বৃহস্পতিবার, ২৫ অক্টোবর, ২০১২

কুষ্টিয়ার একদিনে তিন লাশ উদ্ধার পুলিশ প্রশাসনে তোলপাড়

আরিফ মেহমুদ ॥ কুষ্টিয়ায় পৃথক ঘটনায় মহিলাসহ ৩টি লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। একদিনে ৩টি হত্যার ঘটনায় হঠাৎ করে ভাবিয়ে তুলেছে জেলা পুলিশকে। এ নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে কুষ্টিয়ার পুলিশ প্রশাসনে। নিহতরা হলো- পাবনা জেলার মন্ডলপাড়ার লিটনের মেয়ে পিয়া (১৯), কুষ্টিয়ার পান্টি গ্রামের ওয়ালিয়ারের ছেলে উজ্জল হোসেন (২৮) ও অজ্ঞাত (৩০)। পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সুত্রে জানা যায়, গতকাল বুধবার সকালে কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানার বারুইপাড়া গ্রামের ছাত্তার আলীর বাড়ির সংলগ্ন ক্যানেলের পাশে জবাই করা একটি লাশ দেখতে পায় স্থানীয়রা। পরে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানা পুলিশকে জানালে পুলিশ নিহতের মস্তক বিহিন দেহ উদ্ধার করে। স্থানীয়দের অপর এক সংবাদে পাশ্ববর্তী সোনাইডাঙ্গা গ্রামের কালভার্ট থেকে ওই ব্যাক্তির মাথা উদ্ধার করে পুলিশ। এখন পর্যন্ত পুলিশ নিহতের পরিচয় জানতে পারেনী। এ ঘটনায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানা পুলিশ হত্যাকারীদের গ্রেফতারে সাড়াশী অভিযান পরিচালনা করছে। দুই একদিনের মধ্যে হত্যাকারীদের গ্রেফতারে আসাবাদী ওসি শেখ আতিয়ার রহমান। কুমারখালী উপজেলার পান্টি দক্ষিণ পাড়া এলাকা থেকে উজ্জ্বল (২৫) নামের এক যুবকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। উজ্জল পান্টির দক্ষিণ পাড়ার ওয়ালিয়ার রহমান শেখের ছেলে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, গতকাল সকালে কুমারখালীর পান্টি দক্ষিণ পাড়া এলাকার সোহেল নামে এক ব্যাক্তির বাড়ির দক্ষিণ পাশে আম বাগানে উজ্জলের ঝুলান্ত লাশ দেখতে পায়। পরে উজ্জল হোসেনের পরিবারে লোকজন কুমারখালী থানা পুলিশকে জানালে পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে। এ সময় পুলিশ নিহত উজ্জলের মুখে লাল টেপ ও নির্যাতনের চিহ্ন দেখতে পায়। তবে তার পুরুষ অঙ্গে বীর্যাংশ থাকায় নারী ঘটিত কোন কারনে তাকে হত্যা করা হয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। এদিকে কুষ্টিয়া শহরের লাহিনী বটতলা এলাকায় যৌতুকের দাবীতে পিয়া (১৬) নামের এক গৃহবধুকে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত মঙ্গলবার রাতে কুষ্টিয়ার লাহিনী বটতলার খুলাপাড়া এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটে। জানাগেছে, পাবনা জেলার মন্ডলপাড়ার লিটনের মেয়ে পিয়ার বিয়ে হয় কুষ্টিয়ার লাহিনী বটতলার খুলুপাড়ার শামীমের সাথে। বিয়ের মাত্র ৪ মাস না হতেই ৪০ হাজার টাকা দাবী করে শামীমের পরিবার। এক পর্যায়ে শামীম পিয়াকে তার বাবার বাড়ীতে টাকা আনতে বলে। এতে পিয়া অপারগতা প্রকাশ করলে নির্যাতন করা হয়। এক পর্যায়ে পিয়ার মৃত্যু হলে তাকে গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঝুলিয়ে দেয়া হয়েছে বলে পরিবারের অভিযোগ। এ ঘটনায় মডেল থানা পুলিশ মৃত পিয়ার লাশ উদ্ধার করেছে। পৃথক তিন ঘটনায় পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত করতে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেছে। এদিকে এ ঘটনার খবর পেয়ে গতকাল সকালে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ কুষ্টিয়া জেলা শাখার নেতৃবৃন্দ হাসপাতালের মর্গে রাখা পিয়ার লাশ দেখতে যায় এবং ঘটনাটির তদন্ত করে। তদন্তকালে উপস্থিত ছিলেন জেলা মহিলা পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক তসলিমা খানম লতা, আন্দোলন সম্পাদক শেফালী আক্তার, সমাজ কল্যাণ সম্পাদক সায়েদা হকসহ মহিলা পরিষদের নেতৃবৃন্দ। কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার মফিজ উদ্দিন আহম্মদ জানিয়েছেন খুনিদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনা হবে। তবে একদিনে পৃথক তির স্থান থেকে ৩টি লাশ উদ্ধার হওয়ায় কেবল সাধারণের মাঝে নয় পুলিশ প্রশাসনের মাঝেও আলোড়ন সৃষ্টি হয়েঠে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন