আরিফ মেহমুদ ॥ কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক সৈয়দ বেলাল হোসেন বলেছেন, জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান ও দেশের সূর্য্য সৈনিক মুক্তিযোদ্ধারা যে আশা ও প্রত্যাশা নিয়ে এদেশ স্বাধীন করেছিল তা পুরণ হয়নি আজো। দেশের স্বাধীন হওয়ার ৪১ বছর অতিবাহিত হলেও আমরা এখনো স্বাধীনতার পূর্ণাঙ্গ স্বাদ পায়নি। দেশের স্থপতি জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিবক ৭ মার্চের আহবানে সাড়া দিয়ে বাংলার দামাল ছেলেরা মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের রণাঙ্গণে যারা বুকের তাজা রক্ত দিয়ে এদেশ থেকে চিরশুত্র“ পাকিস্তানী হানাদারদের উৎখাত করে প্রিয় মাতৃভূমিকে মুক্ত করেছিল তাদের মধ্যে কোন বিভেদ অনৈক্য থাকতে পারেনা। আমাদের স্বাধীনতার মহান মুক্তিযুদ্ধকে যারা অস্বীকার করেছিল সেই সকল যুদ্ধাপরাধীরা এখনো আস্ফালন দেখায় এবং দেশকে ধ্বংশের দিকে ঠেলে দেয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে এরা মানবতা বিরোধী সব ধরনের অপরাধসহ জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করে ছিনিয়ে নিয়েছে মুক্তিকামী মানুষের সর্বস্ব। সেই সব যুদ্ধাপরাধীদের গ্রেপ্তার করে বর্তমান সরকার যুগান্তকারী দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। এসময় জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান মুক্তিযোদ্ধাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। এখন সময় এসেছে তাদের বিচার সম্পন্ন করার মধ্য দিয়ে জাতিকে কলঙ্ক ও দায়মুক্ত করার। গতকাল মঙ্গলবার সকালে কুষ্টিয়া কালেক্টরেট চত্বরে কেন্দ্রীয় শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে কুষ্টিয়া মুক্তদিবস উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। দিবসটি উপলক্ষে সকাল ৯টায় কুষ্টিয়া জেলা প্রশপ্রন, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড ইউনিট, মুক্তিযোদ্ধা সাংগঠনিক কমান্ডের আয়োজনে পুলিশ প্রশাসনসহ জেলার সকল শ্রেণী পেশার মানুষ স্বাধীনতার মহান মুক্তিযুদ্ধে নিহত শহীদদের আত্মার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে কুষ্টিয়া কালেক্টরেট চত্বরে কেন্দ্রীয় শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন। এর পর পরই জাতীয় সঙ্গীতের মধ্যদিয়ে জাতীয় পতাকা জেলা প্রশাসক ও মুক্তিযোদ্ধার পতাকা পুলিশ সুপারসহ জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড ইউনিট সদস্যগন উত্তোলন করেন। এর পর সকাল সাড়ে ৯ টায় কুষ্টিয়া কালেক্টরেট ভবনে শহীদস্মৃতিস্তম্ভে চত্বর থেকে একটি বর্ণাঢ্য র্যালী বের করা হয়। র্যালীতে নেতৃত্ব দেন কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক সৈয়দ বেলাল হোসেন, জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আজগর আলী, কুষ্টিয়া মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ইউনিট কমান্ডার নাছিমউদ্দিন আহমেদ, মুক্তিযোদ্ধা সাংগঠনিক কমান্ডের কমান্ডার বাবু মানিক কুমার ঘোষ ও জেলার বীর মুক্তিযোদ্ধাবৃন্দসহ অন্যান্য সংগঠন। র্যালীটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে শহীদস্মৃতিস্তম্ভের আলোচনা সভায় এসে মিলিত হয়। পবিত্র কোরআন তেলওয়াত, গীতাপাঠ ও বাইবেল পাঠের মধ্য দিয়ে আলোচনা সভা শুরু হয়। এর পর আমাদের মহান স্বাধীনতার মুক্তিযুদ্ধে নিহত সকল শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে ১ মিনিট দাড়িয়ে নিরাবতা পালন করা হয়। মুক্ত দিবস উপলক্ষে কুষ্টিয়া কালেক্টরেট ভবন সেজেছিল এক বর্ণাঢ্য সাজে। মুক্তিযুদ্ধের ও জাতীয় পতাকার পত পত শব্দে মুখরিত হয়ে উঠে শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ এলাকা। কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ড.