লালনের সাধনভূমি কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়া এখন একতারা, ঢোল আর বাঁশির সুরে মাতোয়ারা। দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা বাউলরা গেয়ে চলেছেন লালনের আধ্যাত্মিক গান। বাউলসম্রাটের গানের টানে হাজার হাজার মানুষ ছুটে আসছে ছেঁউড়িয়ার আখড়াবাড়িতে। ফকির লালন শাহর আখড়াবাড়ি এবং বাড়ির সামনের বিশাল মাঠ এখন ভক্ত, সাধক ও দর্শনার্থীদের পদচারণে মুখরিত।
সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় স্থানীয় লালন একাডেমী পাঁচ দিনব্যাপী বার্ষিক লালন স্মরণোৎসবের আয়োজন করেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার ছিল উৎসবের দ্বিতীয় দিন। গত বুধবার রাতে কুষ্টিয়া-৪ (কুমারখালী-খোকসা) আসনের সংসদ সদস্য বেগম সুলতানা তরুণ প্রধান অতিথি হিসেবে উৎসবের উদ্বোধন করেন।
গতকালের অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক বনমালী ভৌমিকের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদের প্রশাসক জাহিদ হোসেন জাফর। লালনের কর্মময় জীবন নিয়ে আলোচনা করেন বিশিষ্ট লালন-গবেষক ও স্থানীয় বরেণ্য ব্যক্তিরা।
লালন একাডেমীর কর্মকর্তারা জানান, এবার উৎসব শুরুর আগেই লালন শাহর মূল আখড়াবাড়ির অডিটরিয়াম চত্বরসহ পুরো এলাকায় হাজার হাজার ভক্ত-অনুসারী আসন গেড়ে বসে। ক্রমে সামনের বিশাল মাঠের সবটুকু ভরে গেছে। পুরো এলাকায় সাধুরা খণ্ড খণ্ড আসর বসিয়ে অবিরাম সাধনা করে চলেছেন লালনসংগীত।
এবারও ভারত, পাকিস্তান, ইংল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া, আমেরিকাসহ বিভিন্ন দেশের লালনভক্তদের আখড়াবাড়িতে দেখা গেছে। আমেরিকা থেকে আসা স্যামবোন বলেন, 'আমি অনেক আগে থেকেই লালন সম্পর্কে অনেক তত্ত্বকথা শুনেছি। এখানে এসেছি লালন সম্পর্কে আরো জানতে। আমার খুবই ভালো লাগছে।'
যশোর থেকে আসা লালনভক্ত ওসমান ফারুক বলেন, 'আমি প্রতিবছর বাবার মাজারে আসি। বাবার ধ্যান করি; ধ্যান শেষে পরিবারের কাছে ফিরে যাই।' রাজশাহীর রহনপুর থেকে আসা শাহজাহান ফকির বলেন, 'শুধু সাঁইজির সিদ্ধি লাভ ও আত্মার শান্তির জন্য আমি নিয়মিত এখানে আসি।' মেহেরপুরের লতা বিশ্বাস বলেন, 'লালন মানবতাবাদী কবি ছিলেন এবং তিনি মানবধর্ম পালন করতেন। তাই আমি আমার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে এখানে এসেছি মানবধর্ম সাধন করতে।'
লালন একাডেমীর সাবেক সহকারী সম্পাদক ও বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির সদস্য এনামূল হক মন্জু জানান, স্মরণোৎসবকে কেন্দ্র করে প্রতিরাতে এখানে স্থাপিত লালন-মঞ্চে রাতভর গান গেয়ে শিল্পীরা হাজার হাজার দর্শক-শ্রোতাকে মাতিয়ে রাখছেন। আর এ গানের টানে বিকেল হলেই এলাকার সব রাস্তায় মানুষের ঢল নামছে।
লালন একাডেমীর সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির সদস্য তাইজাল আলী খান জানান, উৎসবে আসা লালন অনুসারীরা চিরনিদ্রায় শায়িত তাদের ধর্মগুরুর প্রতি বিশেষ শ্রদ্ধা প্রদর্শন করছে। লালনের মূল মাজারের বাইরে বসেছে বিশাল বাউল মেলা। সেখানে বিভিন্ন পসরা সাজিয়ে বসেছেন নানা এলাকা থেকে আসা দুই শতাধিক ব্যবসায়ী। ঐতিহ্যবাহী বিভিন্ন ধরনের খাবার ও বাউল-বাদ্যসহ হরেক রকমের পণ্যসামগ্রী কিনছেন অভ্যাগতরা।
লালন একাডেমীর সভাপতি কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক বনমালী ভৌমিক জানান, উৎসবকে ঘিরে এবার ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ২৫০ জন র্যাব-পুলিশের পাশাপাশি ডিবি ও স্বেচ্ছাসেবকসহ লালন একাডেমীর কর্মকর্তারাও উৎসবে আসা ভক্তদের নিরাপত্তার বিষয়টি তদারকি করছেন। আগামী রবিবার মধ্যরাতে পাঁচ দিনব্যাপী উৎসবের সমাপ্তি হবে।
এদিকে লালন আখড়া-সংলগ্ন লালন মাজার শরিফ ও সেবাসদন কমিটির উদ্যোগে দিনব্যাপী লালন স্মরণোৎসব উদ্যাপিত হয়েছে গতকাল। লালন মাজার শরিফ ও সেবাসদন কমিটির প্রতিষ্ঠাতা ম মনিরুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন জেলা প্রশাসক বনমালী ভৌমিক, বিশিষ্ট লালন-গবেষক অধ্যাপক ড. আবুল আহসান চৌধুরী, ফকির হাসান হাফিজ শাহ প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, বাউলসম্রাট ফকির লালন শাহর জীবন-কর্ম, মানবদর্শন, মরমি সংগীত, চিন্তা-চেতনা ও ধর্মদর্শন গবেষণার বিষয়ে পরিণত হয়েছে। লালনের প্রতি এক উদাসী টান ও আত্মার শান্তির জন্যই ভক্তরা বারবার ছুটে আসে এখানে।
সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় স্থানীয় লালন একাডেমী পাঁচ দিনব্যাপী বার্ষিক লালন স্মরণোৎসবের আয়োজন করেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার ছিল উৎসবের দ্বিতীয় দিন। গত বুধবার রাতে কুষ্টিয়া-৪ (কুমারখালী-খোকসা) আসনের সংসদ সদস্য বেগম সুলতানা তরুণ প্রধান অতিথি হিসেবে উৎসবের উদ্বোধন করেন।
গতকালের অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক বনমালী ভৌমিকের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদের প্রশাসক জাহিদ হোসেন জাফর। লালনের কর্মময় জীবন নিয়ে আলোচনা করেন বিশিষ্ট লালন-গবেষক ও স্থানীয় বরেণ্য ব্যক্তিরা।
লালন একাডেমীর কর্মকর্তারা জানান, এবার উৎসব শুরুর আগেই লালন শাহর মূল আখড়াবাড়ির অডিটরিয়াম চত্বরসহ পুরো এলাকায় হাজার হাজার ভক্ত-অনুসারী আসন গেড়ে বসে। ক্রমে সামনের বিশাল মাঠের সবটুকু ভরে গেছে। পুরো এলাকায় সাধুরা খণ্ড খণ্ড আসর বসিয়ে অবিরাম সাধনা করে চলেছেন লালনসংগীত।
এবারও ভারত, পাকিস্তান, ইংল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া, আমেরিকাসহ বিভিন্ন দেশের লালনভক্তদের আখড়াবাড়িতে দেখা গেছে। আমেরিকা থেকে আসা স্যামবোন বলেন, 'আমি অনেক আগে থেকেই লালন সম্পর্কে অনেক তত্ত্বকথা শুনেছি। এখানে এসেছি লালন সম্পর্কে আরো জানতে। আমার খুবই ভালো লাগছে।'
যশোর থেকে আসা লালনভক্ত ওসমান ফারুক বলেন, 'আমি প্রতিবছর বাবার মাজারে আসি। বাবার ধ্যান করি; ধ্যান শেষে পরিবারের কাছে ফিরে যাই।' রাজশাহীর রহনপুর থেকে আসা শাহজাহান ফকির বলেন, 'শুধু সাঁইজির সিদ্ধি লাভ ও আত্মার শান্তির জন্য আমি নিয়মিত এখানে আসি।' মেহেরপুরের লতা বিশ্বাস বলেন, 'লালন মানবতাবাদী কবি ছিলেন এবং তিনি মানবধর্ম পালন করতেন। তাই আমি আমার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে এখানে এসেছি মানবধর্ম সাধন করতে।'
লালন একাডেমীর সাবেক সহকারী সম্পাদক ও বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির সদস্য এনামূল হক মন্জু জানান, স্মরণোৎসবকে কেন্দ্র করে প্রতিরাতে এখানে স্থাপিত লালন-মঞ্চে রাতভর গান গেয়ে শিল্পীরা হাজার হাজার দর্শক-শ্রোতাকে মাতিয়ে রাখছেন। আর এ গানের টানে বিকেল হলেই এলাকার সব রাস্তায় মানুষের ঢল নামছে।
লালন একাডেমীর সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির সদস্য তাইজাল আলী খান জানান, উৎসবে আসা লালন অনুসারীরা চিরনিদ্রায় শায়িত তাদের ধর্মগুরুর প্রতি বিশেষ শ্রদ্ধা প্রদর্শন করছে। লালনের মূল মাজারের বাইরে বসেছে বিশাল বাউল মেলা। সেখানে বিভিন্ন পসরা সাজিয়ে বসেছেন নানা এলাকা থেকে আসা দুই শতাধিক ব্যবসায়ী। ঐতিহ্যবাহী বিভিন্ন ধরনের খাবার ও বাউল-বাদ্যসহ হরেক রকমের পণ্যসামগ্রী কিনছেন অভ্যাগতরা।
লালন একাডেমীর সভাপতি কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক বনমালী ভৌমিক জানান, উৎসবকে ঘিরে এবার ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ২৫০ জন র্যাব-পুলিশের পাশাপাশি ডিবি ও স্বেচ্ছাসেবকসহ লালন একাডেমীর কর্মকর্তারাও উৎসবে আসা ভক্তদের নিরাপত্তার বিষয়টি তদারকি করছেন। আগামী রবিবার মধ্যরাতে পাঁচ দিনব্যাপী উৎসবের সমাপ্তি হবে।
এদিকে লালন আখড়া-সংলগ্ন লালন মাজার শরিফ ও সেবাসদন কমিটির উদ্যোগে দিনব্যাপী লালন স্মরণোৎসব উদ্যাপিত হয়েছে গতকাল। লালন মাজার শরিফ ও সেবাসদন কমিটির প্রতিষ্ঠাতা ম মনিরুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন জেলা প্রশাসক বনমালী ভৌমিক, বিশিষ্ট লালন-গবেষক অধ্যাপক ড. আবুল আহসান চৌধুরী, ফকির হাসান হাফিজ শাহ প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, বাউলসম্রাট ফকির লালন শাহর জীবন-কর্ম, মানবদর্শন, মরমি সংগীত, চিন্তা-চেতনা ও ধর্মদর্শন গবেষণার বিষয়ে পরিণত হয়েছে। লালনের প্রতি এক উদাসী টান ও আত্মার শান্তির জন্যই ভক্তরা বারবার ছুটে আসে এখানে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন