নিজ সংবাদ ॥ কুষ্টিয়ায় ট্রাকে অগ্নিসংযোগ, ককটেল বিস্ফোরণ সহ কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা মধ্য দিয়ে গতকাল মঙ্গলবার সারা দেশের ন্যায় বিএনপি’র ডাকা সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ঢিলেঢালাভাবে পালিত হয়েছে। সকাল থেকেই বিএনপি, ছাত্রদল,যুবদল, সেচ্ছাসেবকদল সহ বিএনপি ও তার অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা শহরের বিভিন্ন জনগুরুত্বপূর্ণ মোড়ে অবস্থান নেয় এবং আতঙ্ক ছড়াতে ভোরে কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়কের ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানার শান্তিডাঙ্গায় একটি ট্রাকে আগুন ধরিয়ে দেয় হরতাল সর্মথকরা। যশোর-ট ১১-২৬৮৫ নং ট্রাকটি কুষ্টিয়া থেকে যশোর যাওয়ার সময় পিকেটাররা এই ট্রাকটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক এমপি সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রূমীর নেতৃত্বে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯ টায় কুষ্টিয়া শহরের প্রধান সড়ক এনএস রোডে হরতালের সমর্থনে মিছিল বের করে বিএনপি। এ সময় পিকেটিংকারীরা সড়কের উপর টায়ারে অগ্নিসংযোগ করে। পরে পুলিশ আসলে পিকেটাররা পালিয়ে যায়। এদিকে আতংক ছড়াতে কুষ্টিয়া ইসলামী কলেজের সামনে, কাটাইখানা মোড়ে, ত্রিমোহনী মোড়সহ বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে ককটেল বোমার বিস্ফোরণ ঘটায় পিকেটাররা। এর আগে কেন্দ্রীয়ভাবে হরতালের ডাক দেওয়ার পর সোমবার সন্ধ্যায় কুষ্টিয়ায় জেলা বিএনপি হরতালের সমর্থনে মিছিলের চেষ্টা করলে পুলিশ তাতে বাধা দেয়। এদিকে বিএনপি’র ডাকা সকাল-সন্ধ্যা হরতালে কুষ্টিয়াবাসীর জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত ও আইনশৃংখলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ রাখতে এবং হরতালের পিকেটারদের ধবংসাত্বক কার্যকলাপ প্রতিরোধ করতে পুলিশ সকাল থেকেই শহরের বিভিন্ন মোড়ে অবস্থান নেয়। সকাল থেকেই কুষ্টিয়ার প্রধান এন এস রোডসহ শহরতলীর বিভিন্ন সড়কে রিকশা, অটোরিকশা ও অভ্যন্তরীণ রুটের বাস চলতে দেখা গেছে। ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক থাকলেও দুরপাল¬ার কোন বাস ছেড়ে যায়নি কুষ্টিয়া কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে। সরকারি প্রতিষ্ঠানের মতো বেসরকারি ব্যাংক বীমাসহ সব প্রতিষ্ঠানেও স্বাভাবিক কাজ কর্ম চলেছে। তবে জেলা শহরের আইনশৃংখলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও জননিরাপত্তা নিশ্চিত এবং হরতালে জামায়াত-শিবির কর্মীদের পিকেটিং ও ধবংসাত্বক কার্যকলাপ প্রতিরোধ করতে পুলিশ-র্যাব খুব সকাল থেকেই শহরের বিভিন্ন মোড়ে সতর্ক অবস্থান নেয়। হরতালের কারনে সকালে কুষ্টিয়া জেলা শহরে বিভিন্ন অফিস আদালতে আসতে জনসাধারণ ও চাকুরীরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কিছুটা সমস্যা দেখা দিলেও তা ছিল ক্ষনিকের। কুষ্টিয়া কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে দূরপাল্লার কোন বাস না ছাড়লেও কোন বাধা ছাড়াই অভ্যন্তরিন রুটে রিকশা, অটোরিকশা চলাচলা করেছে সারাদিনই। নছিমন, অটোবাইক ও বেবিটেক্সি অবাধে চলাচল করেছে। তবে চৌড়হাসের কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল ছিল জনশূন্য থমথমে অবস্থা। অফিস-আদালত আংশিক খোলা ছিল, কাজ চলেছে স্বাভাবিক গতিতেই। কুষ্টিয়া কোর্টের বিচার কাজ চলেছে স্বাভাবিক গতিতেই বিচার প্রার্থীদের উপস্থিতিও ছিল অন্যান্য দিনের মতই। হরতাল চলাকালীন সময় এ রকম চিত্রই দেখা গেছে কুষ্টিয়া শহরের বিভিন্ন জনবহুল বাজার ও গুরুত্বপূর্ন মোড়গুলোতে। তবে আইনশৃংখলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সকাল থেকেই শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতে পুলিশ মোতায়েন ছিল। জেলার উপজেলাগুলোতেও শান্তিপুর্ন পরিবেশে হরতাল পালিত হয়েছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন