এ.এইচ.এম.আরিফ,কুষ্টিয়া ॥ বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহের স্বরণোৎসবকে লালনের বাড়িতে মানুষের ঢল নেমেছে। সব পথ যেন এসে মিশে গেছে মরা কালীর নদীর তীরে আখড়া বাড়িতে। শহর থেকে মাত্র ১০ মিনিটের রাস্তা ছেঁউড়িয়া। কিন্তু এখন সে রাস্তায় যেতে সময় লাগছে ১ ঘন্টার উপরে। সাঁইজির টানে এ ধামে বাউলেরা ছাড়াও সাধারণ দর্শনার্থীদের ভিড়ই বেশি। গতকাল বৃস্পতিবার বাউলের চারণভূমিতে আসা হাজার হাজার লালন-ভক্ত, সাধু-গুরু কর্তৃপরে দেওয়া সকালের অধিবাসে পায়েশ ও মুড়ির বাল্যসেবা গ্রহণ করেন। দুপুরে তাঁরা মরা কালী গঙ্গায় গোসল সেরে ইলিশ মাছ-ভাত ও ত্রিব্যঞ্জন দিয়ে (তিন ধরনের সবজি দিয়ে তৈরি তরকারি) দুপুরের খাবার পুণ্যসেবা গ্রহণ করেন। পুণ্যসেবা গ্রহণ কে কেন্দ্র করে দুপুর ১টা, লালন একাডেমীর প্রধান ফটক তখন বন্ধ। ভিতরে লাইন দিয়ে কলা পাতা সামনে নিয়ে হাজার হাজার সাধু ফকিরের অপো। একটু পরেই একযোগে শুরু হলো খাবার বিতরণ। তবে কোন তাড়াহুড়ো নেই। সবাই খাবার পাবার পর বিশেষ আওয়াজ দিয়ে জানিয়ে দেয়া হলো বিতরণ শেষ। এবার খাওয়া শুরু হলো একযোগে। ইলিশ মাছ,ভাত ও সবজি দিয়ে প্রায় ৫ হাজার বাউল,সাধু ফকির পূর্ণসেবা গ্রহণ করেন। এছাড়া দই মিষ্টি খাওয়ানো হয়। কোন দাওয়াত নেই, পত্র নেই, তবুও মানুষ ছুটে আসে দলে দলে, হাজারে হাজারে। কোন সে উদাসী ডাকে তা কেউ জানে না? মূল গেট থেকে ভিকরে ঢুকে অডিটোরিয়ামের নিচে বসে প্রবীণ বাউল নহির শাহ। বয়স প্রায় ৬৮ বছর। শিষ্যদের নিয়ে গানে মজেছিলেন। এখনো আটা স্বাস্থ্য। দেখে বোঝা যায় না বয়স। গান থামালে কথা হয় এ বাউলের সাথে। গান দিয়েই শুরু করেন কথা। খাচার ভিকর অচিন পাখি কবনে আসে যায়। এই দেশেতে এই সুখ হলো আবার কোথায় যায়না জানি । গানের মর্ম কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন বুঝে নিতে হবে। স্মরণোৎসবে প্রতিবছরের মতো এবারও সাধক লালনের আধ্যাত্মিক দর্শন লাভের আশায় দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ প্রাণের টানে ছুটে আসেন। একতারা, দোতারা, ঢোল ও বাঁশির সুরে মুখরিত হয়ে উঠেছে লালনভূমি ছেঁউড়িয়া। একই সাথে চলছে দীা পর্ব। নব্য শিষ্যরা গুরুদের সেবা করতে উদগ্রীব। যেন কোন কষ্ট না হয় সেদিকে তাদের অটুট ল্য। ঝিনাইদহ থেকে আসা নব্য বাউল ফকির করিম জানান, এ পথে আসা দু’মাস হয়েছে। এখনো কিছুই শিখতে পারিনি। গুরুর সাথেই থাকি দিনরাত। তার খেদমত করায় আমার কাছ। গুরু বলেছে সময় হলে গুরুবাক্য দেয়া হবে। বাউলসাধক ফকির লালন শাহের জীবন-কর্ম, জাতহীন মানবদর্শন, মরমি সংগীত ও চিন্তা-চেতনা এখন আর এই ছেঁউড়িয়ার পলি−তেই সীমাবদ্ধ নেই। দেশের সীমানা পেরিয়ে তা এখন ছড়িয়ে পড়েছে বিশে¡। তাঁর সংগীত ও ধর্ম-দর্শন গবেষণার বিষয়বস্তুতে পরিণত হয়েছে।
লালন শাহ তার জীবদ্দশায় দোল পূর্ণিমায় আখড়াবাড়িতে ভক্ত-অনুসারীদের নিয়ে সারা রাত গান-বাজনা ও নানা তত্ত্ব কথা আলোচনা করতেন। সাঁইজির দেহ ত্যাগের পরও এ ধারা অব্যাহত রয়েছে। সারা আঁখড়া বাড়ি ও মাঠই এখন গানের মঞ্চ। ছোট ছোট বাউল পরিবারেই চলছে গান। ‘ধর চোর হাওয়ার ঘরে ফ্দঁ পেতে, বদ হাওয়া লেগেছে পাখির গায়, বাড়ির পাশে আরশী নগর, মানুষ ছাড়া ্যাপা রে তুই কুল হারাবি, মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি, সত্য বল সুপথে চল, এলাহি আলামিন গো আলা বাদশা আলমপনা তুমি’ এ রকম অসংখ্য লালনসংগীতের সুরের মূর্ছনা রাতে লালন একাডেমির শিল্পী ও দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা বাউলেরা পরিবেশন করেন। এ ছাড়া লালন মাজারের আশপাশে ও মরা কালী নদীর তীর ধরে বাউলেরা ছোট ছোট আস্তানা গেড়ে সাঁইজিকে স্মরণ করেছেন তাঁর অমর বানী পরিবেশনের মাধ্যমে। লালন উৎসবে অস্থায়ী দোকানগুলোয় উপচে পড়া ভিড়। খাদ্যসহ খেলনার দোকানগুলোয় ভিড় করতে দেখা গেছে দর্শনার্থীদের। প্রতিদিন সন্ধ্যায় মেলার মাঠের স্থায়ী মঞ্চে বসে আলোচনা সভা। এর পরপরই শুরু হয় লালন একাডেমির শিল্পীদের গান। উদ্বোধনী দিনে কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক বনমালী ভৌমিকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কুষ্টিয়া ৪-কুমারখালী-খোকসা আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য বেগম সুলতানা তরুণ। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ফজলুর রহামন, কুষ্টিয়া পৌরসভার মেয়র আনোয়ার আলী, কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুভাষ চন্দ্র সাহা, জেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক আজগর আলী, ওয়ালটনের নির্বাহী পরিচালক হুমায়ূন কবির, পঞ্চগড় প্রেসকাবের সভাপতি এ রহমান মুকুল, কুমারখালী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ, প্রধান আলোচক হিসেবে আলোচনা করবেন বিশিষ্ট সাংবাদিক ও ইস্পাত পত্রিকার সম্পাদক আলহাজ্ব ওয়ালিউল বারী চৌধুরী। স্বাগত বক্তব্য রাখবেন কুমারখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মানিকহার রহমান ।
লালন শাহ তার জীবদ্দশায় দোল পূর্ণিমায় আখড়াবাড়িতে ভক্ত-অনুসারীদের নিয়ে সারা রাত গান-বাজনা ও নানা তত্ত্ব কথা আলোচনা করতেন। সাঁইজির দেহ ত্যাগের পরও এ ধারা অব্যাহত রয়েছে। সারা আঁখড়া বাড়ি ও মাঠই এখন গানের মঞ্চ। ছোট ছোট বাউল পরিবারেই চলছে গান। ‘ধর চোর হাওয়ার ঘরে ফ্দঁ পেতে, বদ হাওয়া লেগেছে পাখির গায়, বাড়ির পাশে আরশী নগর, মানুষ ছাড়া ্যাপা রে তুই কুল হারাবি, মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি, সত্য বল সুপথে চল, এলাহি আলামিন গো আলা বাদশা আলমপনা তুমি’ এ রকম অসংখ্য লালনসংগীতের সুরের মূর্ছনা রাতে লালন একাডেমির শিল্পী ও দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা বাউলেরা পরিবেশন করেন। এ ছাড়া লালন মাজারের আশপাশে ও মরা কালী নদীর তীর ধরে বাউলেরা ছোট ছোট আস্তানা গেড়ে সাঁইজিকে স্মরণ করেছেন তাঁর অমর বানী পরিবেশনের মাধ্যমে। লালন উৎসবে অস্থায়ী দোকানগুলোয় উপচে পড়া ভিড়। খাদ্যসহ খেলনার দোকানগুলোয় ভিড় করতে দেখা গেছে দর্শনার্থীদের। প্রতিদিন সন্ধ্যায় মেলার মাঠের স্থায়ী মঞ্চে বসে আলোচনা সভা। এর পরপরই শুরু হয় লালন একাডেমির শিল্পীদের গান। উদ্বোধনী দিনে কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক বনমালী ভৌমিকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কুষ্টিয়া ৪-কুমারখালী-খোকসা আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য বেগম সুলতানা তরুণ। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ফজলুর রহামন, কুষ্টিয়া পৌরসভার মেয়র আনোয়ার আলী, কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুভাষ চন্দ্র সাহা, জেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক আজগর আলী, ওয়ালটনের নির্বাহী পরিচালক হুমায়ূন কবির, পঞ্চগড় প্রেসকাবের সভাপতি এ রহমান মুকুল, কুমারখালী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ, প্রধান আলোচক হিসেবে আলোচনা করবেন বিশিষ্ট সাংবাদিক ও ইস্পাত পত্রিকার সম্পাদক আলহাজ্ব ওয়ালিউল বারী চৌধুরী। স্বাগত বক্তব্য রাখবেন কুমারখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মানিকহার রহমান ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন