আরিফ মেহমুদ ॥ যথাযোগ্য মর্যাদা ও দোয়া মাহফিলের মধ্যদিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধের কুষ্টিয়ার ইতিহাসে বীরত্বে গাঁথা বংশীতলা দিবস পালিত হয়েছে। গতকাল বুধবার দুপুরে কুষ্টিয়া জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড ইউনিটের উদ্দ্যোগে, শহীদ পরিবার ও স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের আয়োজনে বংশীতলায় শহীদদের স্মরণে নির্মিত স্মৃতিসৌধ চত্বরে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। মিলাদ মাহফিলের আগে শহীদদের আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ও মাগফেরাত কামনা করে দূর্বাচারায় শহীদদের কবরে এবং বংশীতলায় শহীদদের স্মরণে নির্মিত স্মৃতিসৌধে কুষ্টিয়া জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার নাছিম উদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে পুষ্পমাল্য অর্পণ করা হয়। এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা সহকারী কমান্ডার আব্দুল হালিম, যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মোমিন, সদর থানা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আবু তৈয়ব ডেপুটি কমান্ডার মোশারফ হোসেন, স্থানীয় জিয়ারখী-দূর্বাচারা কমান্ডের বীর মুক্তিযোদ্ধা কসের আলী, হাবিবুর রহমান, ইউনূস আলী, বাহাদুর, আজিবর রহমান, আব্দুল মজিদ,মধু মিয়া,শহিদুল ইসলাম ও মোকাদ্দেস আলী। শহীদ পরিবারের পক্ষে শহীদ মোবারক আলী মোল্লার ছেলে আলতাফ হোসেন মোল্লা, শহীদ কিয়ামুদ্দিনের ছেলে আরব আলী সহ এ এলাকার রণাঙ্গনের সাথী মুক্তিযোদ্ধা ও এলাকাবাসী। দূর্বাচারায় থেকে ফিরে এসে বংশীতলায় স্মৃতিসৌধ চত্বরে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। মহান মুক্তিযুদ্ধে কুষ্টিয়ার ইতিহাসের এই বীরত্বে গাঁথা দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে বার বার স্থানীয়ভাবে শহীদ পরিবারের পক্ষে শহীদদের আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ও মাগফেরাত কামনা করে প্রতি বছর স্মৃতিসৌধ চত্বরে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল করলেও গত দু’বছর ধরে জেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিট কমান্ডের উদ্দ্যোগে এধরনের কর্মসূচী পালিত হয়ে আসছে। উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালের ৫ সেপ্টেম্বর কুষ্টিয়ার সদর উপজেলার বংশীতলায় পাকবাহিনী ও তাদের এদেশীয় দোসরদের সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মুখ যুদ্ধ সংঘঠিত হয়। জীবনের মায়া ত্যাগ করে মা মাটি ও দেশের মানুষকে সেদিন মুক্ত করতে কুষ্টিয়ার দামাল ছেলেরা লড়েছিল চির শত্র“ পাকবাহিনীর সাথে। কয়েক ঘন্টা ধরে চলে পাকবাহিনীর সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মুখ যুদ্ধ।মুক্তিযোদ্ধাদের প্রবল আক্রমনের মুখে পাকহানাদাররা তাদের বিশাল সৈন্যবাহিনী নিয়েও অপ্রত্যাশিতভাবে পরাজিত হয়। বংশীতলার এ যুদ্ধে ১৩ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ৮ জনের লাশের দাফন স্থানীয়রা করেন দূর্বাচারা সহ বিভিন্ন জায়গায়। ৩ জনের লাশ নিয়ে যায় পাকহানাদাররা। পর দিন আরো ২ জনের লাশ পাওয়া যায় এখানকার মাঠের জঙ্গলে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন