ঘন্টার মধ্যে কোন শিশুর সমস্যার সমাধান না হলে তাকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে আসতে হবে। হাসপাতাল সুত্রে জানা যায়, গত ২৪ ঘন্টায় ভর্তিকৃত রোগীরা হল-ফারহানা,নাফিজ, ফানিম, কৌশিক, লাম্বিয়া, ফাতেমা, রোহান, তন্ময়, শামীম, আশিক, বোরহান, রনবীর, গংগা, দেব, শুভ, স্মৃতি, আজিত, আবু সায়েম, তানজীর, ফাতেমা, জয়েন্তো, খুশি, সুমি, বর্ষা, নয়ন, সাথী, শফি, সাদিয়া, সিয়াম ও খবির।,

জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভায় সৈয়দ বেলাল হোসেন কুষ্টিয়ার উন্নয়নে ধারাবাহিকতার পরিবর্তন আনতে হবে

আরিফ মেহমুদ ॥কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক সৈয়দ বেলাল হোসেন বলেছেন,সার্বিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে দেশের অন্যান্য জেলার মত কুষ্টিয়া আর পিছিয়ে থাকবে না। কুষ্টিয়ার সার্বিক উন্নয়নে সংশ্লিষ্টদের কাজের প্রতি আরো বেশি আন্তরিক হতে হবে। উন্নয়ন বঞ্চিতের প্রতিচ্ছবি সহ ধারাবাহিকতার পরিবর্তন দেখাতে হবে জেলাবাসীকে। উন্নয়নে পরিবর্তন ধরে রাখতে কঠিনতম সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। জেলার যোগাযোগ খাতেরও উন্নয়ন দ্রুত এগিয়ে নিতে হবে। খুব শীঘ্রই বাইপাস সড়ক নির্মাণের জমি অধিগ্রহণ সম্পন্ন হচ্ছে। জেলার সার্বিক উন্নয়নে অংশীদারীত্বকারী সকল দপ্তর অধিদপ্তর ও সংশি¬ষ্ট প্রতিষ্ঠানের যে কোন অনিয়মের দায়-দায়িত্ব জেলা প্রশাসন নেবে না। উন্নয়নের নামে গ্রহণকৃত প্রকল্পের কাজের উন্নয়ন কিছুই হয়নি এমন অনিয়ম দুর্নীতি বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। জেলার সার্বিক উন্নয়নে ধারাবাহিকতার পরিবর্তন আনতে হবে। গতকাল বুধবার সকালে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসকের সভাকক্ষে জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি আরো বলেন গড়াই নদী খনন প্রকল্পের সাড়ে ৪শত কোটি টাকার কাজে কোন প্রকার অনিয়ম, দূর্নীতি ও অবহেলা সহ্য করা হবেনা। প্রমান পেলেই ব্যবস্থা। তিনি বলেন জেলার একজন কর্মকর্তা তার দায়িত্ববোধ থেকে স্ব স্ব অবস্থান কাজ করলে এদেশ এগিয়ে যাবে। কুষ্টিয়ার সার্বিক উন্নয়নে পরিবর্তন আনতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। সভায় বিগত মাসের প্রতিবেদন তুলে ধরে তাকে সার্বিক সহযোগিতা করেন কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ড.মলি¬¬ক আনোয়ার হোসেন, আরডিসি জাহিদুল ইসলাম, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এস এম জামাল আহমেদ, রাসেল মিয়া ও সৈয়দ আশরাফুজ্জামান। সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কুষ্টিয়া জেলা পরিষদের নবাগত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কেএম রাহাতুল ইসলাম, কুষ্টিয়া সরকারী কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর বদরুদ্দোজা,জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ তরুন কান্তি হালদার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জয়নাল আবেদীন, র‌্যাব কমান্ডিং অফিসার রাশেদ ফিয়াম,কুষ্টিয়া সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলীমূল রাজিব, দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অরুণ কুমার মন্ডল, ভেড়ামারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাজিবুল ইসলাম, মিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আজাদ জাহান,কুমারখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান, খোকসা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোহেল হাসান, দৌলতপুর উপজেলা চেয়ারম্যান হারেজ উদ্দিন খোকসা পৌরসভার মেয়র আনোয়ার আহমেদ খান তাতারী, গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শাহিন মিয়া, সড়ক ও জনপথের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান উদ্দিন আহমেদ, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার নাছিম উদ্দিন আহমেদ, কুষ্টিয়া চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডানিট্রজ’র সহ-সভাপতি এস এম কাদেরী শাকিল. বড়বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মোকারম হোসেন মোয়াজ্জেম,দৌলতপুর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আলী আকবর,ফজিলাতুন্নেছা কুষ্টিয়া সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ইসমাইল হোসেন মুরাদ, জেলা আনসার ভিডিপি কমান্ডার কামাল হোসেন, এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী গোলাম কবির, কুষ্টিয়া পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির জিএম মুখলেছ গনি, কুষ্টিয়া পাসপোর্ট অফিসের উপ-পরিচালক রুস্তম আলী, জেলা পরিসংখ্যান কর্মকর্তা ইফতে খাইরুল করিম, টেলিকমের নির্বাহী প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম, কুষ্টিয়া সুগার মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আজিজুর রহমান, জেলা খাদ্য কর্মকর্তা সুজা আলম, জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের সহকারী পরিদর্শক ওয়াহিদুজ্জামান জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের সহকারী শিক্ষা অফিসার মনজুর ইসলাম, গড়াই নদী পুনরুদ্ধার প্রকল্পের প্রকৌশলী সাইদুর রহমান, জেলা কৃষি কর্মকর্তা লুৎফর রহমান, জনস্বাস্থ্য বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী হাচানুজ্জামান, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম, জেলা মৎস কর্মকর্তা আব্দুল কুদ্দুস আখন্দ, বিআরটিএ’র সহকারী পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম, ইসলামী ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক আব্দুল হামিদ খান,বিসিকের উপ-মহাব্যবস্থাপক সাজ্জাদ হোসেন, জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা হাসিনা বানু, জেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপ পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ডা. জেসমিন আক্তার, তথ্য অফিসার তৌহিদুজ্জামান, উদ্যানের পরিচালক একরামুল হক, বনকর্মকর্তা হুমায়ূন কবির, বাজার মনিটরিং অফিসার রবিউল ইসলাম, জেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা আব্দুল গনি, জেলা সমবায় কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম, জেলা ত্রাণ ও পূনর্বাসন কর্মকর্তা বিশ্বনাথ পাল, জেলা শিশু কর্মকর্তা মখলেছুর রহমান, প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মারুফ হাসান ও মৃত্তিকা কর্মকর্তা ভবানন্দ বসাক প্রমুখ। সভায় গড়াই নদী পুনরুদ্ধার প্রকল্পের প্রকৌশলী সাইদুর রহমানের জবাবে বক্তারা বলেন, গড়াই নদী পুনরুদ্ধার প্রকল্পের নামে জেলার মূল উন্নয়নের সিংহভাগ বরাদ্দের কোটি কোটি টাকা কোন প্রকার কাজ ছাড়াই শুভঙ্করের ফাকি দিয়ে গড়াই নদীর স্রোতে গড়িয়ে যাবে এটা হতে দেয়া হবেন। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বনবিভাগ সহ জনস্বার্থে পরিবেশ রক্ষায় প্রধানমন্ত্রীর নেয়া মহৎ উদ্যোগকে কতিপয় দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তার অযোগ্য কাজের কারনে ভেস্তে যেতে পারেনা। বিষয়টি তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নিতে হবে। কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের প্রাগপুরে স্থল বন্দর নির্মাণে প্রয়োজনীয় উদ্দ্যোগ নেয়া হয়েছে। খুব শীর্ঘ এর কার্যক্রম শুরু হবে। ভারতীয় রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির কুষ্টিয়ার শিলাইদহে সফল সুন্দর ও স্বার্থক সফর সম্পূর্ণ হওয়ায় পুলিশ, র‌্যাব সহ সংশ্লিষ্ট সকল বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরকে সভায় ধন্যবাদ জানানো হয়। 




মঙ্গলবার, ১২ মার্চ, ২০১৩

কুষ্টিয়ায় ঢিলেঢালাভাবে বিএনপি’র হরতাল পালিত

নিজ সংবাদ ॥ কুষ্টিয়ায় ট্রাকে অগ্নিসংযোগ, ককটেল বিস্ফোরণ সহ কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা মধ্য দিয়ে গতকাল মঙ্গলবার সারা দেশের ন্যায় বিএনপি’র ডাকা সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ঢিলেঢালাভাবে পালিত হয়েছে। সকাল থেকেই বিএনপি, ছাত্রদল,যুবদল, সেচ্ছাসেবকদল সহ বিএনপি ও তার অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা শহরের বিভিন্ন জনগুরুত্বপূর্ণ মোড়ে অবস্থান নেয় এবং আতঙ্ক ছড়াতে ভোরে কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়কের ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানার শান্তিডাঙ্গায় একটি ট্রাকে আগুন ধরিয়ে দেয় হরতাল সর্মথকরা। যশোর-ট ১১-২৬৮৫ নং  ট্রাকটি কুষ্টিয়া থেকে যশোর যাওয়ার সময় পিকেটাররা এই ট্রাকটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক এমপি সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রূমীর নেতৃত্বে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯ টায় কুষ্টিয়া শহরের প্রধান সড়ক এনএস রোডে হরতালের সমর্থনে মিছিল বের করে বিএনপি। এ সময় পিকেটিংকারীরা সড়কের উপর টায়ারে অগ্নিসংযোগ করে। পরে পুলিশ আসলে পিকেটাররা পালিয়ে যায়। এদিকে আতংক ছড়াতে কুষ্টিয়া ইসলামী কলেজের সামনে, কাটাইখানা মোড়ে, ত্রিমোহনী মোড়সহ বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে ককটেল বোমার বিস্ফোরণ ঘটায় পিকেটাররা। এর আগে কেন্দ্রীয়ভাবে হরতালের ডাক দেওয়ার পর সোমবার সন্ধ্যায় কুষ্টিয়ায় জেলা বিএনপি হরতালের সমর্থনে মিছিলের চেষ্টা করলে পুলিশ তাতে বাধা দেয়। এদিকে বিএনপি’র ডাকা সকাল-সন্ধ্যা হরতালে কুষ্টিয়াবাসীর জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত ও আইনশৃংখলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ রাখতে এবং হরতালের পিকেটারদের ধবংসাত্বক কার্যকলাপ প্রতিরোধ করতে পুলিশ সকাল থেকেই শহরের বিভিন্ন মোড়ে অবস্থান নেয়। সকাল থেকেই কুষ্টিয়ার প্রধান এন এস রোডসহ শহরতলীর বিভিন্ন সড়কে রিকশা, অটোরিকশা ও অভ্যন্তরীণ রুটের বাস চলতে দেখা গেছে। ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক থাকলেও দুরপাল¬ার কোন বাস ছেড়ে যায়নি কুষ্টিয়া কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে। সরকারি প্রতিষ্ঠানের মতো বেসরকারি ব্যাংক বীমাসহ সব প্রতিষ্ঠানেও স্বাভাবিক কাজ কর্ম চলেছে। তবে জেলা শহরের আইনশৃংখলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও জননিরাপত্তা নিশ্চিত এবং হরতালে জামায়াত-শিবির কর্মীদের পিকেটিং ও ধবংসাত্বক কার্যকলাপ প্রতিরোধ করতে পুলিশ-র‌্যাব খুব সকাল থেকেই শহরের বিভিন্ন মোড়ে সতর্ক অবস্থান নেয়। হরতালের কারনে সকালে কুষ্টিয়া জেলা শহরে বিভিন্ন অফিস আদালতে আসতে জনসাধারণ ও চাকুরীরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কিছুটা সমস্যা দেখা দিলেও তা ছিল ক্ষনিকের। কুষ্টিয়া কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে দূরপাল্লার কোন বাস না ছাড়লেও কোন বাধা ছাড়াই অভ্যন্তরিন রুটে রিকশা, অটোরিকশা চলাচলা করেছে সারাদিনই। নছিমন, অটোবাইক ও বেবিটেক্সি অবাধে চলাচল করেছে। তবে চৌড়হাসের কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল ছিল জনশূন্য থমথমে অবস্থা। অফিস-আদালত আংশিক খোলা ছিল, কাজ চলেছে স্বাভাবিক গতিতেই। কুষ্টিয়া কোর্টের বিচার কাজ চলেছে স্বাভাবিক গতিতেই বিচার প্রার্থীদের উপস্থিতিও ছিল অন্যান্য দিনের মতই। হরতাল চলাকালীন সময় এ রকম চিত্রই দেখা গেছে কুষ্টিয়া শহরের বিভিন্ন জনবহুল বাজার ও গুরুত্বপূর্ন মোড়গুলোতে। তবে আইনশৃংখলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সকাল থেকেই শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতে পুলিশ মোতায়েন ছিল। জেলার উপজেলাগুলোতেও শান্তিপুর্ন পরিবেশে হরতাল পালিত হয়েছে। 


বই মেলার প্রস্তুতি সভায় ডিসি-দেশকে এগিয়ে নিতে জ্ঞান চর্চ্চার কোন বিকল্প নাই

আরিফ মেহমুদ ॥ কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক সৈয়দ বেলাল হোসেন বলেছেন, আমরা অর্থের পেছনে দৌড়াতে যেয়ে নিজেদের প্রজন্মকে প্রকৃত শিক্ষা থেকে দুরে সরিয়ে রাখছি। আমাদের আগামী প্রজন্মকে সু-শিক্ষায় শিক্ষিত করতে পারলে আমাদের সামগ্রিক উন্নয়ন সম্ভব। দেশকে এগিয়ে নিতে হলে আগে দরকার জ্ঞান চর্চ্চার কিন্তু সে অনুযায়ী মানসম্মত শিক্ষার যথেষ্ট অভাব রয়েছে। প্রজন্মের কাছে জাতির সঠিক ইতিহাস তুলে ধরতে হবে। জাতি সঠিক ইতিহাসের অভাবে আজো ভুল পথেই হাটছেন। স্বাধীনতার দীর্ঘ পথ পরিক্রমার পরও আমাদের দেশ প্রেম আর সার্ভমৌত্ব নিয়ে নানান পতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে। একারনে বই একমাত্র মাধ্যম যা শুধু এদেশই নয় সমগ্র পৃথিবীর সঠিক ইতহাসের স্বাক্ষ্য বহন করে। যে জাতি যত বেশি শিক্ষিত সে জাতি তত আধুনিক ও উন্নত। বর্তমান এগিয়ে যাওয়ার সময় এসেছে। আর জানি না, বুঝি না এমন অজুহাতে পিছিয়ে থাকা চলবে না। বই মেলার মাধ্যমে আগামী প্রজন্মের কাছে সকল ভূল ভ্রান্তির উর্ধে থেকে জাতির সঠিক ইতিহাস সমৃদ্ধ প্রকাশনা তুলে ধরতে হবে। গতকাল মঙ্গলবার সকালে জেলা প্রশাসকের সভাকক্ষে জাতীয় গ্রন্থমেলা উপলক্ষে জেলা বই মেলার প্রস্তুতি সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় বিগত জাতীয় গ্রন্থমেলা ও জেলা বই মেলার বিস্তারিত তুলে ধরে সহযোগিতা করেন কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট ড.মলি¬ক আনোয়ার হোসেন, অতিরিক্তি জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ড. মোল¬া মাহমুদ হাসান, এনডিসি ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট উত্তম কুমার রায়, ম্যাজিট্টেট রাসেল মিয়া ও সৈয়দ আশরাফুজ্জামান। এসময় অন্যানোদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি খন্দকার জুলফিকার আলী আরজু,কুষ্টিয়া সরকারী মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড.জমির উদ্দিন, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের প্রতিনিধি, জেলা শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা মখলেছুর রহমান, জেলা তথ্য অফিসার তৌহিদুজ্জামান, কবি দরবেশ হাফিজ, জেলা শিক্ষা অফিসের সহকারী পরিদর্শক ওয়াহিদুজ্জামান, সমাজ সেবা অফিসের প্রতিনিধি, মাসউদ রুমী কলেজের অধ্যক্ষ সজল চৌধুরী, এডাব কুষ্টিয়া চেপ্টারের কো-অর্ডিনেটর আনোয়ার হোসেন বুলবুল, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক আব্দুল হামিদ খান, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইলিয়াস হোসেন, মীর মোশারফ হোসেন বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মনোয়ারা সুলতানা, ব্রাক প্রতিনিধি মোতাহার হোসেন, সিরাজুল ইসলামসহ বিভিন্ন এনজিও ও লাইব্রেরী প্রতিনিধিবৃন্দ। সভায় উপস্থিত সকলকে মুল কমিটির সদস্য ও বই মেলাকে স্বার্থক ও সুন্দর করার জন্য বিভিন্ন উপ-কমিটি গঠন করা হয়। বই মেলা উপলক্ষে সকাল ১০টায় জেলা শিল্পকলা একাডেমি হতে একটি বর্ণাঢ্য র‌্যালী বের করা হবে। পরে পাবলিক লাইব্রেরী মাঠে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে। বই মেলা আগামী ১৭ মার্চ পাবলিক লাইব্রেরী মাঠে শুরু হয়ে ১৯ মার্চ পর্যন্ত চলবে বলে সভায় সিন্ধান্ত নেওয়া হয়। এবারের বই মেলায় সরকারের ভাবমূর্তী ক্ষুন্ন হয় এমন ও স্বাধীনতা বিরোধী কোন প্রকাশনার বই কিংবা কোন স্টল থাকবে না। প্রতিদিন সকাল ১০ টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত মেলার সকল স্টল খোলা থাকবে।



কুষ্টিয়ায় এসএসসি পরীক্ষার্থীর রহস্যজনক মৃত্যু

আরিফ মেহমুদ ॥ কুষ্টিয়ায় শহরের থানাপাড়া জিকে ঘাট এলাকায় এসএস পরীক্ষার্থী এক তরুণীর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। সোমবার রাত ৯ টার দিকে কুষ্টিয়া মডেল থানা পুলিশ নিজ বাড়ির ঘরের আঁড়ার সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় তানিয়া রহমান মৌ (১৬) নামের ওই তরুণীর লাশ উদ্ধার করে। তানিয়া এ বছর কুষ্টিয়া জিকে হাই স্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করছিল। ঘটনার দিনই তার পরীক্ষা শেষ হয়েছিল। তানিয়া শহরের থানাপাড়া শহীদ তিতুমীর সড়কের জিকে ঘাট বস্তি এলাকার মাছ ব্যবসায়ী মজিবর রহমানের কন্যা। দুই বোন এক ভায়ের মধ্যে সে সবার ছোট ছিল। তানিয়ার মা জিনিয়া জানান, সোমবার সন্ধ্যায় তিনি মেয়েকে মোবাইলে কথা বলার জন্য রাগারাগি করেন। রাত ৮ টার দিকে বাসায় কেউ না থাকায় তানিয়াকে একটি রুমের মধ্যে বাইরে থেকে তালা লাগিয়ে মা জিনিয়া ছাত্রাবাসের রাতের খাবার দিতে যান। একঘন্টা পর রাত ৯ টার দিকে তিনি বাসায় ফিরে ঘরের আঁড়ার সাথে মেয়ের ঝুলন্ত লাশ দেখতে পান। খবর পেয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানার এসআই ফেরদৌস সঙ্গীয় ফোর্সসহ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করেন। আজ মঙ্গলবার দুপুরে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। তবে তানিয়ার মৃত্যু এখনো রহস্যাবৃত। তানিয়া আত্মহত্যা করেছে নাকি তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে মানবাধিকার কর্মীরা সরেজমিন যেয়ে তানিয়ার লাশ দেখে নিশ্চিত হন যে তাকে ধর্ষনের পর গলায় রশি দিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এব্যাপারে কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সিকদার মশিউর রহমান জানান, লাশের অবস্থা পর্যাবেক্ষণ করে বোঝা গেছে এটি শুধুই আত্মহত্যা নয়, ধর্ষণের কিছু আলামত দেহে মেখে রয়েছে। এদিকে এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, বিবাহিত সন্তানের জনক আইনুল নামের এক যুবকের সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এই প্রেমের কারণেও সে আত্মহত্যা করতে পারে বলে এলাকাবাসীর ধারণা।

সোমবার, ১১ মার্চ, ২০১৩

টাস্কফোর্সের সভায় ডিসি-ধুমপানের কুফল সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করতে হবে

আরিফ মেহমুদ ॥ কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক সৈয়দ বেলাল হোসেন বলেছেন, ধুমপান বিষ পান, ধুমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর এধরনের স্লোগানের ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা থাকলেও ধুমপায়ীদের সংখ্যা তেমন একটা কমেনি। প্রতিনিয়তই ধুমপানের প্রভাব পড়ছে জনস্বাস্থ্যের উপর। প্রকাশ্যে ধুমপানের জন্য জরিমানার ব্যবস্থা বিদ্যমান থাকা সত্বেও এর ক্ষতিকর প্রভাব চলছেই। ধুমপান বন্ধে গঠিত জেলা টাস্কফোর্সকে আরো সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে। জেলার বিভিন্ন হাট-বাজারের দোকানে টাঙ্গানো সাইনবোর্ড উচ্ছেদ করে ধুমপানের কুফল সম্পর্কে সাধারণ জনগণকে সচেতন করে তুলতে ব্যাপক উদ্দ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। তামাকজাত দ্রব্য তৈরীর কারখানার মালিকদের স্বাস্থ্য বিধি মেনে নিয়োজিত শ্রমিকদের কাজে নিয়োগ দিতে হবে। বিশেষ করে শিশু ও গর্ভবতী মায়েদের এধরনের কাজ থেকে বিরত রাখার জন্য তিনি তামাকজাত দ্রব্য তৈরীর কারখানার মালিকদের প্রতি আহবান জানান। গতকাল সোমবার সকালে জেলা প্রশাসকের সভাকক্ষে ধুমপান ও তামাকজাতদ্রব্য নিয়ন্ত্রণে জেলা টাস্কফোর্স কমিটির ত্রৈমাসিক সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সিভিল সার্জন ডাঃ তরুণ কান্তি হালদার, জেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ জেসমিন আখতার, জেলা সমাজ সেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আব্দুল গণি,জেলা শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা মখলেছুর রহমান, কুষ্টিয়া পৌরসভার মহিলা কাউন্সিলর রীনা নাসরিন, জেলা শিক্ষা অফিসের সহকারী পরিদর্শক ওয়াহিদুজ্জামান, জেলা কৃষি সম্প্রসারনের প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম, জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা হাসিনা বেগম, এইড’র প্রোগ্রাম অফিসার মিজান পারভেজ, নিকুসিমাজের নির্বাহী পরিচালক সালমা সুলতানা, সাফের নির্বাহী পরিচালক মীর আব্দুর রাজ্জাক ও মহিলা উন্নয়ন সমিতির সভানেত্রী নিলুফা আকতার নাসরিন প্রমুখ।  

কুষ্টিয়ায় নকল ফেন্সিডিলের কারখানা আবিস্কার আটক-২

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি ॥ কুষ্টিয়ায় পুলিশ নকল ফেন্সিডিলের কারাখানা আবিস্কার করেছে। গতকাল সোমবার দুপুরে পুলিশ সেখান থেকে বিপুল পরিমান মাদকদ্রব্যসহ ২জনকে আটক করেছে। আটককৃতরা হল-মাদক ব্যবসায়ী-শহরের আড়–য়াপাড়া এলাকার শাহাজাহান আলীর ছেলে টিটু (২৮) ও আলমডাঙ্গার কুতুবপুর এলাকার চান্দু মালিথার ছেলে শাহিরুর রহমান শাহিন (৩১)। পুলিশ এ সময় সাড়ে ৩শ বোতল ফেন্সিডিল, ৯৭ পিচ ফেন্সিডিলের বোতলের কর্ক, ৫লিটার তরল ফেন্সিডিল, তরল ¯িপ্রট, নকল ফেন্সিডিল তৈরির কেমিক্যাল ও ফেন্সিডিল বহনের মটরসাইকেল উদ্ধার করে। সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে হাজির হন কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জয়নূল আবেদীন, পুলিশ লাইনের আরআই রকিব উদ্দিনসহ পুলিশের কর্মকর্তাবৃন্দ। পুলিশ জানায়, গতকাল সকালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মডেল থানা পুলিশ জানতে পারে শহরের হাউজিং ডি ব¬কের ১৫৩ নং শাহানাজ ভিলায় মাদক বেচাকেনা হচ্ছে। এমন সংবাদের ভিত্তিতে মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মশিউর রহমানের নেতৃত্বে ওসি তদন্ত শাহ আলম, এসআই নওশাদ, মঞ্জুরুল ইসলাম, হাউজিং ক্যাম্প ইনচার্জ এএসআই দিদার সঙ্গীয় ফোর্সসহ হাউজিং ডি ব¬কের ১৫৩ নং শাহানাজ ভিলায় অভিযান চালায়। পুলিশ শাহানাজ ভিলার নিচ তলায় তল¬াশী চালিয়ে সাড়ে ৩শ বোতল ফেন্সিডিল, ৯৭ পিচ বোতলের মুখটি, ৫ লিটার তরল ফেন্সিডিল, তরল ¯িপ্রট, নকল ফেন্সিডিল তৈরির পাউডার, ফেন্সিডিল বহনের মটরসাইকেল উদ্ধার করে। তবে পুলিশের ধারণা বাড়ির মালিক ডাঃ হামিদুজ্জামানের যোগসাজসে সেখানে ফেন্সিডিল বেচা-কেনা ও তৈরি হতে পারে বলে সন্দেহ করছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জয়নূল আবেদীন জানান, কুষ্টিয়াকে মাদক মুক্ত করতে জেলা পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে। তবে শহর গুলোকে মাদক মুক্ত করতে বিশেষ অভিযানের প্রস্ততি চলছে। এলাকাবাসী জানায়, কুষ্টিয়াকে মাদক মুক্ত করতে হলে আগে পুলিশকে সঠিক হতে হবে। অনেক অসাধু পুলিশ অফিসারের যোগসাজসে শহরের অলিগলিতে মাদক ভরপুর হয়ে পড়ছে। তবে ঘটনা যাইহোক শহরের বাসার মালিক সচেতন হলে কুষ্টিয়ায় কোন মাদক থাকতো না।

রবিবার, ১০ মার্চ, ২০১৩

কুষ্টিয়ায় পাবনার ইউপি চেয়ারম্যানের লাশ উদ্ধার,কাল হরতাল

আরিফ মেহমুদ ॥ কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা লালন শাহ সেতুর নিকট পদ্মা নদীর পাড় থেকে ইব্রাহীম আলী মৃধা (৪৫) নামের পাবনার বিএনপি এক নেতার লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত ইব্রাহীম আলী মৃধা পাবনা সদর উপজেলার গয়েশপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদর উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি। ভেড়ামারা থানার পুলিশ আজ রবিবার সকালে লাশটি উদ্ধার করে।
ইউপি চেয়ারম্যানের নিহতের ঘটনার প্রতিবাদে কাল সোমবার পাবনায় সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ডাক দিয়েছে পাবনা জেলা বিএনপি। পাবনা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান মুঠোফোনে হরতালের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। পাবনা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান বলেন, দুই দিন আগে ইব্রাহীম নিখোঁজ হন। তিনি দাবি করেন, ইব্রাহীম এলাকায় জনপ্রিয় চেয়ারম্যান ছিলেন। তাঁকে ধরতে র‌্যাব-পুলিশ কয়েকবার তাঁর বাড়িতে অভিযান চালায়। হত্যাকান্ডের বিষয়ে পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)কাজী হানিফুল ইসলাম বলেন, ইব্রাহীমের বিরুদ্ধে সদর থানায় বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে। ভেড়ামারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)রিয়াজুল ইসলাম জানান, স্থানীয়রা গতকাল সকালে লালন শাহ সেতুর পাশে পদ্মা নদীর পাড়ে একটি লাশ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশকে খবর দেয়। ভেড়ামারা থানার পুলিশ সকাল ৯টার দিকে লাশটি উদ্ধার করে। খবর পেয়ে স্বজনেরা থানায় এসে লাশটি ইউপি চেয়ারম্যান ইব্রাহীমের বলে শনাক্ত করেন। তাঁকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা  হয়েছে বলে পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে। ময়নাতদন্তের জন্য ইব্রাহীমের লাশ কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

শনিবার, ৯ মার্চ, ২০১৩

মসজিদের পবিত্রতা ও দেশের সম্প্রীতি রক্ষা মুসলমানদের ঈমানী দায়িত্ব- ডিসি

আরিফ মেহমুদ ॥ কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক সৈয়দ বেলাল হোসেন বলেছেন, ইসলাম ধর্মই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও দেশের শান্তি রক্ষায় একমাত্র কল্যাণের পথ। মসজিদের পবিত্রতা যারা রক্ষা করতে পারে না তারা নামেই মুসলমান। প্রকৃত মুসলমানরা কখনো ধর্ম নিয়ে ছিনিমিনে খেলে না। মসজিদ পবিত্র স্থান। আর এ পবিত্রতা রক্ষা করা প্রতিটি মুসলমানের ঈমানী দায়িত্ব। ধর্মের অজুহাত ও মসজিদে বসে মিথ্যা গুজব ছড়িয়ে যাতে সমাজের শান্তি নষ্ট করতে না পারে সেদিকে লক্ষ্য রেখে ইমামগণযে যার অবস্থান থেকে মুসলমানদের আহবান জানাবেন। দেশে ইসলামের নামে ষড়যন্ত্র চলছে। আসুন, আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ হয় কোন ষড়যন্ত্রই যেন আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশের শান্তি, স্থিতি ও ইসলামের সমুন্নত ভাবমর্যাদা বিনষ্ট করতে না পারে। প্রকৃত মুসলমানরা জঙ্গীবাদ, সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জড়িত থাকে না। তিনি ইমামদের উদ্যেশে বলেন, আপনাদের উপর দেশের সাধারণ জনগণের অনেক আস্থা ও বিশ্বাস। আর এ আস্থা ও বিশ্বাসের সুযোগে দেশে কোন অপ্রতিকর অবস্থা সৃষ্টি করবে না। তিনি সাধারণ জনগণকে সব ধরণের গুজব থেকে সজাগ থাকার আহবান জানান। গতকাল শনিবার সকালে জেলা পরিষদের আব্দুল জব্বার মিলনায়তনে ইসলামিক ফাউন্ডেশন কুষ্টিয়ার আয়োজনে কুষ্টিয়ায় মসজিদের পবিত্রতা রক্ষা, জঙ্গীবাদ, সন্ত্রাস প্রতিরোধে উলামা মাশায়েকগণের সমাবেশ, প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ইমামদের ও ইমাম-মোয়াজ্জিন কল্যাণ ট্রাষ্টের জেলা সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি আরো বলেন, ইসলামের প্রচার ও প্রসারের উদ্দেশ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ইসলামিক ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেন। ইসলামের খেদমতে তার অবদানের কথা উলে¬খ করে তিনি আরও বলেন বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও ইসলামের খেদমতে নিবেদিত হয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি ৬৪৩ কোটি টাকা ব্যয়ে মসজিদ ভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রমে ৩৮ হাজার আলেমের কর্মসংস্থানসহ উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছেন। সম্মেলনে ইসলামিক ফাউন্ডেশন কুষ্টিয়ার উপ-পরিচালক আব্দুল হামিদ খানের সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার মফিজ উদ্দিন আহম্মেদ, প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ইমাম সমিতি কুষ্টিয়া জেলা শাখার সভাপতি অধ্যক্ষ আ ফ ম নাজমুস সালেহীন, জেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক আজগর আলী, জেলা আ’লীগের সহ-সভাপতি হাজী রবিউল ইসলাম প্রমুখ। সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে বড়জামে মসজিদের ইমাম ইয়াকুব আলী, আমলাপাড়া সোনাপট্টি জামে মসজিদের ইমাম হাফিজ উদ্দিন,বড়বাজার জামে মসজিদের ইমাম আলহাজ্ব মাওলানা রফিকুল ইসলাম,ইমাম তরিকুল ইসলাম, ইমাম শরিফুল ইসলামসহ বিভিন্ন মসজিদের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ইমাম ও মোয়াজ্জিনগণ উপস্থিত ছিলেন।

শুক্রবার, ৮ মার্চ, ২০১৩

নারীর অধিকার নিশ্চিত করতে সহায়তা করুন

আরিফ মেহমুদ ॥ কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট ড.মল্লিক আনোয়ার হোসেন বলেছেন, নারী শিক্ষার প্রসার ছাড়া নারী সমাজের ক্ষমতায়ন ও অধিকার নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। পৃথিবীতে যা কিছু চিরকল্যাণকর অর্ধেক তার গড়েছে নারী অর্ধেক তার নর। আমাদের দেশে বর্তমানে এমন কোন সেক্টর নেই যেখানে নারী অংশগ্রহণ নাই। নারী সমাজ দেশের মূল জনগোষ্ঠির একটি বিরাট অংশ। সেই মূল জনগোষ্ঠিকে বাদ দিয়ে দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়। কেবল আইন করে নারীর অধিকার নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। এ জন্য নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। পুরুষের পাশাপাশি নারীদের সকল কাজে যোগদানের সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। জাতি গঠনের সকল কর্মকাণ্ডে নারীর সমান অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে সব শ্রেণী পেশার মানুষের সহযোগিতা করতে হবে। দারিদ্র ও ক্ষুধামুক্ত দেশ গড়তে সকল কর্মকাণ্ডে নারীর সমান অধিকার প্রয়োজন। নারী অধিকার প্রতিষ্ঠায় প্রত্যেক পুরুষ ও নারীকে এগিয়ে আসতে হবে। গতকাল শুক্রবার সকালে জেলা পরিষদের আব্দুল জববার মিলনায়তনে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসন ও মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের আয়োজনে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদযাপন উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বিশ্বের নারী দিবস উদযাপনের প্রধান লক্ষ্য এক এক রকম। কোথাও নারীর প্রতি সাধারণ সম্মান ও শ্রদ্ধা মুখ্য বিষয় হয়, আবার কোথাও নারীদের আর্থিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রতিষ্ঠা বেশি গুরুত্ব পায়। তথ্য পাওয়ার ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে এবার আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালন করছে বাংলাদেশ সরকার। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে,‘নারীর তথ্য পাওয়ার অধিকার, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার’। এসব স্লোগান বাস্তবায়নের অঙ্গীকারের মধ্য দিয়ে কুষ্টিয়ায় নানা আয়োজনে দিবসটি পালিত হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসন ও মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের আয়োজনে ওয়েভ ফাউন্ডেশন, নিকুশিমাজ মহিলা কল্যাণ সংস্থা, দাবিক, মুক্তি নারী ও শিশু উন্নয়ন সংস্থা, ব্রাক, দিশা, মহিলা উন্নয়ন সংস্থা কুষ্টিয়া জেলা শাখা, ফেয়ার, তৃষ্ণা, জাগরণী চক্র,সেতু, সরকার ফাউন্ডেশন এডাব ও আলোর দিশা সংস্থার সহযোগীতায় সকাল ১০টায় কুষ্টিয়া পৌরসভা বিজয় উল্ল¬াস চত্বর থেকে বর্ণাঢ্য র‌্যালী বের করে। র‌্যালীটি শহরের প্রধান এন এস রোড প্রদক্ষিণ শেষে জেলা পরিষদের আলোচনা সভায় এসে শেষ হয়। কুষ্টিয়া মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা হাসিনা বেগমের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, জেলা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মুর্শেদ আলম, এডাব কুষ্টিয়ার সহ-সভাপতি ও নিকুশিমাজ মহিলা কল্যাণ সংস্থার নির্বাহী পরিচালক ও সভানেত্রী সালমা সুলতানা। সভায় বক্তব্য রাখেন সফল নারী উদ্দ্যোক্তা এলাচী বেগম, ব্রাক প্রতিনিধি মোতাহার হোসেন, এলজিএডি প্রতিনিধি হাবিবুর রহমান, এডাব কো-অর্ডিনেটর আনোয়ার হোসেন বুলবুল,ওয়েভ ফাউন্ডেশনের প্রতিনিধি ফিরোজ আহমেদ, মহিলা উন্নয়ন সমিতি সভানেত্রী নিলুফা আক্তার নাসরিন, তৃষ্ণা প্রতিবন্ধি নারী পরিষদের প্রতিনিধি প্রীতি খাতুন। প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে আরো বলেন, নারীদের মানসিকতা বিকাশ ও তথ্য জানার জন্য সর্ব প্রথম শিক্ষার প্রয়োজন। তাই সমাজের সর্বস্তর থেকে নারী শিক্ষার প্রতি এগিয়ে আসতে হবে। তবেই দেশকে উন্নয়নের চরম শিখরে পৌছে দিতে পারব। তথ্য পাওয়ার অধিকার ছাড়াও নারীর ক্ষমতায়ন, প্রশাসনে নারীদের অংশীদারিত্ব বৃদ্ধি ও পারিবারিক সহিংসতা রোধে আইনি পদক্ষেপ সম্পর্কে সচেতন করা হবে নারীদের। বাংলাদেশে নারী উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। যা অনেক উন্নত দেশেও দেখা যায় না। যদিও নারী উন্নয়ন ও ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে অর্জিত সাফল্য উন্নত বিশ্বের সমান নয়, কিন্তু এ ক্ষেত্রে আমাদের অর্জন অনেক উন্নত দেশের চেয়ে কম নয়। আলোচনা শেষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। এতে স্থানীয় শিল্পীরা সঙ্গীত পরিবশেন করেন। অনুষ্ঠানটি সার্বিক উপস্থাপনা ও পরিচালনা করে জেলা মহিলা অধিদপ্তরের প্রোগাম অফিসার মর্জিনা খাতুন। 

বৃহস্পতিবার, ৭ মার্চ, ২০১৩

আইনশৃংখলা সভায় সৈয়দ বেলাল হোসেন স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তিকে প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেয়া হবে


 আরিফ মেহমুদ ॥ কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক সৈয়দ বেলাল হোসেন বলেছেন, স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি সাধারণ মানুষের ধর্মভীরুতাকে পুজি করে সমাজে নানান বিভ্রান্তিকর বিশংখলা সৃষ্টি করছে। তারা দেশে ইসলাম রক্ষার নামে ষড়যন্ত্র করে মিথ্যা গুজব রটিয়ে ধর্মীয় উম্মাদনা সৃষ্টি করে নিজেদের মহান বানানোর চেষ্টা চালাচ্ছে। মিথ্যা গুজবে কান না দিয়ে নিজেদেরকে তাদের গতিবিধি প্রতিরোধে বুঝে শুনে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এদেশ আমার আপনার সবার। দেশ রক্ষায় ঐক্যবদ্ধভাবে তাদের মোকাবেলা করার উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। ধমীয় উম্মাদনা সৃষ্টিকারী অপতৎপরতাকে মোকাবেলা করতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। এদের প্রতিরোধে প্রয়োজনে পাড়ায় পাড়ায় সন্ত্রাস প্রতিরোধ কমিটি গঠন করেত হবে। যাতে কোন ভাবেই স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তিরা মিথ্যা কথা বলে সমাজের শান্তি প্রিয় সাধারণ মানুষকে পথে নামাতে না পারে।  সমাজ থাকলে কমবেশি অপরাধ থাকবে। সেই অপরাধ যেন সর্বক্ষেত্রে তার বিস্তার ঘটাতে না পারে সেদিকে লক্ষ্য রেখে আইনশৃংখলা রক্ষায় নিয়োজিত পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবি সহ সংশ্লিষ্ট বাহিনীকে এর মধ্য দিয়েই এগিয়ে যেতে হবে। ঘটনা যতই নির্মম হোক না কেন আইনশৃংখলা পরিস্থিতি বিঘœকারী, সন্ত্রাসী, চরমপন্থী সহ সকল অপরাধী সে যে দলের কিংবা যতই শক্তিশালি হোক না কেন তাদেরকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে। ঘটনা নিয়ন্ত্রণ করতে নিয়ন্ত্রণকারীরা কি ব্যবস্থা নিলেন তার সচ্ছ প্রতিচ্ছবি গণমাধ্যমে সঠিক ভাবে উঠে আসলে বাহিনীর সদস্যরা কাজ করতে উৎসাহী হয়ে উঠবে। জেলার আইনশৃংখলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ এবং সন্ত্রাস জঙ্গীবাদ নির্মুলে ও মিথ্যা গুজব রটনাকারী অপশক্তিকে প্রতিরোধ করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। দু’একটি বিছিন্ন ঘটনা ছাড়া জেলাবাসী বর্তমানে একটা ভাল সময় পার করছে। বিগত যে কোন সময়ের চেয়ে বর্তমানে জেলার আইনশৃংখলা পরিস্থিতি অনেক ভাল এবং নিয়ন্ত্রিত রয়েছে। আইনশৃংখলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি সহ অন্যান্য আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী আগের চেয়ে আরো সক্রিয় ভূমিকা রাখবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসকের সভাকক্ষে জেলা আইনশৃংখলা কমিটির সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। প্রজেক্টরের মাধ্যমে বিগত মাসের প্রতিবেদন তুলে ধরেন কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট ড.মল্লিক আনোয়ার হোসেন। তাকে সার্বিক সহযোগিতা করেন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও আরডিসি জাহিদুল ইসলাম, এস এম জামাল আহমেদ, সৈয়দ আশরাফুজ্জামান ও মোহাম্মদ রাসেল মিয়া। সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার মফিজ উদ্দিন আহম্মেদ, কুষ্টিয়া সরকারী মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড.জমির উদ্দিন, কুষ্টিয়া সরকারী কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর বদরুদ্দোজা, জেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক আজগর আলী, সহ-সভাপতি হাজী রবিউল ইসলাম, বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ আব্দুল বারী জোয়াদ্দার, র‌্যাব কমান্ডিং অফিসার রাশেদ ফিয়াম, জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক নিভারানী পাঠক, ৩২ বিজিবি’র প্রতিনিধি সুবেদার সাখাওয়াত হোসেন, কুষ্টিয়ার জেল সুপার নুরুল ইসলাম, জেলা তথ্য কর্মকর্তা তৌহিদুজ্জামান, জেলা শিক্ষা অফিসার নিখিল রঞ্জন চক্রবর্তী, প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুল আলীম, কুষ্টিয়া চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডানিট্রজ’র সহ-সভাপতি এসএম কাদেরী শাকিল. বড় বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন মোকাররম, জেলা বাস-মিনিবাস মালিক গ্র“পের সিনিয়র সহ-সভাপতি আকিল উদ্দিন আহমেদ, এ্যাড.আব্দুল্ল¬াহেল বাকী,এ্যাড.নিজামূল হক চুন্নু, বিআরটিএ’র ইন্সপেক্টর হুমায়ূন কবির, জেলা জাসদের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আলীম স্বপন, নারীনেত্রী আলম আরা জুই, মাদকদ্রব্য অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আইউব আলী মিয়া, সমাজ সেবার ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক আব্দুল গনি, পল্লী বিদ্যুতের জিএম মুখলেছ গনি, ইসলামী ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক আব্দুল হামিদ খান, বিশিষ্ট দৌড়বিদ জেমস জয় মল্লিক, এনএসআই’র সহকারী পরিচালক ছানোয়ার হোসেন, জেলা মহিলা কর্মকর্তা হাসিনা বেগম প্র্রমুখ। সভায় কমিটির সদস্যরা জেলার আইনশৃংখলার উন্নতি হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেন। সেই সাথে দেশের স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি জঙ্গীবাদ জামায়াতে ইসলামী সংগঠনের জঙ্গীরা যাতে কুষ্টিয়ার শান্তি প্রিয় সাধারণ মানুষকে মিথ্যা কথা ও প্রলোভন দেখিয়ে রাস্তায় নামাতে না পারে সে দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। এসব ধর্মের নামে বিশৃংখলাকারী, সমাজ ও দেশ বিরোধীদের প্রকৃত ও সঠিক তালিকা তৈরী করে তাদে প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবাস্থা নেয়ার উদ্যোগ গ্রহনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। পুলিশের উপর হামলা করে তাদের নিহত করায় নিন্দা জ্ঞাপন করেন। এদেশে জঙ্গীবাদ জঙ্গী যেন মাথা চাড়া দিতে না পারে সে জন্য তাদের গডফাদারদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে নির্দেশ দেয়া হয়। কুষ্টিয়া চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডানিট্রজ’র সহ-সভাপতি এসএম কাদেরী শাকিল প্রস্তাব অনুসারে দেশের রাজনৈতিক অবস্থার কথা বিবেচনায় নিয়ে যে সপ্তাহে হরতাল থাকবে সেই সপ্তাহের শুক্রবার কুষ্টিয়ার সকল দোকান-পাঠ খোলা রাখার নিদ্ধান্ত নেয়া হয়। যদি দোকানদারদের কেউ নানান ভয়ভীতি দেখিয়ে যদি কোন ফায়দা লোটার চেষ্টা করে তাহলে নিকটস্থ পুলিশে খবর দেয়ার অনুরোধ করা। ইসলামিক ফাইন্ডেশনের সুযোগ সুবিধা ভোগকারী  মসজিদের ঈমাম ও মাদ্রাসার অধ্যক্ষদের বিরুদ্ধে ধর্মীয় উম্মাদনা সৃষ্টির প্রমান সাপেক্ষে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। সেই সাথে সরকারী বিরোধী প্রচার-প্রচারনা ও সরকারী অনুমোদন ছাড়া বিজ্ঞাপন সহ নানান কর্মসূচী দেখানো স্যাটকম কিংবা কেবল নেটওয়াকিংয়ের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। পরিশেষে সভায় চলতি বছরের ফেব্র“য়ারী-জানুয়ারী মাসের জেলার ৬টি উপজেলা ও ৭ টি থানায় সংঘঠিত ডাকাতী, দস্যুতা, খুন, দাংগা, দাংগাসহ খুন, নারী নির্যাতন, অপহরণ,পুলিশের কাজে বাধাদান, সিঁদেল, পশু, ও তার চুরি, অস্ত্র আইন, চোরাচালান ও অন্যান্য অপরাধের পরিসংখ্যান প্রজেক্টরের মাধ্যমে দেখানো হয়। এতে চলতি বছরের ফেব্র“য়ারী মাসে ১৪৩টি এবং জানুয়ারী মাসে ১৪৬টি অপরাধের পরিসংখ্যান তুলে ধরা হয়।

  

কুষ্টিয়া পাসপোর্ট অফিসের দুই দালাল আটক, কারাদন্ড প্রদান

আরিফ মেহমুদ ॥ কুষ্টিয়ার আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের দুর্ণীতি ও হয়রানী নির্মুল করার লক্ষ্যে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসকের অব্যাহত কর্মসুচীর অংশ হিসেবে গতকাল বুধবার দুপুরে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটের নেতেৃত্বে পরিচালিত ভ্রাম্যমান আদালত অভিযানে দু’জন দালালকে বেশকিছূ ফরম সহ আটক করেছে পুলিশ। আককৃতরা হচ্ছে কুষ্টিয়া পেয়ারাতলার মৃত মনসুর আলীর ছেলে আইনুল ইসলাম (৫৩) ও একই এলাকার মমতাজ উদ্দিনের ছেলে মোদাব্বের আল মাহমুদ রিপন (২৮)। আটককৃতদের বিচারের জন্য তাৎক্ষনিক ভ্রাম্যমান আদালত বসানো হয়। আদালতের বিচারক নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট এস এম জামাল আহমেদ আটককৃতদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমানিত হলে আইনুল ইসলামকে তিন মাস ও রিপনকে ছয় মাস করে সশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন। উলে¬খ্য, দুর্ণীতির আখড়া খ্যাত কুষ্টিয়ার আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে দীর্ঘদিন ধরে দালালদের মাধ্যমে ঐ অফিসের কতিপয় দূর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তা/কর্মচারী অতিরিক্ত অর্থ আদায়সহ পাসপোর্ট করতে আগত আবেদনকারী জনগনকে সীমাহীন হয়রানী করে আসছে বলে অসংখ্য ভুক্তভোগীর অভিযোগ রয়েছে। এমনকি সেখানে সংবাদ সংগ্রহে গিয়ে বেশ কয়েকজন শীর্ষ গনমাধ্যম কর্মীকে লঞ্চিত হতে হয়েছে।

কুষ্টিয়ায় ই’বি’র সাবেক প্রোভিসি কামালউদ্দিনকে লক্ষ্য করে গুলি

আরিফ মেহমুদ ॥ কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষক ও সাবেক প্রোভিসি কামালউদ্দিনকে লক্ষ্য করে গুলি ছুঁড়েছে দুর্বৃত্তরা। গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হওয়ায় তিনি প্রাণে রক্ষা পেলেও শেষ দেখে নেয়ার গুমকি দিয়েছে দূর্বিত্তরা। গতকাল বুধবার সকালে কুষ্টিয়া পৌরসভার প্রধান গেটের পাশে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে রিভলবারের দুটি গুলির খোসা উদ্ধার করেছে। এ সংবাদ শহরে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি। কামালউদ্দিন ও স্থানীয় সত্রে জানা যায়, সকাল পৌনে নয়টার দিকে ক্যাম্পাসে যাওয়ার উদ্দেশে তিনি বাসা থেকে বের হয়ে পৌরসভার প্রধান গেটের সামনে বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছিলেন। কিছুক্ষণ পর একটি মোটরসাইকেল থেকে দুই ব্যক্তি তাঁকে লক্ষ্য করে পর পর দুটি গুলি ছুড়ে শহরের দিকে পালিয়ে যায়। এতে গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হওয়ায় তিনি প্রাণে রক্ষা পেলেও দূর্বিত্তরা শেষ দেখে নেয়ার গুমকি দিয়ে যায়। সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি মুঠোফোনে পুলিশ সুপারকে জানান তিনি। পৌরসভার সামনে একজন দোকানি বলেন, দুটি গুলির শব্দ শোনা গেছে। তবে কে বা কারা করেছে, তা তিনি দেখতে পাননি। আরেক দোকানি বলেন, ঘটনার পর মোটরসাইকেলের দুই আরোহীকে (হেলমেট ছাড়া) তিনি দ্রুত চলে যেতে দেখেছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সুত্র জানায়, গত বছর ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ১১২ জন শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োগ ও ভর্তি বাণিজ্যকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এম আলাউদ্দিন, সহ-উপাচার্য কামালউদ্দিন ও কোষাধ্যক্ষ শাহজাহান আলীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। এর মধ্যে সাবেক সহ-উপাচার্য কামাল উদ্দিন একাই কৌশল করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। সে সময় অনেকেই তার কাছে টাকা দিয়ে চাকুরীতে নিয়োগ ও ভর্তি না হতে পারায় ছাত্র সংগঠন সহ চাকুরী ইচ্ছুক প্রার্থীদের মোটা অংকের টাকা লেনদেন নিয়ে ঝামেলা বাধে। প্রার্থী প্রতি মোটা অংকের টাকা নিয়েও তাদের চাকুরী না পাওয়ায় এঘটনার সুত্রপাত ঘটতে পারে বলে অনেকেই ধারণা করছে। আবার অন্যদিকে নিয়োগ ও ভর্তি বাণিজ্যকে কেন্দ্র করে ই’বিতে ঝামেলা হওয়ায় কুষ্টিয়া থেকে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে বদলি হতেই এধরণের নাটক তিনি নিজেই সাজিয়েছেন বলে অনেকেই ধারণা করছেন। উল্লে¬খ্য গত বছর ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ১১২ জন শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োগে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এম আলাউদ্দিন, সহ-উপাচার্য কামালউদ্দিন ও কোষাধ্যক্ষ শাহজাহান আলীর বিরুদ্ধে চরম দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। গত ডিসেম্বর মাসে উপাচার্য ও এ বছরের জানুয়ারি মাসে সহ-উপাচার্যকে নিজ নিজ পদ থেকে অব্যাহতি দেন রাষ্ট্রপতি। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য শাহিনুর রহমান বলেন, শিক্ষকের ওপর গুলিবর্ষণ ন্যক্কারজনক ঘটনায় মামলা করা হবে। এব্যাপারে  কুষ্টিয়া পুলিশ সুপার মফিজ উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, খবর পেয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দুটি গুলির খোসা উদ্ধার করেছে। গুলি ছোড়ার বিষয়টি খতিয়ে দেখছে পুলিশ। ঘটনার সাথে যেই জড়িত হোক না কেন তাদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে।

বৃহস্পতিবার, ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩

ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইনে কুষ্টিয়া পৌরসভার এডভোকেসী সভা

আরিফ মেহমুদ ॥ কুষ্টিয়া পৌরসভার আয়োজনে ম.আ.রহিম মিলনায়তনে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন ২০১৩ উদ্যাপন উপলক্ষে পৌরসভা এডভোকেসী ও পরিকল্পনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। কুষ্টিয়া পৌরসভার মেয়র আনোয়ার আলীর সভাপতিত্বে উক্ত সভায় বক্তব্য রাখেন, কুষ্টিয়া পৌরসভার কুষ্টিয়া পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম, সহকারী প্রকৌশলী ওয়াহিদুর রহমান, মেডিকেল অফিসার ডাঃ শামীম সিদ্দিকী, নগর পরিকল্পনাবিদ রানভীর আহমেদ, বস্তি উন্নয়ন কর্মকর্তা এ. কে. এম. মঞ্জুরুল ইসলামসহ কুষ্টিয়া পৌরসভার কর্মকর্তা/কর্মচারী সহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। সভা পরিচালনা করেন কুষ্টিয়া পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত স্যানেটারী ইন্সপেক্টর দেবাশীষ বাগচী।
কুষ্টিয়ার সিনিয়র স্বাস্থ্য শিক্ষা অফিসার পারভেজ হোসেন বলেছেন, ভিটামিন ‘এ’ যে শুধুমাত্র  অপুষ্টিজনিত অন্ধত্ব থেকে শিশুদের রক্ষা করে তাই নয়, ভিটামিন ‘এ’ ডায়রিয়ার ব্যাপ্তিকাল ও জটিলতা কমায় এবং শিশুর মৃত্যুর ঝুঁকি কমায়। আগামী প্রজন্মকে এ রোগের সংক্রমণ থেকে রক্ষা করার জন্য ভিটামিন ‘এ’ এর অভাবজনিত অন্ধত্ব ও মৃত্যুর ঝুঁকি কমানো সম্ভব। ভিটামিন ‘এ’ শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এ জন্য শিশুদের ভিটামিন ‘এ’  ক্যাপসুল খাওয়াতে হবে। আগামী ১২ মার্চ তারিখে ৬-১১ মাস বয়সী সকল শিশুকে একটি নীল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো, ১২-৫৯ মাস বয়সী (১-৫ বছর) সকল শিশুকে একটি লাল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো ও ২৪-৫৯ মাস বয়সী (২-৫ বছর) সকল শিশুকে একটি কৃমিনাশক ট্যাবলেট খাওয়ানো হবে। তিনি স্বাস্থ্যকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, যদি কোনো শিশু গত ৪ মাসের মধ্যে কৃমিনাশক ট্যাবলেট খেয়ে থাকে, তবে সেই শিশুকে ক্যাম্পেইনে কৃমিনাশক ট্যাবলেট খাওয়ানোর প্রয়োজন নেই। আপনারা অভিভাবককে বলবেন যেন শিশুকে অবশ্যই ভরাপেটে টিকাদান কেন্দ্রে নিয়ে আসে। ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল ও কৃমিনাশক ট্যাবলেট ভরাপেটে খাওয়ানো ভাল। সভাপতির বক্তব্যে কুষ্টিয়া পৌরসভার মেয়র আনোয়ার আলী স্বাস্থ্যকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, অতীতে আপনারা সুনামের সাথে জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন সম্পন্ন করেছে। তারই কারণে কুষ্টিয়া পুরস্কৃত হয়েছে। অতীতের সুনান ধরে রাখবেন। তিনি বলেন, আপনারা আন্তরিকতার সাথে কাজ করছেন। বাড়ি বাড়ি গিয়ে খোজ করবেন যেন কোন শিশু বাদ না পড়ে এবং কেন ‘এ’ প্লাস খায়ানো হয় সেই বিষয়ে বিস্তারিত জানাবেন। তিনি বলেন, সকলের সার্বিক সহযোগিতা অব্যাহত থাকলে আমরা অবশ্যই জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন ২০১৩ সফল ভাবে সমাপ্ত করাতে পারব।



বুধবার, ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩

কুষ্টিয়া সাব রেজিষ্ট্রি অফিসে অভিযান, এক কর্মচারীর ৬ মাসের কারাদন্ড প্রদান

আরিফ মেহমুদ ॥ জেলা প্রশাসকের নির্দেশ অমান্য করে কুষ্টিয়া সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসে অনিয়ম-দুর্ণীতি করায় ভ্রাম্যমান আদালতে অফিসের এক কর্মচারীকে ৬ মাসের কারাদন্ড প্রদান করেছেন ভ্রাম্যমান আদালত। কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক সৈয়দ বেলাল হোসেনের নির্দেশে বুধবার দুপুরে কুষ্টিয়ার নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ভ্রাম্যমান আদালতের বিচারক এসএম জামাল আহমেদ এ রায় প্রদান করেন। দন্ডাদেশ প্রাপ্ত ওই ব্যক্তি দুর্ণীতির আখড়া হিসেবে পরিচিত কুষ্টিয়া সদর সাব রেজিষ্ট্রি অফিসের এমএলএসএস মাহাতাব উদ্দিন। দুর্ণীতির বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় আদালতের ম্যাজিষ্ট্রেট বাংলাদেশ দন্ডবিধির ২৯১ ধারায় এ কারাদন্ড প্রদান করেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে কুষ্টিয়া সাব-রেজিষ্ট্রি অফিস অনিয়ম আর দূর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়। জেলা প্রশাসক সৈয়দ বেলাল হোসেন যোগদানের পর চলতি মাসের শুরুতে দুণীর্তি মুক্ত কুষ্টিয়া সাব- রেজিষ্ট্রি অফিস করার ঘোষণা দেন । এ ঘোষণার পর থেকে একের পর এক ওই অফিসে  ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান পরিচালিত হয়ে আসছিল। কিন্তু তার পরও ঘুষ-দুর্ণীতি আর অনিয়ম বন্ধ হয়নি। গোপনে চলছিল ঘুষ আর দুর্ণীতির কারবার। কয়েকদিন যাবত ভুক্তভোগীরা এ অফিসের কয়েকজন কর্মচারী ও দলিল লেখকদের নামে লিখিতভাবে জেলা প্রশাসকের দপ্তরে অভিযোগ দায়ের করেন। এ অভিযোগের ভিত্তিতে জেলা প্রশাসক সৈয়দ বেলাল হোসেনের নির্দেশে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট এসএম জামাল আহমেদ সেখানে অভিযান চালিয়ে দুর্ণীতির সাথে জড়িত থাকার অপরাধে এমএলএসএস শেখ মাহাতাব উদ্দিন শেখকে হাতে নাতে আটক  করেন। পরে জেলা প্রশাসকের আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে এসএম জামাল আহমেদের কক্ষে ভ্রাম্যমান আদালত বসিয়ে মাহাতাব উদ্দিন শেখকে ৬ মাসের কারাদন্ড প্রদান করেন। দুর্ণীতির আখড়া হিসেবে পরিচিত কুষ্টিয়া সাব রেজিষ্ট্রি অফিসে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে কারাদন্ড প্রদান করায় ভুক্তভোগী এবং সুধী মহল কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক সৈয়দ বেলাল হোসেনকে সাধুবাদ জানিয়েছেন।

কুষ্টিয়া জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচন সম্পন্ন,সিরাজ-উল-ইসলাম সভাপতি, দুলাল সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত

আরিফ মেহমুদ ॥ বিপুল উৎসাহ উদ্দিপনার মধ্য দিয়ে কুষ্টিয়া জেলা আইনজীবী সমিতির কার্য্য নির্বাহী পরিষদের ২০১৩-২০১৪ বষের্র সাধারণ নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়েছে। গতকাল রবিবার কুষ্টিয়া জেলা আইনজীবী সমিতি ভবনের নিচতলায় সকাল সাড়ে ৯ টা থেকে শুরু হয়ে বিরতিহীনভাবে ভোট গ্রহণ চলে একটানা বিকেল সাড়ে ৩ টা পর্যন্ত। এবারের নির্বাচনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ্যাড.আব্দুর রশিদ ও সহকারী নির্বাচন কমিশনার এ্যাড.আকতারুজ্জামান ও এ্যাড.আলম জাকারিয়া টিপু দায়িত্ব পালন করেন। নির্বাচনে ৪১৬ জন ভোটারের মধ্যে ৩৯৮ জন তাদের ভোট দিয়ে পছন্দের প্রার্থীদের জয়যুক্ত করেছেন। কার্য্য নির্বাহী পরিষদের নির্বাচনে ১৭টি পদের জন্য ৩৯জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দীতা করেন। নির্বাচনে সভাপতি পদে সিনিয়র আইনজীবী ঢাকা ল কলেজের অধ্যক্ষ সিরাজ-উল-ইসলাম ২১৪ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দী সিনিয়র আইনজীবী অধ্যক্ষ আমিরুল ইসলাম ১৭৫ভোট পেয়ে পরাজিত হন। সাধারণ সম্পাদক পদে সিনিয়র আইনজীবী এ্যাড.নুরুল ইসলাম দুলাল ২০৫ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দী সিনিয়র আইনজীবী জহুরুল ইসলাম ১৮৫ ভোট পেয়ে পরাজিত হন। এবারের নির্বাচনে একটি প্যানেলে সভাপতি পদে সিনিয়র আইনজীবী অধ্যক্ষ আমিরুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক পদে সিনিয়র আইনজীবী এ্যাড.নুরুল ইসলাম দুলাল এবং অন্য প্যানেলে সভাপতি পদে সিনিয়র আইনজীবী ঢাকা ল কলেজের অধ্যক্ষ সিরাজ-উল-ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক পদে সিনিয়র আইনজীবী জহুরুল ইসলাম মনোনীত দুটি প্যানেলের হ্যাভি ওয়েট প্রার্থীরা ভোট যুদ্ধে নামেন। সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে সিনিয়র আইনজীবী এ্যাড.আব্দুল জলিল ২১৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার প্রতিদ্বন্দীতা সিনিয়র আইনজীবী এ্যাড.সূধীর শর্মা ১৬৬ ভোট পেয়ে পরাজিত হন। সহ-সভাপতি পদে এ্যাড.আব্দুল খালেক ১৬১ পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন।, এ্যাড.এমদাদুল হক ১৪৩ ভোট পেয়ে পরাজিত হন। অন্যপ্রার্থী এ্যাড.আহমেদ আলী ৭৫ ভোট পান । যুগ্ম সম্পাদক পদে এ্যাড.এস এম মনোয়ার হোসেন মুকুল ১৮৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। এ্যাড.হাফিজুল ইসলাম মুনীর ১৪৪ ভোট পেয়ে পরাজিত হন। অপর প্রার্থী এ্যাড.আল মুজাহিদ হোসেন মিঠু ৫৯ ভোট পান। লাইব্রেরী সম্পাদক পদে এ্যাড.খন্দকার সিরাজুল ইসলাম ২০৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। এ্যাড.শামসুজ্জামান মনি ১৭৪ ভোট পেয়ে পরাজিত হন।  কোষাধ্যক্ষ পদে এ্যাড.আবুল কালাম আজাদ কমল ২১০ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। এ্যাড.মিয়া নাজির ১২৯ ভোট পেয়ে পরাজিত হন। অপর প্রার্থী এ্যাড.ওয়াজেদুল ইসলাম চাঁদ মাত্র ৪৭ ভোট পান। সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে এ্যাড.সাজ্জাদ হোসেন সেনা ২১৪ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। এ্যাড.রাজীব আহমেদ রঞ্জু ১৬৬ ভোট পেয়ে পরাজিত হন। দপ্তর সম্পাদক পদে এ্যাড.শাতিন মাহমুদ ২২৭ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। এ্যাড.কামরুল ইসলাম খোকন ১৬২ ভোট পেয়ে পরাজিত হন। এরিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সিনিয়র সদস্য ও জুনিয়র সদস্য পদের ভোট গণনা চলছিল।

শনিবার, ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩

যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবীতেকুষ্টিয়ায় ১৪ দলের সমাবেশ

আরিফ মেহমুদ ॥ কসাই কাদের মোল্লার যাবজ্জীবন কারাদন্ড বাতিল করে তাকে সহ সকল যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবীতে কুষ্টিয়ায়ও ১৪ দলের সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টায় শহরের বক চত্বরে আওয়ামী লীগ নেতৃতাধীন ১৪ দলের উদ্যোগে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ঘৃণিত যুদ্ধাপরাধী কসাই কাদের মোল্লার ফাঁসির দাবির মধ্য দিয়ে সারা দেশে গণজাগরণ-গণপ্রতিরোধের ঢেউ ছড়িয়ে পড়েছে। বাংলাদেশ মানেই মুক্তিযুদ্ধ, বাংলাদেশ মানেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। বাংলাদেশ মানেই স্বাধীনতা বিরোধী রাজাকার-আলবদর-আলশামস প্রতিরোধ,আর প্রতিশোধের মিলিত ঐক্যতান। বিক্ষোভ সমাবেশে আওয়ামী লীগ, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদসহ ১৪দলের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি খন্দকার জুলফিকার আলী আরজু, সহ-সভাপতি আব্দুল হামিদ রায়হান, সাধারন সম্পাদক আজগর আলী, আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় জাতীয় পরিষদের সদস্য ও খোকসা উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব সদর উদ্দিন খান, জেলা জাসদের সভাপতি গোলাম মহসিন, জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ডাঃ আমিনুল হক রতন, শহর আওয়ামীলীগের সভাপতি তাইজাল আলী, সাধারণ সম্পাদক মোমিনুর রহমান মোমিজ, সদর থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি আক্তারুজ্জামান মাসুম, সাধারণ সম্পাদক,আক্তারুজ্জামান বিশ্বাস, জেলা জাসদের সহ-সভাপতি আমিরুল ইসলাম মকলু, সাংগঠনিক সম্পাদক অসিত সিংহ রায়, জেলা ওয়াকার্স পাটির সদস্য আব্দুল হক, জাসদ ছাত্রলীগের সভাপতি অভিজিৎ সিংহ রায় পাপ্পু প্রমূখ। সমাবেশে বক্তারা বলেন একাত্তরে পরাজিত শক্তি আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে।“জনগণের প্রত্যাশা ছিল কাদের মেল্লার ফাঁসি হবে। তাকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়ে জনগণের সেই দাবীকে অবমূল্যায়ন করা হয়েছে। আমরা সাধারণ জনগণ কখনোই এ রায় মেনে নেব না। সমাবেশ শেষে কসাই কাদের মোল্লার ফাঁসির দাবীতে শহরে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয় এবং তার কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়। মিছিলটি শহরের প্রধান এনএস রোড় প্রদক্ষিণ করে।

কুষ্টিয়ায় মুক্তিযোদ্ধা সংসদের প্রতিবাদ মঞ্চে জনতার শপথ যুদ্ধাপরাধী খুনিদের ফাঁসি চাই, দিতে হবে

আরিফ মেহমুদ ॥ যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল¬াসহ সকল মানবতা বিরোধী অপরাধীদের ফাসির দাবীতে কুষ্টিয়ার হাজার হাজার মানুষ নেমে এসেছে রাজপথে। শাহবাগের আন্দোলনের আগুন এখন ছড়িয়ে পড়েছে দেশের সবখানে। এরই অংশ হিসেবে কুষ্টিয়ার পাবলিক লাইব্রেরী মাঠে গতকাল মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডাকে গড়ে ওঠা ‘প্রতিবাদ মঞ্চ’ মুক্তিযোদ্ধা, শিক্ষক, সাংবাদিক, চিকিৎসক, ব্যবসায়ী, রাজনৈতিক নেতাসহ বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষের পদভারে মুখরিত হয়ে ওঠে। একাত্তরের হাতিয়ার গর্জে উঠুক আরেক বার, মুক্তিযদ্ধের বাংলায় রাজাকারের ঠাই নাই শে¬াগানে শে¬াগানে উত্তাল হয়ে উঠে কুষ্টিয়ার পাবলিক লাইব্রেরী মাঠ। বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ যুদ্ধাপরাধী মানবতা বিরোধী খুনিদের ঘৃণা ও প্রতিবাদ জানাতে স্ব-স্ব উদ্যোগে ফেস্টুন, ব্যানার, কাটুন ছবি, র‌্যালী, মিছিল, রাজাকারদের নাম সম্বলিত টয়লেট পেপার বিতরণ করে। বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, কুষ্টিয়া জেলা কমান্ডের কমান্ডার নাছিম উদ্দিন আহম্মেদ এর সভাপতিত্বে প্রতিবাদ মঞ্চে একাত্মতা ঘোষণা করে বক্তব্য রাখেন কুষ্টিয়া পৌরসভার মেয়র আনোয়ার আলী, জেলা জাসদের সভাপতি গোলাম মহসিন, জেলা বিএমএ’র সাধারন সম্পাদক ডাঃ আমিনুল হক রতন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার রফিকুল আলম টুকু, হাজী নজরুল ইসলাম গেরিলা, শাহাবুব আলম, জেলা সিপিবি’র সভাপতি কমরেড রফিকুল ইসলাম, জলা শিল্পকলা একাডেমির সাধারন সম্পাদক আমিরুল ইসলাম ছাত্র ফন্টের নেত্রী শ্যামা, জাতীয় কবিতা পরিষদ,কুষ্টিয়ার সভাপতি কবি খৈয়াম বাসার,পরিমল থিয়েটারের সভাপতি শেখ সানোয়ার হোসেন রিন্টু,একাত্তরের ঘাতক নির্মূল কমিটি, কুষ্টিয়ার সদস্য সচিব অসিত সিংহ রায় স্বাধীনতা ব্রিগেডের কেন্দ্রীয় সভাপতি মীর জাহিদসহ জেলা ৬ উপজেলা ও ৬৬ ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডের কমান্ডারগণ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রধানগণ। ‘প্রতিবাদ মঞ্চে বক্তারা তাদের বক্তব্যে বলেন, যুদ্ধাপরাধী রাজাকার, মানবতা বিরোধী খুনি ধর্ষক কাদের মোল¬ার রায় সাধারণ মানুষ প্রত্যাখান করেছে। সবার প্রানের দাবী স্বাধীনতা বিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের একমাত্র রায় হবে ফাঁসি। জাতি আজ অধীর আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছে। মহান স্বাধীনতার যুদ্ধে আত্মদানকারী শহীদদের আত্মার শান্তি কামনায় ও জাতিকে কলঙ্ক মুক্ত করতে মানবতারোধী যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। একাত্তরে পরাজিত শক্তি আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। জনগণের প্রত্যাশা ছিল কাদের মেল¬ার ফাঁসি হবে। তাকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়ে জনগণের সেই দাবীকে অবমূল্যায়ন করা হয়েছে। আমরা সাধারণ জনগণ কখনোই এ রায় মেনে নেব না। কাদের মোল¬া সহ সকল যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবীতে গণজমায়েতের আন্দোলনকারীদের সাথে সংহতি প্রকাশ করে গণসঙ্গীত পরিবেশন করেন কন্ঠশিল্পী টিপু সুলতান, আব্বাস, সুজন, দিপুসহ আরও অনেকে।


জেলা ক্রীড়া সংস্থার প্রথম বিভাগ ক্রিকেট লীগ উদ্বোধনীতে সৈয়দ বেলাল হোসেন

আরিফ মেহমুদ॥ কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি সৈয়দ বেলাল হোসেন বলেছেন, সংস্কৃতির পাশা পাশি ক্রীড়াঙ্গনেও কুষ্টিয়া জেলার ঐতিহ্যবাহী ইতিহাস রয়েছে। সেই ইতিহাস ও ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতা আমাদের পূণঃজীবিত করতে যুবকদের এগিয়ে আসতে হবে। এ জন্য জেলার সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন। পারিবারিকভাবেই আপনার ছেলেকে ক্রীড়ামুখি করে গড়ে তুললেই কুষ্টিয়ার ক্রীড়াঙ্গনে পরিবর্তন আনা সম্ভব। ভাল খেলোয়াড় তৈরী করতে হলে প্রয়োজন নিয়মিত অনুশীলন করা। নিয়মিত অনুশীলন করলেই জেলার খেলাধুলা একদিকে যেমন শারীরকে সুস্থ রাখে,অপর দিকে সন্ত্রাস ও মাদকাসক্ত থেকে যুব সমাজকে রক্ষা করে। আজ যারা এ লীগে অংশগ্রহণ করছে তারা সকলেই যুবক। আর এই যুবসমাজই পারবে ক্রীড়াঙ্গনের আমূল পরিবর্তন আনতে। গতকাল শনিবার সকালে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা আর আনন্দঘন পরিবেশের মধ্যদিয়ে কুষ্টিয়া জেলা ক্রীড়া সংস্থার আয়োজনে,কুষ্টিয়া স্টেডিয়াম মাঠে প্রথম বিভাগ ক্রিকেট লীগ ২০১২-১৩ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। জেলা ক্রীড়া সংস্থার সহ-সভাপতি ও ক্রিকেট উপ-পর্ষদের সভাপতি এ্যাড.অনুপ কুমার নন্দী’র সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কুষ্টিয়া পৌরসভার মেয়র আনোয়ার আলী, কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আজগর আলী, জেলা ক্রীড়া সংস্থার সহ-সভাপতি খন্দকার জুলফিকার আলী আরজু ও জহুরুল হক চৌধুরী রনজু। অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মকবুল হোসেন লাবলু ও ক্রিকেট উপ-পর্ষদের সাধারণ সম্পাদক পারভেজ আনোয়ার তনু। এসময় উপস্থিত ছিলেন জেলা ক্রীড়া সংস্থার নেতৃবৃন্দ। প্রধান অতিথির বক্তব্যে আরো বলেন, সকল যুবক লেখাপড়ার পাশাপাশি খেলাধুলায় এগিয়ে আসবে। কুষ্টিয়া জেলা ক্রীড়া সংস্থা যে ভাবে একেরপর এক নিয়মিত বিভিন্ন খেলাধুলার আয়োজন করে চলেছে, তাতে বোঝা যায় অচিরেই দেশের ক্রীড়াঙ্গনে কুষ্টিয়ার নতুন ইতিহাস সৃষ্টি হবে। এ লীগের আয়োজন করায় আয়োজকদের ধন্যবাদ জানান তিনি। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মেয়র আনোয়ার আলী বলেন, ভাল খেলোয়াড় তৈরী করতে হলে প্রথমেই প্রয়োজন নিয়মিত অনুশীলন। আর সেই নিয়মিত অনুশীলনের ব্যবস্থাটি করে চলেছে কুষ্টিয়া জেলা ক্রীড়া সংস্থা। এজন্য জেলা ক্রীড়া সংস্থার সকলকে জানায় ধন্যবাদ। তিনি বলেন, লেখাধুলার ক্ষেত্রে এ জেলার সর্বোচ্চ প্রতিষ্ঠান হচ্ছে জেলা ক্রীড়া সংস্থা। বিগত দিনে এই প্রতিষ্ঠানটি খেলাধুলার ক্ষেত্রে তেমন অবদান না রাখতে পারলেও আমরা লক্ষ্য করছি বর্তমনে জেলা ক্রীড়া সংস্থার আয়োজনে সব ধরণের লেখাধুলার আয়োজন করা হচ্ছে। ক্রীড়ার উন্নয়নে যথেষ্ট ভূমিকা রেখে চলেছে এই প্রতিষ্ঠানটি। এভাবে চলতে থাকলে অচিরেই আমরা বড় ধরণের অর্জন পাব। উদ্বোধনী খেলায় আমলাপাড়া স্পোর্টিং ক্লাব ২২১ রানে পোড়াদহ শফি স্মৃতি সংঘকে পরাজিত করে। খেলাটি পরিচালনা করেন হাবিবুর রহমান বাপ্পি ও ইমারত হোসাইন মিনু। অনুষ্ঠানটি সার্বিক পরিচালনা ও উপস্থাপনা করেন জেলা ক্রীড়া সংস্থার কোষাধ্যক্ষ খন্দকার ইকবাল মাহমুদ।

বুধবার, ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩

সরকারী কর্মচারী সমন্বয় পরিষদের মতবিনিময়ে সৈয়দ বেলাল হোসেন

আরিফ মেহমুদ ॥ কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক সৈয়দ বেলাল হোসেন বলেছেন, আমরা সকলেই রেভিনিউ খাত হতে বেতন নিয়ে থাকি সেকারণে জেলা প্রশাসকের সাথে নাড়ীর সম্পর্ক রয়েছে। তিনি আরও বলেন নৈতিক অবক্ষয় ব্যতিত সকল সমস্যা সমাধানে আমার সহযোগীতা অব্যাহত থাকবে। জেলার একজন কর্মকর্তার বাইরেও আপনি একজন এদেশের নাগরিক। সেই নাগরিকত্বের দায়িত্ববোধ থেকে স্ব স্ব অবস্থান কাজ করলে কুষ্টিয়া সহ এদেশ এগিয়ে যাবে। গতকাল বুধবার বিকাল ৪টায় কালেক্টরেট সভাকক্ষে সরকারী কর্মচারী সমন্বয় পরিষদ কুষ্টিয়া জেলা শাখার নেতৃবৃন্দের সাথে জেলা প্রশাসকের মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। জেলা প্রশাসক সভা কক্ষে পৌছালে সরকারী কর্মচারী সমন্বয় পরিষদ কুষ্টিয়া জেলা শাখার নেতৃবৃন্দ তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান।
 সৌহার্দপূর্ণ পরিবেশে এ মতবিনিময় অনুষ্ঠিত হয়। এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিক ড.মোল¬া মাহমুদ হাসান, নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট নাহিদা আক্তার, সহকারী কমিশনার মোহাম্মদ রাসেল মিয়া ও সৈয়দ আশরাফুজ্জামান। সরকারী কর্মচারী সমন্বয় পরিষদের নের্তৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সহ-সভাপতি মতিয়ার রহমান, কদম রসুল, কাজী শফিকুর রহমান, আখতারুল হক, মনোয়ার হোসেন, শেখ রবিউল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক শাহাবুদ্দিন শেখ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবু বকর, মামুনুর রহমান খান, সিরাজুল হক, সাংগঠনিক সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম, পিয়ার আলী, মখলেছুর রহমান মনি, মতালেব হোসেন, অর্থ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম, মহিলা সম্পাদিকা হাজেরা খাতুন ঝর্ণা, ফেরদোসী আক্তার জাহান, আব্দুল বারী, হাবিবুর রহমান।

মঙ্গলবার, ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩

কুষ্টিয়া বড়বাজার ব্যবসায়ী সমিতির উদ্যোগে শীতবস্ত্র বিতরণ

আরিফ মেহমুদ ॥ কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ড.মল্লিক আনোয়ার হোসেন বলেছেন, সমাজের প্রতিটি সচ্ছল ও বিত্তশালী মানুষকে আত্ম মানবতার সেবায় এগিয়ে আসতে হবে। দুস্থ্য, অসহায় ছিন্নমূল শীতার্ত মানুষের দূর্ভোগে ও দূর্দিনে পাশে থেকে তাদের সেবায় সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে হবে। গরীব দুঃখি মানুষের সেবায় সব সময় নিজেদেরকে নিয়োজিত রাখতে হবে। কুষ্টিয়া বড়বাজার ব্যবসায়ী সমিতির মত সমাজ ও দেশের সার্বিক উন্নয়নে অবহেলিত মানুষের পাশে থেকে যে কোন দূর্যোগ মুহুর্তে মানবতার কল্যাণে কাজ করতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। গতকাল শনিবার সকালে বড়বাজার ব্যবসায়ী সমিতি কার্যালয়ে বড়বাজার ব্যবসায়ী সমিতির উদ্যোগে শীতবন্ত্র বিতরণকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। কুষ্টিয়া বড়বাজার ব্যবসায়ী সমিতির ব্যক্তিগত অর্থায়নে শীতবস্ত্র হিসেবে ১৫০টি কম্বল ও ৫০টি স্যুয়েটার দুস্থ্য, অসহায় ও ছিন্নমূল মানুষের হাতে তুলে দেন। এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কুষ্টিয়া বড়বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মোকাররম হোসেন মোয়াজ্জেম, সাধারণ সম্পাদক রাফকুল ইসলাম, সহ-সভাপতি মাহমুদ হোসেন টিসু, কুষ্টিয়া বড়বাজার ব্যবসায়ী সমিতির প্রধান উপদেষ্টা হাফিজুর রহমান হেলাল,কোষাধ্যক্ষ হারুন অর রশিদ, সহ-সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম শাহান শাহ, কার্য নির্বাহী সদস্য আব্দুর রাজ্জাক, আসাদ আলী, মেহেদী হাসান পান্না, মকবুল হোসেন প্রমুখ। কুষ্টিয়া বড়বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মোকাররম হোসেন মোয়াজ্জেম, তার সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বলেন, অসহায় ও ছিন্নমূল বৃহৎ জনগোষ্ঠির মধ্যে এই সীমিত শীতবস্ত্র একেবারেই অপ্রতুল। তার পরও এসব মানুষের দূর্ভোগে ও দূর্দিনে পাশে থেকে তাদের সেবায় সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে পেরে নিজেদের ধন্য মনে করছি। তবে তিনি প্রত্যাশা করেন সমাজের প্রতিটি সচ্ছল ও বিত্তশালী বিত্তবান মানুষ এমন উদ্যোগ গ্রহন করে আত্ম মানবতার সেবায় এগিয়ে আসলে অসহায় ও ছিন্নমূল মানুষেরা কিছুটা হলেও উপকৃত হবেন।  

