বৃহস্পতিবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১৩

ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইনে কুষ্টিয়া পৌরসভার এডভোকেসী সভা

আরিফ মেহমুদ ॥ কুষ্টিয়া পৌরসভার আয়োজনে ম.আ.রহিম মিলনায়তনে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন ২০১৩ উদ্যাপন উপলক্ষে পৌরসভা এডভোকেসী ও পরিকল্পনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। কুষ্টিয়া পৌরসভার মেয়র আনোয়ার আলীর সভাপতিত্বে উক্ত সভায় বক্তব্য রাখেন, কুষ্টিয়া পৌরসভার কুষ্টিয়া পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম, সহকারী প্রকৌশলী ওয়াহিদুর রহমান, মেডিকেল অফিসার ডাঃ শামীম সিদ্দিকী, নগর পরিকল্পনাবিদ রানভীর আহমেদ, বস্তি উন্নয়ন কর্মকর্তা এ. কে. এম. মঞ্জুরুল ইসলামসহ কুষ্টিয়া পৌরসভার কর্মকর্তা/কর্মচারী সহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। সভা পরিচালনা করেন কুষ্টিয়া পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত স্যানেটারী ইন্সপেক্টর দেবাশীষ বাগচী।
কুষ্টিয়ার সিনিয়র স্বাস্থ্য শিক্ষা অফিসার পারভেজ হোসেন বলেছেন, ভিটামিন ‘এ’ যে শুধুমাত্র  অপুষ্টিজনিত অন্ধত্ব থেকে শিশুদের রক্ষা করে তাই নয়, ভিটামিন ‘এ’ ডায়রিয়ার ব্যাপ্তিকাল ও জটিলতা কমায় এবং শিশুর মৃত্যুর ঝুঁকি কমায়। আগামী প্রজন্মকে এ রোগের সংক্রমণ থেকে রক্ষা করার জন্য ভিটামিন ‘এ’ এর অভাবজনিত অন্ধত্ব ও মৃত্যুর ঝুঁকি কমানো সম্ভব। ভিটামিন ‘এ’ শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এ জন্য শিশুদের ভিটামিন ‘এ’  ক্যাপসুল খাওয়াতে হবে। আগামী ১২ মার্চ তারিখে ৬-১১ মাস বয়সী সকল শিশুকে একটি নীল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো, ১২-৫৯ মাস বয়সী (১-৫ বছর) সকল শিশুকে একটি লাল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো ও ২৪-৫৯ মাস বয়সী (২-৫ বছর) সকল শিশুকে একটি কৃমিনাশক ট্যাবলেট খাওয়ানো হবে। তিনি স্বাস্থ্যকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, যদি কোনো শিশু গত ৪ মাসের মধ্যে কৃমিনাশক ট্যাবলেট খেয়ে থাকে, তবে সেই শিশুকে ক্যাম্পেইনে কৃমিনাশক ট্যাবলেট খাওয়ানোর প্রয়োজন নেই। আপনারা অভিভাবককে বলবেন যেন শিশুকে অবশ্যই ভরাপেটে টিকাদান কেন্দ্রে নিয়ে আসে। ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল ও কৃমিনাশক ট্যাবলেট ভরাপেটে খাওয়ানো ভাল। সভাপতির বক্তব্যে কুষ্টিয়া পৌরসভার মেয়র আনোয়ার আলী স্বাস্থ্যকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, অতীতে আপনারা সুনামের সাথে জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন সম্পন্ন করেছে। তারই কারণে কুষ্টিয়া পুরস্কৃত হয়েছে। অতীতের সুনান ধরে রাখবেন। তিনি বলেন, আপনারা আন্তরিকতার সাথে কাজ করছেন। বাড়ি বাড়ি গিয়ে খোজ করবেন যেন কোন শিশু বাদ না পড়ে এবং কেন ‘এ’ প্লাস খায়ানো হয় সেই বিষয়ে বিস্তারিত জানাবেন। তিনি বলেন, সকলের সার্বিক সহযোগিতা অব্যাহত থাকলে আমরা অবশ্যই জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন ২০১৩ সফল ভাবে সমাপ্ত করাতে পারব।



বুধবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১৩

কুষ্টিয়া সাব রেজিষ্ট্রি অফিসে অভিযান, এক কর্মচারীর ৬ মাসের কারাদন্ড প্রদান

আরিফ মেহমুদ ॥ জেলা প্রশাসকের নির্দেশ অমান্য করে কুষ্টিয়া সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসে অনিয়ম-দুর্ণীতি করায় ভ্রাম্যমান আদালতে অফিসের এক কর্মচারীকে ৬ মাসের কারাদন্ড প্রদান করেছেন ভ্রাম্যমান আদালত। কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক সৈয়দ বেলাল হোসেনের নির্দেশে বুধবার দুপুরে কুষ্টিয়ার নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ভ্রাম্যমান আদালতের বিচারক এসএম জামাল আহমেদ এ রায় প্রদান করেন। দন্ডাদেশ প্রাপ্ত ওই ব্যক্তি দুর্ণীতির আখড়া হিসেবে পরিচিত কুষ্টিয়া সদর সাব রেজিষ্ট্রি অফিসের এমএলএসএস মাহাতাব উদ্দিন। দুর্ণীতির বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় আদালতের ম্যাজিষ্ট্রেট বাংলাদেশ দন্ডবিধির ২৯১ ধারায় এ কারাদন্ড প্রদান করেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে কুষ্টিয়া সাব-রেজিষ্ট্রি অফিস অনিয়ম আর দূর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়। জেলা প্রশাসক সৈয়দ বেলাল হোসেন যোগদানের পর চলতি মাসের শুরুতে দুণীর্তি মুক্ত কুষ্টিয়া সাব- রেজিষ্ট্রি অফিস করার ঘোষণা দেন । এ ঘোষণার পর থেকে একের পর এক ওই অফিসে  ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান পরিচালিত হয়ে আসছিল। কিন্তু তার পরও ঘুষ-দুর্ণীতি আর অনিয়ম বন্ধ হয়নি। গোপনে চলছিল ঘুষ আর দুর্ণীতির কারবার। কয়েকদিন যাবত ভুক্তভোগীরা এ অফিসের কয়েকজন কর্মচারী ও দলিল লেখকদের নামে লিখিতভাবে জেলা প্রশাসকের দপ্তরে অভিযোগ দায়ের করেন। এ অভিযোগের ভিত্তিতে জেলা প্রশাসক সৈয়দ বেলাল হোসেনের নির্দেশে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট এসএম জামাল আহমেদ সেখানে অভিযান চালিয়ে দুর্ণীতির সাথে জড়িত থাকার অপরাধে এমএলএসএস শেখ মাহাতাব উদ্দিন শেখকে হাতে নাতে আটক  করেন। পরে জেলা প্রশাসকের আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে এসএম জামাল আহমেদের কক্ষে ভ্রাম্যমান আদালত বসিয়ে মাহাতাব উদ্দিন শেখকে ৬ মাসের কারাদন্ড প্রদান করেন। দুর্ণীতির আখড়া হিসেবে পরিচিত কুষ্টিয়া সাব রেজিষ্ট্রি অফিসে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে কারাদন্ড প্রদান করায় ভুক্তভোগী এবং সুধী মহল কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক সৈয়দ বেলাল হোসেনকে সাধুবাদ জানিয়েছেন।

কুষ্টিয়া জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচন সম্পন্ন,সিরাজ-উল-ইসলাম সভাপতি, দুলাল সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত

আরিফ মেহমুদ ॥ বিপুল উৎসাহ উদ্দিপনার মধ্য দিয়ে কুষ্টিয়া জেলা আইনজীবী সমিতির কার্য্য নির্বাহী পরিষদের ২০১৩-২০১৪ বষের্র সাধারণ নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়েছে। গতকাল রবিবার কুষ্টিয়া জেলা আইনজীবী সমিতি ভবনের নিচতলায় সকাল সাড়ে ৯ টা থেকে শুরু হয়ে বিরতিহীনভাবে ভোট গ্রহণ চলে একটানা বিকেল সাড়ে ৩ টা পর্যন্ত। এবারের নির্বাচনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ্যাড.আব্দুর রশিদ ও সহকারী নির্বাচন কমিশনার এ্যাড.আকতারুজ্জামান ও এ্যাড.আলম জাকারিয়া টিপু দায়িত্ব পালন করেন। নির্বাচনে ৪১৬ জন ভোটারের মধ্যে ৩৯৮ জন তাদের ভোট দিয়ে পছন্দের প্রার্থীদের জয়যুক্ত করেছেন। কার্য্য নির্বাহী পরিষদের নির্বাচনে ১৭টি পদের জন্য ৩৯জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দীতা করেন। নির্বাচনে সভাপতি পদে সিনিয়র আইনজীবী ঢাকা ল কলেজের অধ্যক্ষ সিরাজ-উল-ইসলাম ২১৪ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দী সিনিয়র আইনজীবী অধ্যক্ষ আমিরুল ইসলাম ১৭৫ভোট পেয়ে পরাজিত হন। সাধারণ সম্পাদক পদে সিনিয়র আইনজীবী এ্যাড.নুরুল ইসলাম দুলাল ২০৫ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দী সিনিয়র আইনজীবী জহুরুল ইসলাম ১৮৫ ভোট পেয়ে পরাজিত হন। এবারের নির্বাচনে একটি প্যানেলে সভাপতি পদে সিনিয়র আইনজীবী অধ্যক্ষ আমিরুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক পদে সিনিয়র আইনজীবী এ্যাড.নুরুল ইসলাম দুলাল এবং অন্য প্যানেলে সভাপতি পদে সিনিয়র আইনজীবী ঢাকা ল কলেজের অধ্যক্ষ সিরাজ-উল-ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক পদে সিনিয়র আইনজীবী জহুরুল ইসলাম মনোনীত দুটি প্যানেলের হ্যাভি ওয়েট প্রার্থীরা ভোট যুদ্ধে নামেন। সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে সিনিয়র আইনজীবী এ্যাড.আব্দুল জলিল ২১৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার প্রতিদ্বন্দীতা সিনিয়র আইনজীবী এ্যাড.সূধীর শর্মা ১৬৬ ভোট পেয়ে পরাজিত হন। সহ-সভাপতি পদে এ্যাড.আব্দুল খালেক ১৬১ পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন।, এ্যাড.এমদাদুল হক ১৪৩ ভোট পেয়ে পরাজিত হন। অন্যপ্রার্থী এ্যাড.আহমেদ আলী ৭৫ ভোট পান । যুগ্ম সম্পাদক পদে এ্যাড.এস এম মনোয়ার হোসেন মুকুল ১৮৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। এ্যাড.হাফিজুল ইসলাম মুনীর ১৪৪ ভোট পেয়ে পরাজিত হন। অপর প্রার্থী এ্যাড.আল মুজাহিদ হোসেন মিঠু ৫৯ ভোট পান। লাইব্রেরী সম্পাদক পদে এ্যাড.খন্দকার সিরাজুল ইসলাম ২০৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। এ্যাড.শামসুজ্জামান মনি ১৭৪ ভোট পেয়ে পরাজিত হন।  কোষাধ্যক্ষ পদে এ্যাড.আবুল কালাম আজাদ কমল ২১০ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। এ্যাড.মিয়া নাজির ১২৯ ভোট পেয়ে পরাজিত হন। অপর প্রার্থী এ্যাড.ওয়াজেদুল ইসলাম চাঁদ মাত্র ৪৭ ভোট পান। সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে এ্যাড.সাজ্জাদ হোসেন সেনা ২১৪ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। এ্যাড.রাজীব আহমেদ রঞ্জু ১৬৬ ভোট পেয়ে পরাজিত হন। দপ্তর সম্পাদক পদে এ্যাড.শাতিন মাহমুদ ২২৭ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। এ্যাড.কামরুল ইসলাম খোকন ১৬২ ভোট পেয়ে পরাজিত হন। এরিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সিনিয়র সদস্য ও জুনিয়র সদস্য পদের ভোট গণনা চলছিল।

শনিবার, ৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১৩

যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবীতেকুষ্টিয়ায় ১৪ দলের সমাবেশ

আরিফ মেহমুদ ॥ কসাই কাদের মোল্লার যাবজ্জীবন কারাদন্ড বাতিল করে তাকে সহ সকল যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবীতে কুষ্টিয়ায়ও ১৪ দলের সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টায় শহরের বক চত্বরে আওয়ামী লীগ নেতৃতাধীন ১৪ দলের উদ্যোগে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ঘৃণিত যুদ্ধাপরাধী কসাই কাদের মোল্লার ফাঁসির দাবির মধ্য দিয়ে সারা দেশে গণজাগরণ-গণপ্রতিরোধের ঢেউ ছড়িয়ে পড়েছে। বাংলাদেশ মানেই মুক্তিযুদ্ধ, বাংলাদেশ মানেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। বাংলাদেশ মানেই স্বাধীনতা বিরোধী রাজাকার-আলবদর-আলশামস প্রতিরোধ,আর প্রতিশোধের মিলিত ঐক্যতান। বিক্ষোভ সমাবেশে আওয়ামী লীগ, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদসহ ১৪দলের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি খন্দকার জুলফিকার আলী আরজু, সহ-সভাপতি আব্দুল হামিদ রায়হান, সাধারন সম্পাদক আজগর আলী, আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় জাতীয় পরিষদের সদস্য ও খোকসা উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব সদর উদ্দিন খান, জেলা জাসদের সভাপতি গোলাম মহসিন, জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ডাঃ আমিনুল হক রতন, শহর আওয়ামীলীগের সভাপতি তাইজাল আলী, সাধারণ সম্পাদক মোমিনুর রহমান মোমিজ, সদর থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি আক্তারুজ্জামান মাসুম, সাধারণ সম্পাদক,আক্তারুজ্জামান বিশ্বাস, জেলা জাসদের সহ-সভাপতি আমিরুল ইসলাম মকলু, সাংগঠনিক সম্পাদক অসিত সিংহ রায়, জেলা ওয়াকার্স পাটির সদস্য আব্দুল হক, জাসদ ছাত্রলীগের সভাপতি অভিজিৎ সিংহ রায় পাপ্পু প্রমূখ। সমাবেশে বক্তারা বলেন একাত্তরে পরাজিত শক্তি আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে।“জনগণের প্রত্যাশা ছিল কাদের মেল্লার ফাঁসি হবে। তাকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়ে জনগণের সেই দাবীকে অবমূল্যায়ন করা হয়েছে। আমরা সাধারণ জনগণ কখনোই এ রায় মেনে নেব না। সমাবেশ শেষে কসাই কাদের মোল্লার ফাঁসির দাবীতে শহরে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয় এবং তার কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়। মিছিলটি শহরের প্রধান এনএস রোড় প্রদক্ষিণ করে।

কুষ্টিয়ায় মুক্তিযোদ্ধা সংসদের প্রতিবাদ মঞ্চে জনতার শপথ যুদ্ধাপরাধী খুনিদের ফাঁসি চাই, দিতে হবে

আরিফ মেহমুদ ॥ যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল¬াসহ সকল মানবতা বিরোধী অপরাধীদের ফাসির দাবীতে কুষ্টিয়ার হাজার হাজার মানুষ নেমে এসেছে রাজপথে। শাহবাগের আন্দোলনের আগুন এখন ছড়িয়ে পড়েছে দেশের সবখানে। এরই অংশ হিসেবে কুষ্টিয়ার পাবলিক লাইব্রেরী মাঠে গতকাল মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডাকে গড়ে ওঠা ‘প্রতিবাদ মঞ্চ’ মুক্তিযোদ্ধা, শিক্ষক, সাংবাদিক, চিকিৎসক, ব্যবসায়ী, রাজনৈতিক নেতাসহ বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষের পদভারে মুখরিত হয়ে ওঠে। একাত্তরের হাতিয়ার গর্জে উঠুক আরেক বার, মুক্তিযদ্ধের বাংলায় রাজাকারের ঠাই নাই শে¬াগানে শে¬াগানে উত্তাল হয়ে উঠে কুষ্টিয়ার পাবলিক লাইব্রেরী মাঠ। বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ যুদ্ধাপরাধী মানবতা বিরোধী খুনিদের ঘৃণা ও প্রতিবাদ জানাতে স্ব-স্ব উদ্যোগে ফেস্টুন, ব্যানার, কাটুন ছবি, র‌্যালী, মিছিল, রাজাকারদের নাম সম্বলিত টয়লেট পেপার বিতরণ করে। বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, কুষ্টিয়া জেলা কমান্ডের কমান্ডার নাছিম উদ্দিন আহম্মেদ এর সভাপতিত্বে প্রতিবাদ মঞ্চে একাত্মতা ঘোষণা করে বক্তব্য রাখেন কুষ্টিয়া পৌরসভার মেয়র আনোয়ার আলী, জেলা জাসদের সভাপতি গোলাম মহসিন, জেলা বিএমএ’র সাধারন সম্পাদক ডাঃ আমিনুল হক রতন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার রফিকুল আলম টুকু, হাজী নজরুল ইসলাম গেরিলা, শাহাবুব আলম, জেলা সিপিবি’র সভাপতি কমরেড রফিকুল ইসলাম, জলা শিল্পকলা একাডেমির সাধারন সম্পাদক আমিরুল ইসলাম ছাত্র ফন্টের নেত্রী শ্যামা, জাতীয় কবিতা পরিষদ,কুষ্টিয়ার সভাপতি কবি খৈয়াম বাসার,পরিমল থিয়েটারের সভাপতি শেখ সানোয়ার হোসেন রিন্টু,একাত্তরের ঘাতক নির্মূল কমিটি, কুষ্টিয়ার সদস্য সচিব অসিত সিংহ রায় স্বাধীনতা ব্রিগেডের কেন্দ্রীয় সভাপতি মীর জাহিদসহ জেলা ৬ উপজেলা ও ৬৬ ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডের কমান্ডারগণ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রধানগণ। ‘প্রতিবাদ মঞ্চে বক্তারা তাদের বক্তব্যে বলেন, যুদ্ধাপরাধী রাজাকার, মানবতা বিরোধী খুনি ধর্ষক কাদের মোল¬ার রায় সাধারণ মানুষ প্রত্যাখান করেছে। সবার প্রানের দাবী স্বাধীনতা বিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের একমাত্র রায় হবে ফাঁসি। জাতি আজ অধীর আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছে। মহান স্বাধীনতার যুদ্ধে আত্মদানকারী শহীদদের আত্মার শান্তি কামনায় ও জাতিকে কলঙ্ক মুক্ত করতে মানবতারোধী যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। একাত্তরে পরাজিত শক্তি আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। জনগণের প্রত্যাশা ছিল কাদের মেল¬ার ফাঁসি হবে। তাকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়ে জনগণের সেই দাবীকে অবমূল্যায়ন করা হয়েছে। আমরা সাধারণ জনগণ কখনোই এ রায় মেনে নেব না। কাদের মোল¬া সহ সকল যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবীতে গণজমায়েতের আন্দোলনকারীদের সাথে সংহতি প্রকাশ করে গণসঙ্গীত পরিবেশন করেন কন্ঠশিল্পী টিপু সুলতান, আব্বাস, সুজন, দিপুসহ আরও অনেকে।


জেলা ক্রীড়া সংস্থার প্রথম বিভাগ ক্রিকেট লীগ উদ্বোধনীতে সৈয়দ বেলাল হোসেন

আরিফ মেহমুদ॥ কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি সৈয়দ বেলাল হোসেন বলেছেন, সংস্কৃতির পাশা পাশি ক্রীড়াঙ্গনেও কুষ্টিয়া জেলার ঐতিহ্যবাহী ইতিহাস রয়েছে। সেই ইতিহাস ও ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতা আমাদের পূণঃজীবিত করতে যুবকদের এগিয়ে আসতে হবে। এ জন্য জেলার সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন। পারিবারিকভাবেই আপনার ছেলেকে ক্রীড়ামুখি করে গড়ে তুললেই কুষ্টিয়ার ক্রীড়াঙ্গনে পরিবর্তন আনা সম্ভব। ভাল খেলোয়াড় তৈরী করতে হলে প্রয়োজন নিয়মিত অনুশীলন করা। নিয়মিত অনুশীলন করলেই জেলার খেলাধুলা একদিকে যেমন শারীরকে সুস্থ রাখে,অপর দিকে সন্ত্রাস ও মাদকাসক্ত থেকে যুব সমাজকে রক্ষা করে। আজ যারা এ লীগে অংশগ্রহণ করছে তারা সকলেই যুবক। আর এই যুবসমাজই পারবে ক্রীড়াঙ্গনের আমূল পরিবর্তন আনতে। গতকাল শনিবার সকালে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা আর আনন্দঘন পরিবেশের মধ্যদিয়ে কুষ্টিয়া জেলা ক্রীড়া সংস্থার আয়োজনে,কুষ্টিয়া স্টেডিয়াম মাঠে প্রথম বিভাগ ক্রিকেট লীগ ২০১২-১৩ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। জেলা ক্রীড়া সংস্থার সহ-সভাপতি ও ক্রিকেট উপ-পর্ষদের সভাপতি এ্যাড.অনুপ কুমার নন্দী’র সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কুষ্টিয়া পৌরসভার মেয়র আনোয়ার আলী, কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আজগর আলী, জেলা ক্রীড়া সংস্থার সহ-সভাপতি খন্দকার জুলফিকার আলী আরজু ও জহুরুল হক চৌধুরী রনজু। অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মকবুল হোসেন লাবলু ও ক্রিকেট উপ-পর্ষদের সাধারণ সম্পাদক পারভেজ আনোয়ার তনু। এসময় উপস্থিত ছিলেন জেলা ক্রীড়া সংস্থার নেতৃবৃন্দ। প্রধান অতিথির বক্তব্যে আরো বলেন, সকল যুবক লেখাপড়ার পাশাপাশি খেলাধুলায় এগিয়ে আসবে। কুষ্টিয়া জেলা ক্রীড়া সংস্থা যে ভাবে একেরপর এক নিয়মিত বিভিন্ন খেলাধুলার আয়োজন করে চলেছে, তাতে বোঝা যায় অচিরেই দেশের ক্রীড়াঙ্গনে কুষ্টিয়ার নতুন ইতিহাস সৃষ্টি হবে। এ লীগের আয়োজন করায় আয়োজকদের ধন্যবাদ জানান তিনি। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মেয়র আনোয়ার আলী বলেন, ভাল খেলোয়াড় তৈরী করতে হলে প্রথমেই প্রয়োজন নিয়মিত অনুশীলন। আর সেই নিয়মিত অনুশীলনের ব্যবস্থাটি করে চলেছে কুষ্টিয়া জেলা ক্রীড়া সংস্থা। এজন্য জেলা ক্রীড়া সংস্থার সকলকে জানায় ধন্যবাদ। তিনি বলেন, লেখাধুলার ক্ষেত্রে এ জেলার সর্বোচ্চ প্রতিষ্ঠান হচ্ছে জেলা ক্রীড়া সংস্থা। বিগত দিনে এই প্রতিষ্ঠানটি খেলাধুলার ক্ষেত্রে তেমন অবদান না রাখতে পারলেও আমরা লক্ষ্য করছি বর্তমনে জেলা ক্রীড়া সংস্থার আয়োজনে সব ধরণের লেখাধুলার আয়োজন করা হচ্ছে। ক্রীড়ার উন্নয়নে যথেষ্ট ভূমিকা রেখে চলেছে এই প্রতিষ্ঠানটি। এভাবে চলতে থাকলে অচিরেই আমরা বড় ধরণের অর্জন পাব। উদ্বোধনী খেলায় আমলাপাড়া স্পোর্টিং ক্লাব ২২১ রানে পোড়াদহ শফি স্মৃতি সংঘকে পরাজিত করে। খেলাটি পরিচালনা করেন হাবিবুর রহমান বাপ্পি ও ইমারত হোসাইন মিনু। অনুষ্ঠানটি সার্বিক পরিচালনা ও উপস্থাপনা করেন জেলা ক্রীড়া সংস্থার কোষাধ্যক্ষ খন্দকার ইকবাল মাহমুদ।

বুধবার, ৬ ফেব্রুয়ারী, ২০১৩

সরকারী কর্মচারী সমন্বয় পরিষদের মতবিনিময়ে সৈয়দ বেলাল হোসেন

আরিফ মেহমুদ ॥ কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক সৈয়দ বেলাল হোসেন বলেছেন, আমরা সকলেই রেভিনিউ খাত হতে বেতন নিয়ে থাকি সেকারণে জেলা প্রশাসকের সাথে নাড়ীর সম্পর্ক রয়েছে। তিনি আরও বলেন নৈতিক অবক্ষয় ব্যতিত সকল সমস্যা সমাধানে আমার সহযোগীতা অব্যাহত থাকবে। জেলার একজন কর্মকর্তার বাইরেও আপনি একজন এদেশের নাগরিক। সেই নাগরিকত্বের দায়িত্ববোধ থেকে স্ব স্ব অবস্থান কাজ করলে কুষ্টিয়া সহ এদেশ এগিয়ে যাবে। গতকাল বুধবার বিকাল ৪টায় কালেক্টরেট সভাকক্ষে সরকারী কর্মচারী সমন্বয় পরিষদ কুষ্টিয়া জেলা শাখার নেতৃবৃন্দের সাথে জেলা প্রশাসকের মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। জেলা প্রশাসক সভা কক্ষে পৌছালে সরকারী কর্মচারী সমন্বয় পরিষদ কুষ্টিয়া জেলা শাখার নেতৃবৃন্দ তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান।
 সৌহার্দপূর্ণ পরিবেশে এ মতবিনিময় অনুষ্ঠিত হয়। এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিক ড.মোল¬া মাহমুদ হাসান, নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট নাহিদা আক্তার, সহকারী কমিশনার মোহাম্মদ রাসেল মিয়া ও সৈয়দ আশরাফুজ্জামান। সরকারী কর্মচারী সমন্বয় পরিষদের নের্তৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সহ-সভাপতি মতিয়ার রহমান, কদম রসুল, কাজী শফিকুর রহমান, আখতারুল হক, মনোয়ার হোসেন, শেখ রবিউল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক শাহাবুদ্দিন শেখ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবু বকর, মামুনুর রহমান খান, সিরাজুল হক, সাংগঠনিক সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম, পিয়ার আলী, মখলেছুর রহমান মনি, মতালেব হোসেন, অর্থ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম, মহিলা সম্পাদিকা হাজেরা খাতুন ঝর্ণা, ফেরদোসী আক্তার জাহান, আব্দুল বারী, হাবিবুর রহমান।

মঙ্গলবার, ৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১৩

কুষ্টিয়া বড়বাজার ব্যবসায়ী সমিতির উদ্যোগে শীতবস্ত্র বিতরণ

আরিফ মেহমুদ ॥ কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ড.মল্লিক আনোয়ার হোসেন বলেছেন, সমাজের প্রতিটি সচ্ছল ও বিত্তশালী মানুষকে আত্ম মানবতার সেবায় এগিয়ে আসতে হবে। দুস্থ্য, অসহায় ছিন্নমূল শীতার্ত মানুষের দূর্ভোগে ও দূর্দিনে পাশে থেকে তাদের সেবায় সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে হবে। গরীব দুঃখি মানুষের সেবায় সব সময় নিজেদেরকে নিয়োজিত রাখতে হবে। কুষ্টিয়া বড়বাজার ব্যবসায়ী সমিতির মত সমাজ ও দেশের সার্বিক উন্নয়নে অবহেলিত মানুষের পাশে থেকে যে কোন দূর্যোগ মুহুর্তে মানবতার কল্যাণে কাজ করতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। গতকাল শনিবার সকালে বড়বাজার ব্যবসায়ী সমিতি কার্যালয়ে বড়বাজার ব্যবসায়ী সমিতির উদ্যোগে শীতবন্ত্র বিতরণকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। কুষ্টিয়া বড়বাজার ব্যবসায়ী সমিতির ব্যক্তিগত অর্থায়নে শীতবস্ত্র হিসেবে ১৫০টি কম্বল ও ৫০টি স্যুয়েটার দুস্থ্য, অসহায় ও ছিন্নমূল মানুষের হাতে তুলে দেন। এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কুষ্টিয়া বড়বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মোকাররম হোসেন মোয়াজ্জেম, সাধারণ সম্পাদক রাফকুল ইসলাম, সহ-সভাপতি মাহমুদ হোসেন টিসু, কুষ্টিয়া বড়বাজার ব্যবসায়ী সমিতির প্রধান উপদেষ্টা হাফিজুর রহমান হেলাল,কোষাধ্যক্ষ হারুন অর রশিদ, সহ-সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম শাহান শাহ, কার্য নির্বাহী সদস্য আব্দুর রাজ্জাক, আসাদ আলী, মেহেদী হাসান পান্না, মকবুল হোসেন প্রমুখ। কুষ্টিয়া বড়বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মোকাররম হোসেন মোয়াজ্জেম, তার সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বলেন, অসহায় ও ছিন্নমূল বৃহৎ জনগোষ্ঠির মধ্যে এই সীমিত শীতবস্ত্র একেবারেই অপ্রতুল। তার পরও এসব মানুষের দূর্ভোগে ও দূর্দিনে পাশে থেকে তাদের সেবায় সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে পেরে নিজেদের ধন্য মনে করছি। তবে তিনি প্রত্যাশা করেন সমাজের প্রতিটি সচ্ছল ও বিত্তশালী বিত্তবান মানুষ এমন উদ্যোগ গ্রহন করে আত্ম মানবতার সেবায় এগিয়ে আসলে অসহায় ও ছিন্নমূল মানুষেরা কিছুটা হলেও উপকৃত হবেন।  

অপেক্ষার পালা শেষ : আগামী ২৯জুন লালন একাডেমির নির্বাচন

আরিফ মেহমুদ ॥ কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক ও লালন একাডেমির আহবায়ক সৈয়দ বেলাল হোসেন বলেছেন,লালন একাডেমিকে পুজি করে কারোর একক আধিপত্য বিস্তার করতে দেয়া হবে না। লালন একাডেমিতে থাবকে লালন ভক্তরা। অতীতে একাডেমিকে কেন্দ্র করে কি হয়েছে তা এখন ভাবার বিষয় নয়। আমি লালনকে এবং তাঁর সৃষ্টিকে হৃদয়ে লালন করি বলেই লালন একাডেমির বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহের ভক্ত-অনুরাগী, বাউল ও কুষ্টিয়াবাসীর গ্রহণযোগ্য অবাধ ও সুষ্ঠ নির্বাচন দিতে চাই। এমন কোন নির্বাচন দিতে চাই না, যে নির্বাচন লালন ভক্ত-অনুরাগীদের ব্যথিত করে। যেন তেন ভাবে অগ্রহণযোগ্য নির্বাচন দিয়ে লালন ভক্ত-অনুরাগী, বাউল ও কুষ্টিয়াবাসীর কাছে বিরাগ ভাজন হতে চাই না। সুষ্ঠ নির্বাচনের ক্ষেত্রে যে কোন অপশক্তির বাধা কঠোর ভাবে প্রতিরোধ করা হবে। সকল অপেক্ষার পালা শেষ করে লালন একাডেমি সুন্দর ও সার্থকভাবে পরিচালনার জন্য গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ছবি সম্বলিত ভোটার তালিকা প্রকাশ করে আগামী ২৯জুন সাধারন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আগামীতে লালন একাডেমির যে কোন অনিয়ম দূর্নীতি কঠোর হস্তে মোকাবেলা করতেই এই নির্বাচন প্রক্রিয়া। কুমারখালির ছেঁউড়িয়া সহ কুষ্টিয়াবাসীর সার্বিক সহযোগিতা নিয়ে সকল প্রকার সচ্ছতা অবলম্বন করে লালন একাডেমির উন্নয়নের ধারা রক্ষা করা হবে। গতকাল শনিবার বেলা ১১টায় কুমারখালির ছেঁউড়িয়ায় লালন একাডেমি অডিটোরিয়াম মিলনায়তনে লালন একাডেমির আহবায়ক কমিটির আয়োজনে নির্বাচনোত্তর এজিএম (সাধারণসভা) বিশেষ সাধারণ সভার মূলতবি সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি আরো বলেন,বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহের সৃষ্টি বাউলতত্ব আজকের বিশ্বে সর্বজন বিদিত। তাঁর মানব দর্শন ও বাউলতত্ত্ব কোন বস্তুগত স্থাপনার মধ্যে দিয়ে মূল্যায়ন করা যাবে না। একটি সুন্দর সমাজ প্রতিষ্ঠিত করতে তাঁর অহিংস মানবতাবাদী মতবাদকে মনে প্রাণে লালন করতে হবে। তিনি যে ব্রত নিয়ে সাধারণ মানুকে মানতাবাদীর পথে ডাক দিয়ে ছিলেন সেটি সত্যিকার অর্থে বাস্তবায়ন হলে মানুষে মানুষে হিংসা বিদ্বেশ ভূলে যেত। সভায় তাকে সার্র্বিক সহযোগিতা করেন লালন একাডেমির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবুল কালাম, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জাহিদুল ইসলাম, নবনিযুক্ত ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ রাসেল মিয়া ও সৈয়দ আশরাফুজ্জামান। এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কুষ্টিয়া সরকারী কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর বদরুদ্দোজা, যুব উন্নয়নের উপ-পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান, একাডেমির আহবায়ক কমিটির সদস্য বিশিষ্ট গবেষক ও লেখক ম.মনিরুজ্জামান, লালন একাডেমির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও শহর আ’লীগের সভাপতি তাইজাল আলী খান, কুষ্টিয়া জেলা জাসদের সভাপতি গোলাম মহসীন. এ্যাড.আক্তারুজ্জামান মাসুম, এ্যাড.শামসুর রহমান বাবু, লালন একাডেমির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এনামূল হক মঞ্জু, রেজওয়ানুল হক খান চৌধুরী মুকুল, কুমারখালির চাপড়া ইউ’পি চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুস, নন্দলালপুর ইউ’পি চেয়ারম্যান জিয়ারউর রহমান খোকন, বিশিষ্ট ঠিকাদার জাভেদ আলী, লালন একাডেমির সাবেক নির্বাহী সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা জাহিদুল ইসলাম, কুষ্টিয়া চেম্বারের সাবেক পরিচালক আব্দুস সাত্তার, আলতাফ হোসেন মোল্লা, এ্যড. এস এম মনোয়ার হোসেন মুকুল, কাজী গোলাম মোস্তফা, নিলুফা নাসরিন আকতার,রবিউল হক খান বাউল আব্দুল কুদ্দুস প্রমুখ। লালন একাডেমির মোট সদস্যদের সংখ্যানুপাতহারে সভায় সদস্য উপস্থিত না হওয়ায় গত ২৬ জানুয়ারী সভার কোরাম সংকটের কারনে বিশেষ সাধারণ সভা মূলতবী করা হয়। গতকাল শনিবার সকালে অনুষ্ঠিত বিশেষ মূলতবি সভায় লালন একাডেমির নির্বাচন চলতি বছরের ২৯জুন অনুষ্ঠানের ঘোষনা দেয়া হয়। সকাল ৮টা থেকে ভোট গ্রহণ শুরু হয়ে বিরতীহিনভাবে  চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। এবারের নির্বাচনে চুড়ান্ত ভোটার তালিকা ঘোষনার আগে অর্থাৎ ২০০৮ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের ভোটার এবং তারও আগের সদস্যবৃন্দ ইতোপূর্বে সদস্য ছিলেন প্রমানাদী দেখিয়ে আগামী ২৮ ফেব্র“য়ারীর মধ্যে সমস্ত বকেয়া চাঁদা পরিশোধ করে সদস্য পদ নবায়ন করতে পারবে। সদস্য পদ নবায়ন হলেই আগামী ২৯জুনের নির্বাচনে ভোটার হতে পারবে। এ ঘোষনার পর নতুন কোন ব্যক্তি লালন একাডেমির সদস্য হতে পারবেন কিন্তু তারা আগামী ২৯জুনের নির্বাচনে ভোটার হতে পারবে না। লালন একাডেমির নির্বাচন চলতি বছরের ২৯জুন অনুষ্ঠানের জন্য কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসন সকল প্রকার প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে একাডেমিতে নতুন লোকবল নিয়োগ দিচ্ছেন। নির্বাচন সংক্রান্ত সকল প্রকার তথ্য ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাদীর জন্য সর্ব সাধারণকে লালন একাডেমিতেই যোগাযোগ করতে হবে।   

  

শুক্রবার, ১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৩

কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের ২২ কোটি টাকার টেন্ডার ভাগাভাগির পাঁয়তারা

আরিফ মেহমুদ ॥ জলবায়ূ ট্রাস্ট ফান্ডের আওতায় কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ড আমলা ডিভিশনের  অধীন দৌলতপুর-মহিষকুণ্ডী প্রতিরক্ষা বাঁধের ২২ কোটি টাকার টেন্ডার একটি চরমপন্থী গ্র“পের সহযোগিতায় ভাগাভাগি করে নেওয়ার পাঁয়তারা করছে কুষ্টিয়া মিরপুর উপজেলার আমলা এলাকার ক্ষমতাসীন দলের এক প্রভাবশালী টেন্ডারবাজ নেতা। ৭ গ্র“পে বিভক্ত ওই টেন্ডার যাতে শুধু আমলা ডিভিশনে সিঙ্গেল ড্রপিং করা হয় এর জন্য চরমপন্থী কানেক্টেড ওই নেতা  মরিয়া হয়ে উঠেছেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে,টেন্ডার ড্রপিং সংক্রান্ত আইন পিপিআর-এর ৯৬ ধারার (১১) উপধারা (খ) অনুচ্ছেদে উল্লেখ করা আছে বড় কাজের টেন্ডার মাল্টিপল ড্রপিং (একাধিক জায়গায়) করার জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগ বা মন্ত্রণালয়ের সচিব কর্তৃক অনুমোদিত হতে হবে। এর আলোকে আমলা ডিভিশনের ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুস সাত্তার দৌলতপুর-মহিষকুণ্ডি প্রতিরক্ষা বাঁধের ২২ কোটি টাকার টেন্ডার আহ্বানের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানোর সময় ওই নেতা বাধার সৃষ্টি করেন। শুধু আমলা ডিভিশনে টেন্ডার ড্রপিং করার জন্য ওই নেতা চাপ সৃষ্টি করে চলেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। কারণে এই মিশনে তিনি সফল হলে হাতিয়ে নেবেন ১৫ শতাংশ হিসেবে ৩ কোটি ৩০ লাখ টাকা। তার এই অবৈধ মিশন সফল করার জন্য কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রজেক্ট ডাইরেক্টর ওবায়দুর রহমান সার্বিক সহযোগিতা করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ব্যাপারে প্রজেক্ট ডাইরেক্টর ওবায়দুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, যেহেতু বড় কাজ সেহেতু মাল্টিপল ড্রপিংয়ের বিকল্প নেই। আমরা সব ঠিকঠাক করে মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দিয়েছি। টেন্ডারবাজদের চাপ সৃষ্টির বিষয়টি তিনি কৌশলে এড়িয়ে যান। এদিকে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে সিনিয়র সচিব শেখ আলতাফ আলী আমাদের সময়কে জানান, যাতে কেউ টেন্ডারবাজি করতে না পারে সে জন্য কুষ্টিয়া দৌলতপুর-মহিষকুণ্ডি প্রতিরক্ষা বাঁধের ২২ কোটি টাকার টেন্ডার মাল্টিপল ড্রপিংয়ের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

খাদ্যে ভেজাল ও ক্ষতিকারক রাসায়নিক দ্রব্য প্রতিরোধের আলোচনায় কেএম রাহাতুল

আরিফ মেহমুদ ॥ কুষ্টিয়া জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কে এম রাহাতুল ইসলাম বলেছেন, আমরা নিত্য প্রয়োজনে প্রতিদিন যে খাদ্য দ্রব্য কিনছে তার সবগুলোই বিভিন্ন মাত্রায় হয় ভেজাল যুক্ত, নতুবা ক্ষতিকর রাসায়নিক দ্রব্য মিশ্রিত। কখনোই নিরাপদ নয়, বিষযুক্ত খাদ্য। খাদ্যে ভেজাল এদেশে নতুন কোন বিষয় নয়। তবে এখন যে পরিমান খাদ্যে ভেজাল এবং ক্ষতিকর রাসায়নিক দ্রব্যাদি মেশানো হচ্ছে তা তিন দশক আগে কল্পনা করাও ছিল অনৈতিক। অতি মুনাফালোভিদের বিবেক বর্জিত আচরণে ভেজাল আজ আমাদের দেশে জাতীয় সমস্যায় রূপ নিয়েছে। খাদ্যে ভেজালের কারনে আমরা আমাদের আগামী প্রজন্ম সন্তানদের কোনভাবেই যেন খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারছিনা।ভেজালের ব্যাপ্তি ও পরিনতি সম্পর্কে গণসচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। আগামীতে  আমাদের সন্তানদের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে খাদ্যে ভেজাল ও ক্ষতিকর রাসায়নিক দ্রব্য মিশ্রণ জনিত কারণে জনস্বাস্থ্যের হুমকি প্রতিরোধে আইন প্রয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি ভূক্তভোগিদের এগিয়ে আসতে হবে। গতকাল মঙ্গলবার সকালে জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসন ও জেলা তথ্য অফিসের আয়োজনে খাদ্যে ভেজাল ও ক্ষতিকর রাসায়নিক দ্রব্য মিশ্রণ এবং জনস্বাস্থ্যের হুমকি প্রতিরোধে জনসচেতনতা সৃষ্টি বিষয়ক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। আলোচনা সভার আগে সকাল সাড়ে ১০টায় বড় বাজার ব্যবসায়ী সমিতির কার্যালয় হতে একটি বর্ণাঢ্য র‌্যালী বের করা হয়। র‌্যালীতে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসন, জেলা তথ্য অফিসের কর্মকর্তাসহ জেলার বিভিন্ন ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান ও এনজিও প্রতিনিধিগণ অংশ গ্রহণ করে। র‌্যালীটি শহরের প্রধান এনএস রোড প্রদক্ষিণ শেষে জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে আলোচনা সভায় এসে শেষ হয়। কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট ড.মল্লিক আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন জেলা তথ্য অফিসার তৌহিদুজ্জামান। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কুষ্টিয়া চেম্বারের সাবেক সভাপতি আশরাফ উদ্দিন নজু, বড় বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মোকাররম হোসেন মোয়াজ্জেম, সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম,এন এস রোড দোকান মালিক ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি পারভেজ মজমাদার ও ক্যাবের কুষ্টিয়া জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক নাফিজ আহমেদ খান টিটু প্রমুখ। সভায় উম্মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন বিশিষ্ট ফল ব্যবসায়ী জাহিদুর রহমান মুকুল। সভাপতির বক্তব্যে ড.মল্লিক আনোয়ার হোসেন বলেন, আমরা বাজারে গেলে ভাল জিনিষের প্রতি বেশি আগ্রহী হয়ে উঠি। কিন্তু সেটি কতটুকু ভেজালমুক্ত ভাল সে বিষয়ে সচেতন নই কেউ। বক্তাদের বক্তব্য অনুসারে প্রকৃতপক্ষে ভেজালের উৎপত্তিস্থল বড় বড় ফল আমদানীকারক প্রতিষ্ঠান। ভেজালের ক্ষতিকারক দিক ও রাসায়নিক দ্রব্য মিশ্রণে জনস্বাস্থ্য হুমকির বিষয় তুলে ধরে তাদের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। অন্য দিকে ভেজাল প্রতিরোধে ভেজালের উৎপত্তিস্থল তৃণমূল এলাকায় আঘাত হানতে হবে। বেশি বেশি করে গ্রাম বা তৃণমূল পর্যায়ে সভা সেমিনার করতে হবে। ভেজাল থেকে মুক্তির জন্য ভেজাল বিরোধী অভিযান জোরদার করা জরুরী। অসাধু ব্যবসায়ীদের লাইসেন্স বাতিল ও শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। ভেজাল বিরোধী আন্দোলনে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে অংশগ্রহণ করতে হবে। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন স্থানে ফরমালিনমুক্ত বাজার ঘোষনা করা হচ্ছে। আসুন আমরা সম্মিলিতভাবে ভেজাল ও রাসায়নিক দ্রব্য মিশ্রণে জনস্বাস্থ্য হুমকি প্রতিরোধে সকল বাজারকেই ফরমালিনমুক্ত ঘোষনা করি এবং সকলে ঐক্যবদ্ধভাবে ভেজাল ও ক্ষতিকারক দ্রব্য পরিহার করি। আলোচনা শেষে দুপুর ২টা থেকে শহরের বিভিন্ন স্থানে ভ্রাম্যমান সঙ্গীতানুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।