শুক্রবার, ১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৩

খাদ্যে ভেজাল ও ক্ষতিকারক রাসায়নিক দ্রব্য প্রতিরোধের আলোচনায় কেএম রাহাতুল

আরিফ মেহমুদ ॥ কুষ্টিয়া জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কে এম রাহাতুল ইসলাম বলেছেন, আমরা নিত্য প্রয়োজনে প্রতিদিন যে খাদ্য দ্রব্য কিনছে তার সবগুলোই বিভিন্ন মাত্রায় হয় ভেজাল যুক্ত, নতুবা ক্ষতিকর রাসায়নিক দ্রব্য মিশ্রিত। কখনোই নিরাপদ নয়, বিষযুক্ত খাদ্য। খাদ্যে ভেজাল এদেশে নতুন কোন বিষয় নয়। তবে এখন যে পরিমান খাদ্যে ভেজাল এবং ক্ষতিকর রাসায়নিক দ্রব্যাদি মেশানো হচ্ছে তা তিন দশক আগে কল্পনা করাও ছিল অনৈতিক। অতি মুনাফালোভিদের বিবেক বর্জিত আচরণে ভেজাল আজ আমাদের দেশে জাতীয় সমস্যায় রূপ নিয়েছে। খাদ্যে ভেজালের কারনে আমরা আমাদের আগামী প্রজন্ম সন্তানদের কোনভাবেই যেন খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারছিনা।ভেজালের ব্যাপ্তি ও পরিনতি সম্পর্কে গণসচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। আগামীতে  আমাদের সন্তানদের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে খাদ্যে ভেজাল ও ক্ষতিকর রাসায়নিক দ্রব্য মিশ্রণ জনিত কারণে জনস্বাস্থ্যের হুমকি প্রতিরোধে আইন প্রয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি ভূক্তভোগিদের এগিয়ে আসতে হবে। গতকাল মঙ্গলবার সকালে জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসন ও জেলা তথ্য অফিসের আয়োজনে খাদ্যে ভেজাল ও ক্ষতিকর রাসায়নিক দ্রব্য মিশ্রণ এবং জনস্বাস্থ্যের হুমকি প্রতিরোধে জনসচেতনতা সৃষ্টি বিষয়ক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। আলোচনা সভার আগে সকাল সাড়ে ১০টায় বড় বাজার ব্যবসায়ী সমিতির কার্যালয় হতে একটি বর্ণাঢ্য র‌্যালী বের করা হয়। র‌্যালীতে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসন, জেলা তথ্য অফিসের কর্মকর্তাসহ জেলার বিভিন্ন ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান ও এনজিও প্রতিনিধিগণ অংশ গ্রহণ করে। র‌্যালীটি শহরের প্রধান এনএস রোড প্রদক্ষিণ শেষে জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে আলোচনা সভায় এসে শেষ হয়। কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট ড.মল্লিক আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন জেলা তথ্য অফিসার তৌহিদুজ্জামান। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কুষ্টিয়া চেম্বারের সাবেক সভাপতি আশরাফ উদ্দিন নজু, বড় বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মোকাররম হোসেন মোয়াজ্জেম, সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম,এন এস রোড দোকান মালিক ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি পারভেজ মজমাদার ও ক্যাবের কুষ্টিয়া জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক নাফিজ আহমেদ খান টিটু প্রমুখ। সভায় উম্মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন বিশিষ্ট ফল ব্যবসায়ী জাহিদুর রহমান মুকুল। সভাপতির বক্তব্যে ড.মল্লিক আনোয়ার হোসেন বলেন, আমরা বাজারে গেলে ভাল জিনিষের প্রতি বেশি আগ্রহী হয়ে উঠি। কিন্তু সেটি কতটুকু ভেজালমুক্ত ভাল সে বিষয়ে সচেতন নই কেউ। বক্তাদের বক্তব্য অনুসারে প্রকৃতপক্ষে ভেজালের উৎপত্তিস্থল বড় বড় ফল আমদানীকারক প্রতিষ্ঠান। ভেজালের ক্ষতিকারক দিক ও রাসায়নিক দ্রব্য মিশ্রণে জনস্বাস্থ্য হুমকির বিষয় তুলে ধরে তাদের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। অন্য দিকে ভেজাল প্রতিরোধে ভেজালের উৎপত্তিস্থল তৃণমূল এলাকায় আঘাত হানতে হবে। বেশি বেশি করে গ্রাম বা তৃণমূল পর্যায়ে সভা সেমিনার করতে হবে। ভেজাল থেকে মুক্তির জন্য ভেজাল বিরোধী অভিযান জোরদার করা জরুরী। অসাধু ব্যবসায়ীদের লাইসেন্স বাতিল ও শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। ভেজাল বিরোধী আন্দোলনে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে অংশগ্রহণ করতে হবে। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন স্থানে ফরমালিনমুক্ত বাজার ঘোষনা করা হচ্ছে। আসুন আমরা সম্মিলিতভাবে ভেজাল ও রাসায়নিক দ্রব্য মিশ্রণে জনস্বাস্থ্য হুমকি প্রতিরোধে সকল বাজারকেই ফরমালিনমুক্ত ঘোষনা করি এবং সকলে ঐক্যবদ্ধভাবে ভেজাল ও ক্ষতিকারক দ্রব্য পরিহার করি। আলোচনা শেষে দুপুর ২টা থেকে শহরের বিভিন্ন স্থানে ভ্রাম্যমান সঙ্গীতানুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।   

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন