এ.এইচ.এম.আরিফ,মেহেরেপুর থেকে ফিরে ॥ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু বলেছেন, ‘২০০৪ সালে বেগম খালেদা-তারিকের নেতৃত্বে স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি শেখ হাসিনার প্রান নাশের উদ্দেশ্যে গ্রেণেড হামলা চালিয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বকে ধ্বংস করে দিতে চেয়েছিল। বহুবার শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা করেও পারে নাই। খালেদা জিয়া ও তার দোসররা মুসলমান দাবী করেন। অথচ তারা নবীর জন্ম দিন ও বিশ্ব ইস্তেমার দিনে হরতাল অবরোধ করা থেকে বিরত থাকেনি। তারা কোরান শরীফ পুড়িয়েছে। হরতালের নামে মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে।’ দেশ নিয়ে যতই ষড়যন্ত্র করুক স্বাধীনতা বিরোধী শক্তির বাংলার মাটিতে ঠাই হবে না। আজ মুজিবনগর দিবসে শপথ হোক “যারা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছিল তাদেরকে বাংলার মাটি থেকে পাকিস্থানে ফেরত পাঠাবার।’ শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০ টায়স্বাধীনতার সূতিকাগার ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবসের আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। স্বাধীনতার সূতিকাগার ঐতিহাসিক মুজিবনগর স্মৃতিসৌধে পুষ্প স্তবক অর্পনের মধ্য দিয়ে শুক্রবার বেলা সাড়ে ১০ টায় ১৭ এপ্রিল মুজিবনগর দিবসের কার্যক্রম শুরু হয়। গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু’র নেতৃত্বে স্মৃতিতসৌধে ওই পুষ্পস্তবক অর্পন করা হয়।
এসময় কেন্দ্র্রীয় নেতৃবৃন্দসহ স্থানীয় এমপিসহ আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ সেখানে উপস্থিত ছিলেন। পুষ্পস্তবক অর্পনের পর এক মিনিট নিরাবতা পালন করা হয়। এরপর মুজিবনগরের শেখ হাসিনা মঞ্চে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের এল.জি.আর.ডি মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম জাতীয় সংগীতের তালে তালে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। মেহেরপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমির শিল্পিরা জাতীয় সংগীত পরিবেশন করেন।
অনুষ্ঠানে মুজিবনগর ডিগ্রি কলেজের অবসরপ্রাপ্ত প্রভাষক ও ৭১ সালের শপথ অনুষ্ঠানে কোরান তেলাওয়াতকারী বাকের আলীর কোরান তেলাওয়াত করেন। মেহেরপুর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ননী গোপাল ভট্টাচার্যের গীতা পাঠ ও মিঃ আদম মন্ডলের বাইবেল পাঠের পর মূল আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
মুজিবনগর দিবস উদযাপন কমিটির চেয়ারম্যান ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম এমপি’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের এল.জি.আর.ডি মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, গণপ্রজাতন্ত্র¿ী বাংলাদেশ সরকারের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী আ.ক.ম মোজাম্মেল হক এমপি, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক ক্যাপ্টেন (অবঃ) এবি তাজুল ইসলাম। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগাঠনিক সম্পাদক বি.এম মোজাম্মেল হক’র সঞ্চলনায় অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মেহেরপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক ফরহাদ হোসেন, মেহেরপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য মকবুল হোসেন, সংরক্ষিত মহিলা এমপি সেলিনা আক্তার বানু, চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য সোলাইমান হক সেলুন জোয়ার্দার, মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম.এ খালেক, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের প্রশাসক অ্যাড. মিয়াজান আলী, মুজিবনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জিয়ারউদ্দিন বিশ্বাস প্রমুখ।
অনুষ্ঠানের প্রধান বক্তা সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেন-‘মুজিবনগর অস্থায়ী সরকার নয়। শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে গঠিত বাংলাদেশের প্রথম সরকার। এর ধারাবাহিকতায় পরপর সরকার গঠিত হচ্ছে।’
সভাপতির বক্তব্যে মোহাম্মদ নাসিম বলেন- ‘আন্দোলনের নামে বেগম খালেদা জিয়া মানুষকে পুড়িয়ে মেরেছে। আমরা আওয়ামী লীগ সরকার মানুষকে ভালবেসে আগামী ২০১৯ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জয়ী হয়ে পুনরায় সরকার গঠন করব।’
এর আগে ইন্সেপেক্টর মতিউর রহমানের নেতৃত্বে পুলিশ, বিজিবি, আনসার, বিএনসিসি, রোভার, স্কাউট, গার্লস গাইডসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতষ্ঠানের ছেলে-মেয়েরা কুচকাওয়াজ প্রদর্শন ও কেন্দ্র্র্র্রীয় নেতাদের গার্ড অব অনার প্রদান করেন। এরপর আনসার ও ভিডিপি’র একদল তরুন শিল্পি “হে তারুন্য তুমি দাঁড়াও” শিরোনামে সংগীত উপস্থাপন করেন। পরে ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল মুজিবনগর সরকারের গার্ড অব অনার প্রদানকারী আনসার সদস্য ও মরহুম আনসার সদস্যদের পরিবারের মধ্যে সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়।
এসময় মেহেরপুরের স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও অংগ সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদ জেলার নেতৃবৃন্দ সেখানে উপস্থিত ছিলেন। এর আগে সকাল থেকে মেহেরপুরসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে বাস-ট্রাক যোগে হাজার হাজার মানুষ মুজিবনগরে জমায়েত হতে থাকে। বেলা বাড়ার সাথে সাথে সভাস্থল জনসমুদ্রে পরিণত হয়।
এদিন সকাল ৬ টায় মেহেরপুরের জেলা প্রশাসক মাহমুদ হোসেন মুজিবনগর স্মৃতিসৌধে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে মুজিবনগর দিবসের কর্মসূচি উদ্বোধন করেন। এসময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন মুজিবনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অরুন কুমার মন্ডল।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন