বৃহস্পতিবার, ৭ মার্চ, ২০১৩

আইনশৃংখলা সভায় সৈয়দ বেলাল হোসেন স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তিকে প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেয়া হবে


 আরিফ মেহমুদ ॥ কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক সৈয়দ বেলাল হোসেন বলেছেন, স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি সাধারণ মানুষের ধর্মভীরুতাকে পুজি করে সমাজে নানান বিভ্রান্তিকর বিশংখলা সৃষ্টি করছে। তারা দেশে ইসলাম রক্ষার নামে ষড়যন্ত্র করে মিথ্যা গুজব রটিয়ে ধর্মীয় উম্মাদনা সৃষ্টি করে নিজেদের মহান বানানোর চেষ্টা চালাচ্ছে। মিথ্যা গুজবে কান না দিয়ে নিজেদেরকে তাদের গতিবিধি প্রতিরোধে বুঝে শুনে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এদেশ আমার আপনার সবার। দেশ রক্ষায় ঐক্যবদ্ধভাবে তাদের মোকাবেলা করার উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। ধমীয় উম্মাদনা সৃষ্টিকারী অপতৎপরতাকে মোকাবেলা করতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। এদের প্রতিরোধে প্রয়োজনে পাড়ায় পাড়ায় সন্ত্রাস প্রতিরোধ কমিটি গঠন করেত হবে। যাতে কোন ভাবেই স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তিরা মিথ্যা কথা বলে সমাজের শান্তি প্রিয় সাধারণ মানুষকে পথে নামাতে না পারে।  সমাজ থাকলে কমবেশি অপরাধ থাকবে। সেই অপরাধ যেন সর্বক্ষেত্রে তার বিস্তার ঘটাতে না পারে সেদিকে লক্ষ্য রেখে আইনশৃংখলা রক্ষায় নিয়োজিত পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবি সহ সংশ্লিষ্ট বাহিনীকে এর মধ্য দিয়েই এগিয়ে যেতে হবে। ঘটনা যতই নির্মম হোক না কেন আইনশৃংখলা পরিস্থিতি বিঘœকারী, সন্ত্রাসী, চরমপন্থী সহ সকল অপরাধী সে যে দলের কিংবা যতই শক্তিশালি হোক না কেন তাদেরকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে। ঘটনা নিয়ন্ত্রণ করতে নিয়ন্ত্রণকারীরা কি ব্যবস্থা নিলেন তার সচ্ছ প্রতিচ্ছবি গণমাধ্যমে সঠিক ভাবে উঠে আসলে বাহিনীর সদস্যরা কাজ করতে উৎসাহী হয়ে উঠবে। জেলার আইনশৃংখলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ এবং সন্ত্রাস জঙ্গীবাদ নির্মুলে ও মিথ্যা গুজব রটনাকারী অপশক্তিকে প্রতিরোধ করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। দু’একটি বিছিন্ন ঘটনা ছাড়া জেলাবাসী বর্তমানে একটা ভাল সময় পার করছে। বিগত যে কোন সময়ের চেয়ে বর্তমানে জেলার আইনশৃংখলা পরিস্থিতি অনেক ভাল এবং নিয়ন্ত্রিত রয়েছে। আইনশৃংখলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি সহ অন্যান্য আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী আগের চেয়ে আরো সক্রিয় ভূমিকা রাখবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসকের সভাকক্ষে জেলা আইনশৃংখলা কমিটির সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। প্রজেক্টরের মাধ্যমে বিগত মাসের প্রতিবেদন তুলে ধরেন কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট ড.মল্লিক আনোয়ার হোসেন। তাকে সার্বিক সহযোগিতা করেন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও আরডিসি জাহিদুল ইসলাম, এস এম জামাল আহমেদ, সৈয়দ আশরাফুজ্জামান ও মোহাম্মদ রাসেল মিয়া। সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার মফিজ উদ্দিন আহম্মেদ, কুষ্টিয়া সরকারী মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড.জমির উদ্দিন, কুষ্টিয়া সরকারী কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর বদরুদ্দোজা, জেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক আজগর আলী, সহ-সভাপতি হাজী রবিউল ইসলাম, বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ আব্দুল বারী জোয়াদ্দার, র‌্যাব কমান্ডিং অফিসার রাশেদ ফিয়াম, জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক নিভারানী পাঠক, ৩২ বিজিবি’র প্রতিনিধি সুবেদার সাখাওয়াত হোসেন, কুষ্টিয়ার জেল সুপার নুরুল ইসলাম, জেলা তথ্য কর্মকর্তা তৌহিদুজ্জামান, জেলা শিক্ষা অফিসার নিখিল রঞ্জন চক্রবর্তী, প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুল আলীম, কুষ্টিয়া চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডানিট্রজ’র সহ-সভাপতি এসএম কাদেরী শাকিল. বড় বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন মোকাররম, জেলা বাস-মিনিবাস মালিক গ্র“পের সিনিয়র সহ-সভাপতি আকিল উদ্দিন আহমেদ, এ্যাড.আব্দুল্ল¬াহেল বাকী,এ্যাড.নিজামূল হক চুন্নু, বিআরটিএ’র ইন্সপেক্টর হুমায়ূন কবির, জেলা জাসদের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আলীম স্বপন, নারীনেত্রী আলম আরা জুই, মাদকদ্রব্য অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আইউব আলী মিয়া, সমাজ সেবার ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক আব্দুল গনি, পল্লী বিদ্যুতের জিএম মুখলেছ গনি, ইসলামী ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক আব্দুল হামিদ খান, বিশিষ্ট দৌড়বিদ জেমস জয় মল্লিক, এনএসআই’র সহকারী পরিচালক ছানোয়ার হোসেন, জেলা মহিলা কর্মকর্তা হাসিনা বেগম প্র্রমুখ। সভায় কমিটির সদস্যরা জেলার আইনশৃংখলার উন্নতি হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেন। সেই সাথে দেশের স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি জঙ্গীবাদ জামায়াতে ইসলামী সংগঠনের জঙ্গীরা যাতে কুষ্টিয়ার শান্তি প্রিয় সাধারণ মানুষকে মিথ্যা কথা ও প্রলোভন দেখিয়ে রাস্তায় নামাতে না পারে সে দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। এসব ধর্মের নামে বিশৃংখলাকারী, সমাজ ও দেশ বিরোধীদের প্রকৃত ও সঠিক তালিকা তৈরী করে তাদে প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবাস্থা নেয়ার উদ্যোগ গ্রহনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। পুলিশের উপর হামলা করে তাদের নিহত করায় নিন্দা জ্ঞাপন করেন। এদেশে জঙ্গীবাদ জঙ্গী যেন মাথা চাড়া দিতে না পারে সে জন্য তাদের গডফাদারদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে নির্দেশ দেয়া হয়। কুষ্টিয়া চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডানিট্রজ’র সহ-সভাপতি এসএম কাদেরী শাকিল প্রস্তাব অনুসারে দেশের রাজনৈতিক অবস্থার কথা বিবেচনায় নিয়ে যে সপ্তাহে হরতাল থাকবে সেই সপ্তাহের শুক্রবার কুষ্টিয়ার সকল দোকান-পাঠ খোলা রাখার নিদ্ধান্ত নেয়া হয়। যদি দোকানদারদের কেউ নানান ভয়ভীতি দেখিয়ে যদি কোন ফায়দা লোটার চেষ্টা করে তাহলে নিকটস্থ পুলিশে খবর দেয়ার অনুরোধ করা। ইসলামিক ফাইন্ডেশনের সুযোগ সুবিধা ভোগকারী  মসজিদের ঈমাম ও মাদ্রাসার অধ্যক্ষদের বিরুদ্ধে ধর্মীয় উম্মাদনা সৃষ্টির প্রমান সাপেক্ষে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। সেই সাথে সরকারী বিরোধী প্রচার-প্রচারনা ও সরকারী অনুমোদন ছাড়া বিজ্ঞাপন সহ নানান কর্মসূচী দেখানো স্যাটকম কিংবা কেবল নেটওয়াকিংয়ের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। পরিশেষে সভায় চলতি বছরের ফেব্র“য়ারী-জানুয়ারী মাসের জেলার ৬টি উপজেলা ও ৭ টি থানায় সংঘঠিত ডাকাতী, দস্যুতা, খুন, দাংগা, দাংগাসহ খুন, নারী নির্যাতন, অপহরণ,পুলিশের কাজে বাধাদান, সিঁদেল, পশু, ও তার চুরি, অস্ত্র আইন, চোরাচালান ও অন্যান্য অপরাধের পরিসংখ্যান প্রজেক্টরের মাধ্যমে দেখানো হয়। এতে চলতি বছরের ফেব্র“য়ারী মাসে ১৪৩টি এবং জানুয়ারী মাসে ১৪৬টি অপরাধের পরিসংখ্যান তুলে ধরা হয়।

  

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন