রবিবার, ৩১ মে, ২০১৫

চাল কেনা নিয়ে আ’লীগ নেতাদের চালবাজী কুষ্টিয়ার চাল সংগ্রহে সাড়ে ৪ কোটি টাকা কমিশন বাণিজ্য!


কুষ্টিয়া প্রতিনিধি ॥ কুষ্টিয়ায় চাল সংগ্রহ কার্যক্রম শুরু না হলেও সরকারি খাদ্যগুদামে চাল কেনা নিয়ে আওয়ামীলীগ নেতাদের চালবাজী শুরু হয়েছে। চাল সরবরাহকারীদের কাছে মোটা অংকের কমিশন চাওয়ার অভিযোগ উঠেছে চাল সংগ্রহ কমিটির সদস্য স্থানীয় আওয়ামীলীগের কয়েকজন নেতার বিরুদ্ধে। কেজিতে ২ টাকা হিসাবে প্রায় সাড়ে ৪কোটি টাকার কমিশন বাণিজ্য হচ্ছে! কমিশন নিয়ে দফারফা না হওয়ায় সরকারী ঘোষনা অনুযায়ী জেলায় রবিবারও চাল সংগ্রহ কার্যক্রম শুরু করা যায়নি।
সুষ্ঠ ও সুন্দরভাবে চাল সংগ্রহ অভিযান পরিচালনার জন্য জেলায় ১০ সদস্যের একটি কমিটি করা হয়েছে। কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক সৈয়দ বেলাল হোসেন। সদস্য সচিব জেলা খাদ্য কর্মকর্তা স্বপন কুমার কুন্ডু জেলার চারজন সাংসদ কমিটির উপদেষ্টা।
জেলা খাদ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি বোরো মৌসুমে কুষ্টিয়া জেলায় ২৩ হাজার ৩০০ মেট্রিক টন বা ২ কোটি ৩০ লাখ কেজি চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। ১মে থেকে চাল সংগ্রহ শুরু হওয়ার কথা ছিল।
খাদ্য বিভাগ সূত্র জানায়, সরকার ৩২ টাকা কেজি দরে মিলারদের কাছ থেকে চাল সংগ্রহ করবে। আওয়ামী লীগ নেতারা প্রতি কেজিতে ২ টাকা করে প্রায় সাড়ে চার কোটি টাকা দাবি করেন। শুধু কুষ্টিয়া সদর উপজেলা থেকেই ১৮ হাজার ৭৫ টন চাল সংগ্রহ করার কথা।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ক্ষমতাসীন দলের যে নেতাদের বিরুদ্ধে চাঁদা চাওয়ার অভিযোগ উঠেছে, তাঁরা শুরুতে নিজেরাই পাঁচ হাজার টন চাল সরবরাহের অনুমতি দিতে জেলা প্রশাসককে চাপ দেন। জেলা প্রশাসক সরকারি নিয়মের বাইরে গিয়ে নেতাদের চাল সরবরাহের সুযোগ দিতে অপারগতা জানান। এরপর নেতারা চাল সরবরাহ করতে হলে প্রতি কেজিতে তাঁদের ২ টাকা দিতে হবে বলে চালকল মালিকদের ওপর চাপ সৃষ্টি করেন।
দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম চালের মোকাম কুষ্টিয়া সদর উপজেলার খাজানগর এলাকা। এখানকার মিল মালিকেরা জানান, এ পরিস্থিতিতে জেলা চালকল মালিক সমিতির নেতারা মিলারদের ডেকে কয়েক দফা বৈঠক করেন। বৈঠকে ৪০-৫০ জন মিলার অংশ নেন। সেখানে মিলাররা কেজিপ্রতি ১ টাকা ২৫ পয়সা করে দিতে একমত হন। কিন্তু কমিটির রাজনৈতিক সদস্যরা এই প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় মিল মালিক সমিতির নেতারা ক্ষমতাসীন দলের এক নেতার অফিসে আবাােরা বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে অনেক দেনদরবার শেষে মিল মালিকেরা কেজিপ্রতি ২ টাকা করে দিতে রাজি হন।
এব্যাপারে চাল ক্রয় কমিটির সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সদর উদ্দীন খান জানান ‘চাল কেনা নিয়ে প্রতিদিনই মিটিং হচ্ছে। এখানে কোনো অনিয়ম করা হবে না।’ জেলা চালকল মালিক সমিতির সভাপতি আবদুল মজিদ বাবলু ও সাধারণ সম্পাদক জামসেদ হোসেন মিলাদের সঙ্গে বৈঠকের কথা স্বীকার করলেও এর বেশি কিছু বলতে রাজি হননি তাঁরা। ১৪-দলীয় জোটের অন্যতম শরিক জেলা জাসদের সভাপতি গোলাম মহসিন বলেন, চাল কেনা নিয়ে কমিশন বাণিজ্যের সঙ্গে তাঁদের কোনো সম্পর্ক নেই। যাঁরা এসব করছেন তাঁরা শেখ হাসিনা সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করছেন।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও চাল সংগ্রহ কমিটির সদস্য আজগর আলী জানান, চাল সংগ্রহ যাতে আইন মেনে ভালোমতো হয়, সে জন্য আমরা চালকল মালিকদের সঙ্গে বৈঠক করেছি। আমাদের নেতা হানিফ ভাই বলে দিয়েছেন, কোনো অনিয়ম করা যাবে না। আমরা তা মেনে চলছি। রবিবার থেকে চালকল মালিকেরা সরকারি গুদামে চাল দেওয়া শুরু করবেন বলে জানান তিনি।


শনিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০১৫

কুষ্টিয়ায় বিস্ফোরক সহ জামাত-শিবিরের ১৬ কর্মী আটক


আরিফ মেহমুদ ॥ কুষ্টিয়ার মিরপুরে গোপন বৈঠকের সময় অভিযান চালিয়ে বিস্ফোরক দ্রব্যসহ ১৬ জন জামাত-শিবির কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। শনিবার সকালে উপজেলার বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন দার উশ সালাম একাডেমীতে এ অভিযান চালায় পুলিশ। এ সময় একাডেমীর ভেতর থেকে ৬টি ককটেল ও বিস্ফোরক উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে সকালে মিরপুর উপজেলার  বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন দার উশ সালাম একাডেমীর ভেতরে জামাত-শিবির গোপন বৈঠক চলছে।  এ সময় পুলিশ ঐ কার্যালয়ের ভেতরে অভিযান চালিয়ে ৬টি ককটেলও বিস্ফোরক দ্রব্যসহ গোপন বৈঠকের সময় ১৬ জন জামাত-শিবির কর্মীকে আটক করে। এ সময় ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা কার্যালয়ের ভেতরে থাকা প্রয়োজনীয় কাগজপত্রে আগুন ধরিয়ে জ্বালিয়ে দেয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে।
মিরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ কাজী জালাল উদ্দিন জানান, অনেকদিন ধরেই মিরপুর দার উস সালামের কার্যালয়ে জামাত-শিবির গোপন বৈঠক হয়ে আসছিলো। আজ সকালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আমরা ঐ কার্যালয়ে অভিযান চালায়। আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।
 

কুষ্টিয়ায় সাংবাদিকদের তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু নির্বাচনে অংশগ্রহণ জনগণের কাছে কৈফিয়ত দিতে হবে খালেদা জিয়াকে


আরিফ মেহমুদ ॥ সরকার ও ইসি নিরপেক্ষ হলে আসন্ন সিটি নির্বাচনে ২০ দল বিজয়ী হবে বিএনপির এমন এক দাবীর প্রশ্নে তথ্যমন্ত্রী ও জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, কে জিতবে কে হারবে তা ব্যালট বাক্স গোণার পরই টের পাওয়া যাবে। পুর্বে চট্রগাম, গাজীপুরে যখন বিএনপি জিতেছে তখন কি লেবেল প্লেইং ছিল না। তাই ভোটের নিরপেক্ষতার প্রশ্ন একটা ভুয়া প্রশ্ন। জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন আর স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশগ্রহণ এই দ্বৈত নীতি সম্পর্কে খালেদা জিয়া জনগণের কাছে আগে কৈফিয়ত দিন।
শনিবার সকালে কুষ্টিয়া পলিটেকনিক ইনষ্টিটিউট মিলনায়তনে কৃতি শিক্ষার্থীদের সংম্বর্ধনা ও সনদপত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার আগে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ সব কথা বলেন। এ সময় কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক সৈয়দ বেলাল হোসেন, পুলিশ সুপার প্রলয় চিসিম, জেলা জাসদের সভাপতি গোলাম মহসিন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু বকর সিদ্দিকসহ দলীয় নেতা কর্মিরা উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপি নেতা ব্যারিষ্টার মওদুদ আহমদের সরকার ও ইসির নিরপেক্ষতার এক দাবীর প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, ব্যারিষ্টার মওদুদ আগে থেকে একটা অজুহাত তৈরি করছেন। ভোটে যদি উনারা হারেন তা হলে তারা আবার বাংলাদেশে আবার আগুন সন্ত্রাসের রাজনীতি করবেন। আর ভোটে জিতলে বলবেন সরকার পদত্যাগ কর। এই নির্বাচন করবেন আর জাতীয় নির্বাচন করবেন না। আগুন সন্ত্রাসের রাজনীতি করে মানুষ পোড়াবেন এই রাজনীতি করতে দেয়া হবে না।