অপেক্ষার পালা শেষ : আগামী ২৯জুন লালন একাডেমির নির্বাচন

আরিফ মেহমুদ ॥ কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক ও লালন একাডেমির আহবায়ক সৈয়দ বেলাল হোসেন বলেছেন,লালন একাডেমিকে পুজি করে কারোর একক আধিপত্য বিস্তার করতে দেয়া হবে না। লালন একাডেমিতে থাবকে লালন ভক্তরা। অতীতে একাডেমিকে কেন্দ্র করে কি হয়েছে তা এখন ভাবার বিষয় নয়। আমি লালনকে এবং তাঁর সৃষ্টিকে হৃদয়ে লালন করি বলেই লালন একাডেমির বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহের ভক্ত-অনুরাগী, বাউল ও কুষ্টিয়াবাসীর গ্রহণযোগ্য অবাধ ও সুষ্ঠ নির্বাচন দিতে চাই। এমন কোন নির্বাচন দিতে চাই না, যে নির্বাচন লালন ভক্ত-অনুরাগীদের ব্যথিত করে। যেন তেন ভাবে অগ্রহণযোগ্য নির্বাচন দিয়ে লালন ভক্ত-অনুরাগী, বাউল ও কুষ্টিয়াবাসীর কাছে বিরাগ ভাজন হতে চাই না। সুষ্ঠ নির্বাচনের ক্ষেত্রে যে কোন অপশক্তির বাধা কঠোর ভাবে প্রতিরোধ করা হবে। সকল অপেক্ষার পালা শেষ করে লালন একাডেমি সুন্দর ও সার্থকভাবে পরিচালনার জন্য গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ছবি সম্বলিত ভোটার তালিকা প্রকাশ করে আগামী ২৯জুন সাধারন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আগামীতে লালন একাডেমির যে কোন অনিয়ম দূর্নীতি কঠোর হস্তে মোকাবেলা করতেই এই নির্বাচন প্রক্রিয়া। কুমারখালির ছেঁউড়িয়া সহ কুষ্টিয়াবাসীর সার্বিক সহযোগিতা নিয়ে সকল প্রকার সচ্ছতা অবলম্বন করে লালন একাডেমির উন্নয়নের ধারা রক্ষা করা হবে। গতকাল শনিবার বেলা ১১টায় কুমারখালির ছেঁউড়িয়ায় লালন একাডেমি অডিটোরিয়াম মিলনায়তনে লালন একাডেমির আহবায়ক কমিটির আয়োজনে নির্বাচনোত্তর এজিএম (সাধারণসভা) বিশেষ সাধারণ সভার মূলতবি সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি আরো বলেন,বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহের সৃষ্টি বাউলতত্ব আজকের বিশ্বে সর্বজন বিদিত। তাঁর মানব দর্শন ও বাউলতত্ত্ব কোন বস্তুগত স্থাপনার মধ্যে দিয়ে মূল্যায়ন করা যাবে না। একটি সুন্দর সমাজ প্রতিষ্ঠিত করতে তাঁর অহিংস মানবতাবাদী মতবাদকে মনে প্রাণে লালন করতে হবে। তিনি যে ব্রত নিয়ে সাধারণ মানুকে মানতাবাদীর পথে ডাক দিয়ে ছিলেন সেটি সত্যিকার অর্থে বাস্তবায়ন হলে মানুষে মানুষে হিংসা বিদ্বেশ ভূলে যেত। সভায় তাকে সার্র্বিক সহযোগিতা করেন লালন একাডেমির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবুল কালাম, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জাহিদুল ইসলাম, নবনিযুক্ত ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ রাসেল মিয়া ও সৈয়দ আশরাফুজ্জামান। এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কুষ্টিয়া সরকারী কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর বদরুদ্দোজা, যুব উন্নয়নের উপ-পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান, একাডেমির আহবায়ক কমিটির সদস্য বিশিষ্ট গবেষক ও লেখক ম.মনিরুজ্জামান, লালন একাডেমির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও শহর আ’লীগের সভাপতি তাইজাল আলী খান, কুষ্টিয়া জেলা জাসদের সভাপতি গোলাম মহসীন. এ্যাড.আক্তারুজ্জামান মাসুম, এ্যাড.শামসুর রহমান বাবু, লালন একাডেমির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এনামূল হক মঞ্জু, রেজওয়ানুল হক খান চৌধুরী মুকুল, কুমারখালির চাপড়া ইউ’পি চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুস, নন্দলালপুর ইউ’পি চেয়ারম্যান জিয়ারউর রহমান খোকন, বিশিষ্ট ঠিকাদার জাভেদ আলী, লালন একাডেমির সাবেক নির্বাহী সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা জাহিদুল ইসলাম, কুষ্টিয়া চেম্বারের সাবেক পরিচালক আব্দুস সাত্তার, আলতাফ হোসেন মোল্লা, এ্যড. এস এম মনোয়ার হোসেন মুকুল, কাজী গোলাম মোস্তফা, নিলুফা নাসরিন আকতার,রবিউল হক খান বাউল আব্দুল কুদ্দুস প্রমুখ। লালন একাডেমির মোট সদস্যদের সংখ্যানুপাতহারে সভায় সদস্য উপস্থিত না হওয়ায় গত ২৬ জানুয়ারী সভার কোরাম সংকটের কারনে বিশেষ সাধারণ সভা মূলতবী করা হয়। গতকাল শনিবার সকালে অনুষ্ঠিত বিশেষ মূলতবি সভায় লালন একাডেমির নির্বাচন চলতি বছরের ২৯জুন অনুষ্ঠানের ঘোষনা দেয়া হয়। সকাল ৮টা থেকে ভোট গ্রহণ শুরু হয়ে বিরতীহিনভাবে  চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। এবারের নির্বাচনে চুড়ান্ত ভোটার তালিকা ঘোষনার আগে অর্থাৎ ২০০৮ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের ভোটার এবং তারও আগের সদস্যবৃন্দ ইতোপূর্বে সদস্য ছিলেন প্রমানাদী দেখিয়ে আগামী ২৮ ফেব্র“য়ারীর মধ্যে সমস্ত বকেয়া চাঁদা পরিশোধ করে সদস্য পদ নবায়ন করতে পারবে। সদস্য পদ নবায়ন হলেই আগামী ২৯জুনের নির্বাচনে ভোটার হতে পারবে। এ ঘোষনার পর নতুন কোন ব্যক্তি লালন একাডেমির সদস্য হতে পারবেন কিন্তু তারা আগামী ২৯জুনের নির্বাচনে ভোটার হতে পারবে না। লালন একাডেমির নির্বাচন চলতি বছরের ২৯জুন অনুষ্ঠানের জন্য কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসন সকল প্রকার প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে একাডেমিতে নতুন লোকবল নিয়োগ দিচ্ছেন। নির্বাচন সংক্রান্ত সকল প্রকার তথ্য ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাদীর জন্য সর্ব সাধারণকে লালন একাডেমিতেই যোগাযোগ করতে হবে।   

  

শুক্রবার, ১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩

কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের ২২ কোটি টাকার টেন্ডার ভাগাভাগির পাঁয়তারা

আরিফ মেহমুদ ॥ জলবায়ূ ট্রাস্ট ফান্ডের আওতায় কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ড আমলা ডিভিশনের  অধীন দৌলতপুর-মহিষকুণ্ডী প্রতিরক্ষা বাঁধের ২২ কোটি টাকার টেন্ডার একটি চরমপন্থী গ্র“পের সহযোগিতায় ভাগাভাগি করে নেওয়ার পাঁয়তারা করছে কুষ্টিয়া মিরপুর উপজেলার আমলা এলাকার ক্ষমতাসীন দলের এক প্রভাবশালী টেন্ডারবাজ নেতা। ৭ গ্র“পে বিভক্ত ওই টেন্ডার যাতে শুধু আমলা ডিভিশনে সিঙ্গেল ড্রপিং করা হয় এর জন্য চরমপন্থী কানেক্টেড ওই নেতা  মরিয়া হয়ে উঠেছেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে,টেন্ডার ড্রপিং সংক্রান্ত আইন পিপিআর-এর ৯৬ ধারার (১১) উপধারা (খ) অনুচ্ছেদে উল্লেখ করা আছে বড় কাজের টেন্ডার মাল্টিপল ড্রপিং (একাধিক জায়গায়) করার জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগ বা মন্ত্রণালয়ের সচিব কর্তৃক অনুমোদিত হতে হবে। এর আলোকে আমলা ডিভিশনের ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুস সাত্তার দৌলতপুর-মহিষকুণ্ডি প্রতিরক্ষা বাঁধের ২২ কোটি টাকার টেন্ডার আহ্বানের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানোর সময় ওই নেতা বাধার সৃষ্টি করেন। শুধু আমলা ডিভিশনে টেন্ডার ড্রপিং করার জন্য ওই নেতা চাপ সৃষ্টি করে চলেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। কারণে এই মিশনে তিনি সফল হলে হাতিয়ে নেবেন ১৫ শতাংশ হিসেবে ৩ কোটি ৩০ লাখ টাকা। তার এই অবৈধ মিশন সফল করার জন্য কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রজেক্ট ডাইরেক্টর ওবায়দুর রহমান সার্বিক সহযোগিতা করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ব্যাপারে প্রজেক্ট ডাইরেক্টর ওবায়দুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, যেহেতু বড় কাজ সেহেতু মাল্টিপল ড্রপিংয়ের বিকল্প নেই। আমরা সব ঠিকঠাক করে মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দিয়েছি। টেন্ডারবাজদের চাপ সৃষ্টির বিষয়টি তিনি কৌশলে এড়িয়ে যান। এদিকে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে সিনিয়র সচিব শেখ আলতাফ আলী আমাদের সময়কে জানান, যাতে কেউ টেন্ডারবাজি করতে না পারে সে জন্য কুষ্টিয়া দৌলতপুর-মহিষকুণ্ডি প্রতিরক্ষা বাঁধের ২২ কোটি টাকার টেন্ডার মাল্টিপল ড্রপিংয়ের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

খাদ্যে ভেজাল ও ক্ষতিকারক রাসায়নিক দ্রব্য প্রতিরোধের আলোচনায় কেএম রাহাতুল

আরিফ মেহমুদ ॥ কুষ্টিয়া জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কে এম রাহাতুল ইসলাম বলেছেন, আমরা নিত্য প্রয়োজনে প্রতিদিন যে খাদ্য দ্রব্য কিনছে তার সবগুলোই বিভিন্ন মাত্রায় হয় ভেজাল যুক্ত, নতুবা ক্ষতিকর রাসায়নিক দ্রব্য মিশ্রিত। কখনোই নিরাপদ নয়, বিষযুক্ত খাদ্য। খাদ্যে ভেজাল এদেশে নতুন কোন বিষয় নয়। তবে এখন যে পরিমান খাদ্যে ভেজাল এবং ক্ষতিকর রাসায়নিক দ্রব্যাদি মেশানো হচ্ছে তা তিন দশক আগে কল্পনা করাও ছিল অনৈতিক। অতি মুনাফালোভিদের বিবেক বর্জিত আচরণে ভেজাল আজ আমাদের দেশে জাতীয় সমস্যায় রূপ নিয়েছে। খাদ্যে ভেজালের কারনে আমরা আমাদের আগামী প্রজন্ম সন্তানদের কোনভাবেই যেন খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারছিনা।ভেজালের ব্যাপ্তি ও পরিনতি সম্পর্কে গণসচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। আগামীতে  আমাদের সন্তানদের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে খাদ্যে ভেজাল ও ক্ষতিকর রাসায়নিক দ্রব্য মিশ্রণ জনিত কারণে জনস্বাস্থ্যের হুমকি প্রতিরোধে আইন প্রয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি ভূক্তভোগিদের এগিয়ে আসতে হবে। গতকাল মঙ্গলবার সকালে জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসন ও জেলা তথ্য অফিসের আয়োজনে খাদ্যে ভেজাল ও ক্ষতিকর রাসায়নিক দ্রব্য মিশ্রণ এবং জনস্বাস্থ্যের হুমকি প্রতিরোধে জনসচেতনতা সৃষ্টি বিষয়ক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। আলোচনা সভার আগে সকাল সাড়ে ১০টায় বড় বাজার ব্যবসায়ী সমিতির কার্যালয় হতে একটি বর্ণাঢ্য র‌্যালী বের করা হয়। র‌্যালীতে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসন, জেলা তথ্য অফিসের কর্মকর্তাসহ জেলার বিভিন্ন ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান ও এনজিও প্রতিনিধিগণ অংশ গ্রহণ করে। র‌্যালীটি শহরের প্রধান এনএস রোড প্রদক্ষিণ শেষে জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে আলোচনা সভায় এসে শেষ হয়। কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট ড.মল্লিক আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন জেলা তথ্য অফিসার তৌহিদুজ্জামান। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কুষ্টিয়া চেম্বারের সাবেক সভাপতি আশরাফ উদ্দিন নজু, বড় বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মোকাররম হোসেন মোয়াজ্জেম, সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম,এন এস রোড দোকান মালিক ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি পারভেজ মজমাদার ও ক্যাবের কুষ্টিয়া জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক নাফিজ আহমেদ খান টিটু প্রমুখ। সভায় উম্মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন বিশিষ্ট ফল ব্যবসায়ী জাহিদুর রহমান মুকুল। সভাপতির বক্তব্যে ড.মল্লিক আনোয়ার হোসেন বলেন, আমরা বাজারে গেলে ভাল জিনিষের প্রতি বেশি আগ্রহী হয়ে উঠি। কিন্তু সেটি কতটুকু ভেজালমুক্ত ভাল সে বিষয়ে সচেতন নই কেউ। বক্তাদের বক্তব্য অনুসারে প্রকৃতপক্ষে ভেজালের উৎপত্তিস্থল বড় বড় ফল আমদানীকারক প্রতিষ্ঠান। ভেজালের ক্ষতিকারক দিক ও রাসায়নিক দ্রব্য মিশ্রণে জনস্বাস্থ্য হুমকির বিষয় তুলে ধরে তাদের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। অন্য দিকে ভেজাল প্রতিরোধে ভেজালের উৎপত্তিস্থল তৃণমূল এলাকায় আঘাত হানতে হবে। বেশি বেশি করে গ্রাম বা তৃণমূল পর্যায়ে সভা সেমিনার করতে হবে। ভেজাল থেকে মুক্তির জন্য ভেজাল বিরোধী অভিযান জোরদার করা জরুরী। অসাধু ব্যবসায়ীদের লাইসেন্স বাতিল ও শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। ভেজাল বিরোধী আন্দোলনে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে অংশগ্রহণ করতে হবে। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন স্থানে ফরমালিনমুক্ত বাজার ঘোষনা করা হচ্ছে। আসুন আমরা সম্মিলিতভাবে ভেজাল ও রাসায়নিক দ্রব্য মিশ্রণে জনস্বাস্থ্য হুমকি প্রতিরোধে সকল বাজারকেই ফরমালিনমুক্ত ঘোষনা করি এবং সকলে ঐক্যবদ্ধভাবে ভেজাল ও ক্ষতিকারক দ্রব্য পরিহার করি। আলোচনা শেষে দুপুর ২টা থেকে শহরের বিভিন্ন স্থানে ভ্রাম্যমান সঙ্গীতানুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।