মোল্লা মাহমুদ হাসানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কুষ্টিয়া জেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক আজগর আলী,বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের জাতীয় পরিষদের সদস্য ও খোকসা উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব সদর উদ্দিন খান, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার নাছিম উদ্দিন আহমেদ ও মুক্তিযোদ্ধা সাংগঠনিক কমান্ডের কমান্ডার বাবু মানিক কুমার ঘোষ। এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মোমেন, জেলা ডেপুটি কমান্ডার আলহাজ্ব গেরিলা নজরুল ইসলাম, আলহাজ্ব রফিকুল ইসলাম টুকু, খোকসা উপজেলা কমান্ডার ফজলুল হক, কুমারখালী উপজেলা কমান্ডার আমিরুল ইসলাম, দৌলতপুর উপজেলা কমান্ডার আনারুল ইসলাম, ও মুক্তিযোদ্ধার সন্তান সংগঠনের আহবায়ক মীর জাহিদ প্রমুখ। প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে আরো বলেন, মুক্তিযুদ্ধাদের সঠিকভাবে কোন সরকারই মূল্যায়ন করেনি কিংবা রাষ্ট্রকর্তৃক মূল্যায়িত হয়নি। স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্যা কন্যা প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা’র সরকার সূর্যসৈনিক মুক্তিযুদ্ধাদের যথাযথ মর্যাদার সাথে মূল্যায়ন করে চলেছেন এবং আগামীতে তাদের উত্তরসূরী পরিবারকে মূল্যায়নের ঘোষনা দিয়েছেন। দেশের সূর্য্যসন্তান মুক্তিযোদ্ধাদের আজীবন সম্মানিতা করা হবে। বিশেষ অতিথি মুক্তিযোদ্ধারা বলেন, একদিকে জেলাকে মুক্ত করার আনন্দ যেমন ছিল সবার মাঝে তেমন অন্য দিকে বুকের মধ্যে ছিল সব হারানো মুমুর্ষ ব্যথা। আজকের এই দিনে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার দ্রুত কার্যকর হলেই সব ভূলে স্বাধীনতার স্বাদ পাবো। শহীদ ভাই বোনের আত্মার শান্তি আসবে। আলোচনা শেষে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার দ্রুত কার্যকর ও ফাসীসহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবীতে জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড ইউনিট কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়কে বিশাল মানববন্ধন করে। দিনব্যাপী এই অনুষ্ঠানমালার সার্বিক উপস্থপনা করেন কবি শুকদেব সাহা।
শনিবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০১২
বেগম রোকেয়া দিবসে ডিসি সৈয়দ বেলাল হোসেন, নারীর ক্ষমতায়নে তাদের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে
আরিফ মেহমুদ ॥ কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক বলেছেন, নারী শিক্ষার প্রসার ছাড়া নারী সমাজের ক্ষমতায়ন সম্ভব নয়। পৃথিবীতে যা কিছু চিরকল্যাণকর অর্ধেক তার গড়েছে নারী অর্ধেক তার নর। আমাদের দেশে বর্তমানে এমন কোন সেক্টর নেই যেখানে নারী অংশগ্রহণ নাই। নারী সমাজ দেশের মূল জনগোষ্ঠির একটি বিরাট অংশ। সেই মূল জনগোষ্ঠিকে বাদ দিয়ে দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়। তাই সবার আগে পুরুষের পাশাপাশি নারীদের সকল কাজে যোগদানের সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। বেগম রোকেয়া সমাজের প্রবল প্রতাপের বাধা থেকে বেরিয়ে এসে নারী শিক্ষার জাগরণে কাজ করে যান। সেই সঙ্গে তার আন্দোলনে যোগ হয় নারী সমাজের অধিকার আদায়ের সংগ্রাম। বর্তমানে মহিলারা অনেক সচেতন। সচেতন করার পাশাপাশি নারীদেরকে তাদের মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও ক্ষমতা দিতে হবে। বাল্য বিবাহ প্রতিরোধ করে নারীর ক্ষমতায়নে তাদের অধিকার নিশ্চিত করতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। গতকাল দুপুরে জেলা প্রশাসকের সভাকক্ষে জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের আয়োজনে বেগম রোকেয়া দিবস উদযাপন উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা হাসিনা বানুর সভাপতিত্বে এবারের রোকেয়া দিবসের প্রতিপাদ্য বিষয় বাল্য বিবাহ এবং নারীর ক্ষমতায়ন বিষয়ক পরামর্শ তুলে ধরে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ড.মোল্লা মাহমুদ হাসান। আলোচনা সভা শেষে উন্মুক্ত আলোচনায় মোডারেটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন, দৈনিক কুষ্টিয়া’র সম্পাদক ড.আমানুর আমান। বেগম রোকেয়া’র জীবনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান, এডাবের সভাপতি এনামূল হক, মনোবিজ্ঞানি অধ্যাপক আব্দুল কাইয়ুম, এডাবের কো-অর্ডিনেটর আনোয়ার হোসেন বুলবুল, ইসলামিয়া কলেজের সহকারী অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম, অভিভাবক ফজলুর রহমান, সাংবাদিক আরিফ মেহমুদ, নিকাহ রেজিস্টার কাজী মোস্তাফিজুর রহমান, কুষ্টিয়া সরকারী কলেজের ছাত্র আলমগীর হোসেন, ছাত্রী নিশাত জাহান, সাংবাদিক রবিউল ইসলাম দোলন, সাংবাদিক মওদুদ রানা, অভিভাবক বেগম নূর জাহান প্রমুখ। এতে সুপারিশ উপস্থাপন করেন অধ্যাপক মীর মোশাররফ হোসেন ও কাজী শফিউল্লাহ। অনুষ্ঠানটি সার্বিক উপস্থাপনা ও পরিচালনা করেন কুষ্টিয়া সদর উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মর্জিনা বেগম।
আন্তর্জাতিক ও জাতীয় প্রতিবন্ধী দিবসে সৈয়দ বেলাল হোসেন, প্রতিবন্ধীদের প্রতি নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে হবে
আরিফ মেহমুদ॥ কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক সৈয়দ বেলাল হোসেন বলেছেন,প্রতিবন্ধীরা আমাদের সমাজের অবজ্ঞা আর অবহেলার পাত্র নয়, তারা আমাদের অতি আপনজন সমাজের সম্পদ। প্রতিবন্ধী মানুষ সমাজের অংশ এবং আমাদের পরিবারের সদস্য। ছোট-বড়,ধনী-গরিব, নারী-পুরুষ, প্রতিবন্ধী-অপ্রতিবন্ধী সবাই মিলেই সমাজ। প্রতিবন্ধীদের মর্যাদা ও অধিকার সুরক্ষায় সমাজের নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি অন্যতম বাধা। তাদের কল্যাণে এ ধরনের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনের একান্ত প্রয়োজন। সমাজের নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির কারণে প্রতিবন্ধীদের জীবনের শুরু থেকে বৈষম্য ও অবজ্ঞাপূর্ণ অভিজ্ঞতার মোকাবিলা করতে হয়। এ জন্য আমাদের এ ধরনের নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির অবশ্যই পরিবর্তন করতে হবে। গতকাল সোমবার সকালে জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসন ও জেলা সমাজ সেবা অধিদপ্তরের আয়োজনে আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস ও জাতীয় প্রতিবন্ধী দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের জন্য সকাল সাড়ে ১০টায় কুষ্টিয়া জেলা কালেক্টরেট চত্বর থেকে একটি বর্ণাঢ্য র্যালী বের করা হয়। প্রধান অতিথি জেলা প্রশাসক সৈয়দ বেলাল হোসেনের নেতৃত্বে র্যালীতে অংশ গ্রহণ করে এডিডি, কম্পন,বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী উন্নয়ন কেন্দ্রসহ জেলার বিভিন্ন প্রতিবন্ধী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। র্যালীটি কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়ক প্রদক্ষিণ শেষে জেলা শিল্পকলা মিলানায়তনে এসে শেষ হয়। কুষ্টিয়া জেলা সমাজ সেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আব্দুল গনি’র সভাপতিত্বে এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় একীভূত সমাজ বিনির্মাণে বাধা দুরের অঙ্গীকার শ্লোগান বাস্তবায়নে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে রাখেন কুষ্টিয়ার সিভির সার্জন ডাঃ তরুণ কান্তি হালদার, কুষ্টিয়া সরকারী কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর বদরুদ্দোজা, সমাজ সেবা অধিদপ্তরের সাবেক উপ-পরিচালক নজরুল ইসলাম, বিশিষ্ট সমাজ সেবক ও বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী উন্নয়ন কেন্দ্রের সভাপতি প্রকৌশলী সাইফুল আলম মারুফ প্রমুখ। এতে বিষয় ভিত্তিক বক্তব্য রাখেন প্রতিবন্ধী সংগঠনের নেতা বাবলুর রহমান, কুষ্টিয়া প্রতিবন্ধী স্কুলের অধ্যক্ষ আসমা আনসারী মিরু ও কম্পনের সভাপতি জেদ আলী। প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে আরো বলেন, অলিম্পিকে বিশেষ অবদানের জন্য স্বর্ণপদক জিতে বাংলাদেশকে বিশ্বের দরবারে পরিচিত বরেছেন। প্রতিবন্ধী, অটিস্টিক সবাইকে নিয়ে একীভূত সমাজ গঠনের মাধ্যমেই দেশের উন্নয়ন সম্ভব। এ লক্ষ্যে প্রতিটি পরিবার, সমাজ ও দেশকে সংঘবদ্ধভাবে উদ্যোগ নিতে হবে। রাষ্ট্রের অনেক সীমাবদ্ধতা সত্বেও এ নীতি বাস্তবায়নে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। আলোচনা শেষে প্রধান অতিথিসহ অন্যান্য অতিথিবৃন্দ এনজিও দিশা ও বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী উন্নয়ন কেন্দ্রের সার্বিক সহযোগিতায় সাদা ছড়ি ও গরমের কম্বল বিতরণ করেন। অনুষ্ঠানটি সার্বিক পরিচালনা ও উপস্থাপনা করেন খঃলুৎফর রহমান।
কুষ্টিয়া জেলা ক্রীড়া সংস্থায় মতবিনিময়কালে সৈয়দ বেলাল হোসেন
আরিফ মেহমুদ ॥ কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি সৈয়দ বেলাল হোসেন বলেছেন, ক্রীড়া নৈপুন্য কুষ্টিয়া জেলার অতীত ঐতিহ্যের ধারাবাহিতা ধরে রাখতে জেলা ক্রীড়া সংস্থার আওতাধীন সব খেলা-ধূলা নির্ধারিত সময়ে স¤পূর্ণ করতে সার্বিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গন যে কোন খেলায় কুষ্টিয়ার ক্রীড়াবিদদের পদচারনা আর অসামান্য ক্রীড়া নৈপন্যে হয়েছে ধন্য। তাদের এই অবদান ও সাফল্য গাথা ইতিহাস জাতি স্মরণ রাখবে চিরকাল। পর্যায়ক্রমে জেলার গুনি ও কৃতি ক্রীড়াবিদদের সংবর্ধনা সহ সম্মানিত করা হবে। খেলা-ধূলা শরীর মন দুই ভাল রাখে। শিক্ষাঙ্গনগুলোকে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার ব্যবস্থা করতে হবে। শিক্ষার সাথে খেলা-ধূলা একে অপরের সাথে পরিপূরক। একটিকে বাদ দিয়ে অন্য সম্পূর্ণ হয়না। আমাদের আজকের প্রজন্মদের খেলা-ধূলা মুখী করতে কুষ্টিয়া জেলার খেলা-ধূলার মান উন্নয়নে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। গতকাল রবিবার রাতে কুষ্টিয়া জেলা ক্রীড়া সংস্থার নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময়কালে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন। কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি সৈয়দ বেলাল হোসেন কুষ্টিয়া জেলা ক্রীড়া সংস্থায় পৌছালে নেতৃবৃন্দ তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়ে বরণ করে নেন। মতবিনিময়কালে কুষ্টিয়া জেলা ক্রীড়া সংস্থার অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, সহ-সভাপতি এ্যাড.অনুপ কুমার নন্দী, খন্দকার জুলফিকার আলী আরজু, জহুরুল হক চৌধুরী রঞ্জু, কুষ্টিয়া জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মকবুল হোসেন লাবলু, সহ-সাধারণ সম্পাদক কাজী রফিকুর রহমান, যুগ্ম সম্পাদক খঃ সাদাত-উল-আনাম পলাশ, কোষাধ্যক্ষ খন্দকার ইকবাল মাহমুদ, নির্বাহী সদস্যদের মধ্যে মাজেদুর রহমান মহাসিন, মহিউদ্দিন চৌধুরী মিলন, খোকন সিরাজুল ইসলাম, পারভেজ আনোয়ার তনু, মীর আয়ূব হোসেন, আলমগীর কবির হেলাল, কাইয়ূম নাজার, সাইদ আহমেদ বড়বাবু, আব্দুল খালেক মন্ডল, শেখ সুলতান আহমেদ, আতাউর রহমান মিঠু, রাশিদুজ্জামান খান টুটুল, মিসেস সালেহা নাজনীন ও খায়রুল ইসলাম প্রমুখ। সভায় সদ্য সমাপ্ত বাংলাদেশ সুইমিং ফেডারেশন আয়োজিত জাতীয় সাতার প্রতিযোগিতায় জেলাগতভাবে কুষ্টিয়া জেলা চ্যামিস্পয়ন হওয়ায় কৃতি সাতারুদের সংবধনা দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সভাপতি তার বক্তব্যে আরো বলেন কাজ করলে তার সমালোচনা থাকবে। ক্রীড়াবিদদের নিয়ে যেমন সমালোচনা করবেন তেমনি তাদের সাফল্য নিয়েও প্রশংসা করবেন। গঠনমূলক সমালোচনা দেশ ও জাতির জন্য পথ নির্দেশক হিসেবে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। সভায় জেলায় সুইমিং পুল নির্মান ও ষ্টেডিয়ামকে আধুনিকায়ন করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ ও বরাদ্দ দেয়ার জন্য ক্রীড়মন্ত্রণালয়কে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশিত পত্র পাওয়ায় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান হয়।
কুষ্টিয়া সুগার মিলে আখ মাড়াই মৌসুমের উদ্বোধনকালে হানিফ মিলটিকে লাভজনক করতে ডিষ্টিলারি চালু সহ ব্যবস্থা নেয়া হবে
আরিফ মেহমুদ ॥ প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ও আওয়ামীলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ বলেছেন, কুষ্টিয়ার সুগার মিলের শ্রমিক কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অত্যান্ত দক্ষ ও অভিজ্ঞ বলেই লোকসান সত্বেও আজো এধরনের পুরাতন মেশিন দিয়েও উৎপাদন অব্যাহত রেখেছে। তাদের এই অভিজ্ঞতাকে পরিপূর্ণ কাজে লাগিয়ে লোকসানকে পুসিয়ে দিয়ে এবার মিলে কাঙ্খিত পরিমাণ উৎপাদন করবেন। কুষ্টিয়ার এই ঐতিহ্যবাহী সুগার মিলটিকে লাভজনক করতে বিএমআরই পদ্ধতির মাধ্যমে ডিষ্টিলারী চালু সহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। গতকাল শুক্রবার বিকেলে কুষ্টিয়া সুগার মিলের কেইন কেরিয়ার মিলনায়তনে কুষ্টিয়া সুগার মিলের আখ মাড়াই মৌসুমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধান অতিথি কুষ্টিয়া সুগার মিলে পৌছালে কুষ্টিয়া সুগার মিলে কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শ্রমিকনেতারা তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা দিয়ে বরণ করে নেন। কুষ্টিয়া সুগার মিলের সুগার সেস্ ও রোড ডেভেলপমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান আলহাজ্ব সদর উদ্দিন খানের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক সৈয়দ বেলাল হোসেন এবং পুলিশ সুপার মফিজ উদ্দিন আহমেদ, কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আজগর আলী, সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আক্তারুজ্জামান বিশ্বাস, শহর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মোমিনুর রহমান মোমিজ, কুষ্টিয়া চিনিকল শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম লতিফ প্রমুখ। এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ড.মোল্লা মাহমুদ হাসান,কুষ্টিয়া সুগার মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আজিজুর রহমান প্রমুখ। প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে আরো বলেন,এদেশের শতকরা ৭০-৭৫ ভাগ মানুষ কৃষি কাজের সাথে জড়িত। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান ছিলেন কৃষকের বন্ধু। তিনি আরো বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় খাতাকালীন সময়কালে অনেক মিল চালু ছিল, কিন্তু লোকসানের অজুহাতে সেগুলি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। বিএনপি সরকার মিলগুলোকে ব্যক্তি মালিকানায় বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে সে সময় শ্রমিকদের ভাগ্য বিপর্র্যয় ঘটিয়েছে। এমনকি জগতী মিলটিও বিক্রির চেষ্টা হয়েছে। বেগম খালেদাজিয়ার উদ্দেশ্যে হানিফ বলেন, বেগম খালেদাজিয়া নিজে দূর্নিতির দায়ে অভিযুক্ত। তার দুই পুত্র অর্থ কেলেঙ্কারির দায়ে দেশে-বিদেশে মামলা আছে। বিএনপির সরকার জঙ্গিবাদ সৃষ্টি করেছিল। বিচারক থেকে শুরু করে সকল শ্রেণী পেশার মানুষকে হত্যা করেছিল। বাংলাভাই নামে জঙ্গির সৃষ্টির মাধ্যমে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করেছে। আলোচনা শেষে প্রধান অতিথি সহ অন্যান্য অতিথিবৃন্দ মিলের ডোংগায় আখ নিক্ষেপ করে ২০১২-২০১৩ মৌসুমের আখ মাড়াই ও চিনি উৎপাদন কার্যক্রম উদ্বোধন করেন।
এতে সদস্যতা:
পোস্টগুলি (Atom)