শুক্রবার, ১৭ এপ্রিল, ২০১৫

ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবসে আমির হোসেন আমু স্বাধীনতা বিরোধী শক্তির বাংলার মাটিতে ঠাই হবে না


এ.এইচ.এম.আরিফ,মেহেরেপুর থেকে ফিরে ॥ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু বলেছেন, ‘২০০৪ সালে বেগম খালেদা-তারিকের নেতৃত্বে স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি শেখ হাসিনার প্রান নাশের উদ্দেশ্যে গ্রেণেড হামলা চালিয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বকে ধ্বংস করে দিতে চেয়েছিল। বহুবার শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা করেও পারে নাই। খালেদা জিয়া ও তার দোসররা মুসলমান দাবী করেন। অথচ তারা নবীর জন্ম দিন ও বিশ্ব ইস্তেমার দিনে হরতাল অবরোধ করা থেকে বিরত থাকেনি। তারা কোরান শরীফ পুড়িয়েছে। হরতালের নামে মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে।’ দেশ নিয়ে যতই ষড়যন্ত্র করুক স্বাধীনতা বিরোধী শক্তির বাংলার মাটিতে ঠাই হবে না। আজ মুজিবনগর দিবসে শপথ হোক “যারা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছিল তাদেরকে বাংলার মাটি থেকে পাকিস্থানে ফেরত পাঠাবার।’ শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০ টায়স্বাধীনতার সূতিকাগার ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবসের আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। স্বাধীনতার সূতিকাগার ঐতিহাসিক মুজিবনগর স্মৃতিসৌধে পুষ্প স্তবক অর্পনের মধ্য দিয়ে শুক্রবার বেলা সাড়ে ১০ টায় ১৭ এপ্রিল মুজিবনগর দিবসের কার্যক্রম শুরু হয়। গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু’র নেতৃত্বে স্মৃতিতসৌধে ওই পুষ্পস্তবক অর্পন করা হয়।
এসময় কেন্দ্র্রীয় নেতৃবৃন্দসহ স্থানীয় এমপিসহ আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ সেখানে উপস্থিত ছিলেন। পুষ্পস্তবক অর্পনের পর এক মিনিট নিরাবতা পালন করা হয়। এরপর মুজিবনগরের শেখ হাসিনা মঞ্চে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের এল.জি.আর.ডি মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম জাতীয় সংগীতের তালে তালে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। মেহেরপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমির শিল্পিরা জাতীয় সংগীত পরিবেশন করেন।

অনুষ্ঠানে মুজিবনগর ডিগ্রি কলেজের অবসরপ্রাপ্ত প্রভাষক ও ৭১ সালের শপথ অনুষ্ঠানে কোরান তেলাওয়াতকারী বাকের আলীর কোরান তেলাওয়াত করেন। মেহেরপুর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ননী গোপাল ভট্টাচার্যের গীতা পাঠ ও মিঃ আদম মন্ডলের বাইবেল পাঠের পর মূল আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

মুজিবনগর দিবস উদযাপন কমিটির চেয়ারম্যান ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম এমপি’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের এল.জি.আর.ডি মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, গণপ্রজাতন্ত্র¿ী বাংলাদেশ সরকারের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী আ.ক.ম মোজাম্মেল হক এমপি, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক ক্যাপ্টেন (অবঃ) এবি তাজুল ইসলাম। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগাঠনিক সম্পাদক বি.এম মোজাম্মেল হক’র সঞ্চলনায় অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মেহেরপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক ফরহাদ হোসেন, মেহেরপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য মকবুল হোসেন, সংরক্ষিত মহিলা এমপি সেলিনা আক্তার বানু, চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য সোলাইমান হক সেলুন জোয়ার্দার, মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম.এ খালেক, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের প্রশাসক অ্যাড. মিয়াজান আলী, মুজিবনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জিয়ারউদ্দিন বিশ্বাস প্রমুখ।
অনুষ্ঠানের প্রধান বক্তা সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেন-‘মুজিবনগর অস্থায়ী সরকার নয়। শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে গঠিত বাংলাদেশের প্রথম সরকার। এর ধারাবাহিকতায় পরপর সরকার গঠিত হচ্ছে।’
সভাপতির বক্তব্যে মোহাম্মদ নাসিম বলেন- ‘আন্দোলনের নামে বেগম খালেদা জিয়া মানুষকে পুড়িয়ে মেরেছে। আমরা আওয়ামী লীগ সরকার মানুষকে ভালবেসে আগামী ২০১৯ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জয়ী হয়ে পুনরায় সরকার গঠন করব।’
এর আগে ইন্সেপেক্টর মতিউর রহমানের নেতৃত্বে পুলিশ, বিজিবি, আনসার, বিএনসিসি, রোভার, স্কাউট, গার্লস গাইডসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতষ্ঠানের ছেলে-মেয়েরা কুচকাওয়াজ প্রদর্শন ও কেন্দ্র্র্র্রীয় নেতাদের গার্ড অব অনার প্রদান করেন। এরপর আনসার ও ভিডিপি’র একদল তরুন শিল্পি “হে তারুন্য তুমি দাঁড়াও” শিরোনামে সংগীত উপস্থাপন করেন। পরে ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল মুজিবনগর সরকারের গার্ড অব অনার প্রদানকারী আনসার সদস্য ও মরহুম আনসার সদস্যদের পরিবারের মধ্যে সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়।
এসময় মেহেরপুরের স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও অংগ সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদ জেলার নেতৃবৃন্দ সেখানে উপস্থিত ছিলেন। এর আগে সকাল থেকে মেহেরপুরসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে বাস-ট্রাক যোগে হাজার হাজার মানুষ মুজিবনগরে জমায়েত হতে থাকে। বেলা বাড়ার সাথে সাথে সভাস্থল জনসমুদ্রে পরিণত হয়।
এদিন সকাল ৬ টায় মেহেরপুরের জেলা প্রশাসক মাহমুদ হোসেন মুজিবনগর স্মৃতিসৌধে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে মুজিবনগর দিবসের কর্মসূচি উদ্বোধন করেন। এসময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন মুজিবনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অরুন কুমার মন্ডল।
 

দুর্নীতি ও অনিয়মের স্বর্গরাজ্য কুষ্টিয়া জেলা কারাগার ৬০ টাকার মাছ বন্দিদের খেতে হচ্ছে ৩৮০ টাকায়


এ.এইচ.এম.আরিফ,কুষ্টিয়া ॥ জেল সুপারের অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে কুষ্টিয়া জেলা কারাগারে হ-জ-ব-র-ল অবস্থা বিরাজ করছে। চেইন অব কমান্ড ভেঙ্গে তিনি কারারক্ষি জনৈক তসরিকুলের মাধ্যমে বিভিন্ন অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন। জেল সুপারের খুব কাছের লোক বলে এই তসরিকুলের দাপটে তার থেকে সিনিয়র কর্মকর্তারাও মুখ খোলার সাহস পান না। বর্তমান জেল সুপার মখলেচুর রহমান কুষ্টিয়া কারাগারে সাত মাস আগে যোগ দেওয়ার পর থেকেই তিনি নানা অনিয়মে জড়িয়ে পড়েছেন।
৩০.০২ একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত কুষ্টিয়া কারাগারটি দীর্ঘদিন ধরে সুনামের সাথে আসামীদের সংশোধনের দায়িত্ব পালন করে আসছিল। ৫৯০জন পুরুষ এবং ১০জন মহিলাসহ মোট ৬০০জন আসামীর ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন এ কারাগারে বরাবরই প্রায় দ্বিগুন বন্দি অবস্থান করে। এখানে কারা তত্বাবধায়, সহকারী সার্জন, জেলার, ডিপুটি জেলার, ফার্মাসিস্ট, কারাসহকারী, সর্বপ্রধান কারারক্ষি, প্রধান কারারক্ষি, কারারক্ষি ও মহিলা কারারক্ষিসহ মোট মোট ২০২ জন কর্মকর্তা কারাগারটি দেখভালের দায়িত্বে আছেন। এসব কর্মচারি ও কর্মকর্তাদের জেলাখানার মধ্যে বিভিন্ন জায়গায় পোস্টিং দেয়ার ক্ষমতা রয়েছে জেল সুপারের উপর। তিনি সুবিধা ও লাভজনক স্থানে কোন কর্মীকে পোস্টিং দিলে সেখান থেকে আর্থিক সুবিধা নিয়ে থাকেন।
কারাগারের মধ্যে আসামীদের সাক্ষাত, পিসির টাকা জমা নেওয়া ও  ক্যান্টিনে পোস্টিং নেয়া সব থেকে লাভজনক জায়গা। এসব জায়গায় কেউ পোস্টিং নিতে চাইলে তাকে কারারক্ষি তসরিকুলের মাধ্যমে জেল সুপারকে টাকা দিয়ে সেখানে যেতে হয়। মোবাইলে রেকর্ডকৃত তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায়, কিছু দিন পূর্বে কারারক্ষি জনৈক মনির হোসেন ক্যান্টিনের ম্যানেজার হিসাবে পোস্টিং পেয়েছেন। তিনি এ পোস্টিং পেতে তসরিকুলের মাধ্যমে জেল সুপারকে এক লাখ ২০ হাজার টাকা প্রদান করেছেন। জেল সুপার এসব অনিয়মের সাথে জড়িত থাকার কারনে তার নিজের পোস্টিংকৃত লোকেরা কাউকে তোয়াক্কা করে না। তারা প্রকাশ্যে বলে থাকেন, মোটা অংকের টাকা দিয়ে পোস্টিং নিয়েছে, অনিয়মের বিরুদ্ধে কেউ অভিযোগ করলে লাভ হবে না। সম্প্রতি দেখা গেছে, ক্যান্টিনে চলছে ব্যাপক অরাজকতা ও অনিয়ম। জেলখানার নীতিমালা অনুসারে বন্দিদের নিকট থেকে প্রত্যেক জিনিসের উপর শতকরা সর্বোচ্চ ২০ ভাগ লাভ করার কথা থাকলেও সেখানে প্রায় দ্বিগুন থেকে তিনগুন নেয়া হচ্ছে। বর্তমানে বাজারে গরুর মাংস কেজি প্রতি ৩২০ থেকে ৩৫০ টাকা হলেও জেলখানার ক্যান্টিনে তা দেখানো হচ্ছে ৫৫০ টাকা। তেলাপিয়া মাছ বাজারে ১৬০ টাকা থেকে ১৭০ টাকার মধ্যে পাওয়া গেলেও তা জেলখানার ক্যান্টিনে হয়ে গেছে ৩৮০ টাকা।
এভাবে প্রত্যেকটি খাতেই রয়েছে চোখে পড়ার মত অনিয়ম। কুষ্টিয়া জেলা কারাগার থেকে জামিনপ্রাপ্ত আসামীর নিকট থেকে জানা যায়, সব পর্যায়ে অনিয়ম ও দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে কুষ্টিয়া জেলা কারাগার। তিনি বলেন, বন্দিদের জন্য যে খাবার বরাদ্দ দেওয়া হয় তার তিন ভাগের এক ভাগও দেয়া হয় না। এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কারারক্ষি। তার মাধ্যমে জানা গেছে, বন্দিদের জন্য বরাদ্দ খাবার কম প্রদান করে তা স্টোরে জমা রাখা হয়েছে। বিশেষ করে স্টোরে জমা রাখা তেল, ডাল ও মসলার হিসাব করলেই বোঝা যাবে এখানে কি পরিমান দুর্নীতি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে কারারক্ষি তসরিকুলের মুঠো ফোনে কথা বললে তিনি জানান, তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সত্য নয়। কেউ শত্র“তা করে এ মিথ্যা তথ্য দিচ্ছে। কুষ্টিয়া ডেপুটি জেলার সিরাজুস সালেহীনের কাছে মোবাইলে তথ্য জানতে চাইলে তিনি এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে পারবেন না বলে জানান। জেল সুপার মখলেচুর রহমানকে মোবাইল করে এবং কারা ফটকে ফোন করেও তাকে পাওয়া যায়ি